আফরোাজা সরকার: [২] রংপুরের বদরগঞ্জে সরকার ঘোষিত কঠোর লক ডাউনের এক সপ্তাহে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ৩০টি মামলা হয়েছে। এসময় দণ্ডপ্রাপ্তদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে ২২ হাজার ২শ’ ৫০ টাকা। তারপরও থামছেনা মানুষের ঢল। নানা অজুহাতে সবাই ছুটছেন শহরে। তারা ঘুরছেন নিজেদের ইচ্ছেমতো।
[৩] মানবাধিকার কর্মী ও এনজিও নাগরিক উদ্যোগের এরিয়া অফিসার শিল্পি শিকদার বলেন, কঠোর লকডাউনের কারণে শ্রমজীবি মানুষের জীবন-যাপন কষ্টকর হয়ে পড়েছে। ফলে তারা কাজের সন্ধানে রিকশা বা ভ্যান নিয়ে রাস্তায় বের হচ্ছে। এতে জনাসমাগম বাড়ছে এবং করোনা ঝুঁকিও বাড়ছে। তাই লোকজনকে ঘরে রাখতে হলে প্রথমতঃ দরিদ্র মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। দ্বিতীয়তঃ জনসচেতনতা বাড়াতে হবে। কারণ এখনো অনেক মানুষই বিশ্বাস করেন করোনা কোন রোগ নয়।
[৪] সমাজকর্মী ও সাংবাদিক আফরোজা সরকার বলেন, নিম্ন আয়ের মানুষজনই লক ডাউন মানছেননা। কারণ তাদের ঘরে খাবার নেই। তাদের দৈনন্দিন আয়ের উপর নির্ভর করে পরিবার বাঁচে। সেকারণে তারা বাধা-নিষেধ উপেক্ষা করে কর্মের সন্ধানে বাইরে আসেন। ফলে লক ডাউন অনেক ক্ষেত্রেই অকার্যকর হয়ে পড়ছে।
[৫] বদরগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি সরোয়ার জাহান মানিক বলেন, বড় ব্যবসায়ীদের হয়তো আর্থিক তেমন সমস্যা নেই। কিন্তু যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের নিত্যদিনের বেচাকেনার অর্থ দিয়ে কর্মচারীদের বেতন দিতে হয়।
[৬] একারণে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কিংবা ঝুঁকি নিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দোকান খোলেন। এতে লোক সমাগম বেড়ে যায় এবং লক ডাউন অকার্যকর হয়ে পড়ে। তাই সরকারের উচিত বড় ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা না দিয়ে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের স্বল্প সুদে ঋণ দেয়া। এটা করতে পারলে সরকারের সব নির্দেশই ব্যবসায়ীরা মানতে বাধ্য হবে।
[৭] উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান বলেন, আমাদের সমাজে আইন না মানার প্রবণতা অনেক আগে থেকেই রয়েছে। খাদ্য কষ্টের কথা অজুহাত মাত্র। কারণ লক ডাউন চলাকালে যাতে কেউ খাদ্য কষ্টে না ভোগেন সেজন্য পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রাখা হয়েছে এবং তথ্য প্রাপ্তি সাপেক্ষে তা’ হস্তান্তর করাও হচ্ছে।
[৮] তিনি আরও বলেন, বদরগঞ্জ উপজেলায় করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। একারণে নিজের ও পরিবারের কথা চিন্তা করে সকলকে অবশ্যই ঘরে থাকতে হবে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলতে হবে। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ