রাশিদ রিয়াজ: যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইসরায়েল কোভিড টিকাদান প্রায় শেষ করার পথে। যুক্তরাষ্ট্রের ১০ জন নাগরিকের ৭ জন অন্তত ১ ডোজ টিকা নিয়েছেন। ইসরায়েলে ১ লাখ কিশোরকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও ভারতীয় ডেল্টা ভাইরাস অবিচ্ছিন্ন্ন জনগোষ্ঠীতে পুনরুৎপাদন শুধু করছে না দ্রুত ও ক্রমাগত অভিযোজন করে ৯৮টি দেশে ছড়িয়ে পড়ার পর এটি ফাইজার, মডার্নাসহ অন্যান্য ভ্যাকসিন প্রতিরোধ করতে পারে না এমন শঙ্কাজনক রূপগুলোতে পরিবর্তিত হচ্ছে।
বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা ‘হু’ বলছে সারাবিশ্ব এক বিপজ্জনক পর্বে প্রবেশ করেছে। বিশেষজ্ঞরা এও বলছেন, যারা টিকা দেননি তারা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারখানা হিসেবে কাজ করছে। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংক্রমণ বিশেষজ্ঞ অ্যান্থনি ফাউচি বলেছেন, ভাইরাসের বিভিন্ন ভ্যারিয়েন্ট আরও শক্তিশালী ও ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠার শঙ্কা রয়েছে। এখনো চিকিৎসকরা জানেন না যে ভাইরাসের বিরুদ্ধে ভ্যাকসিনগুলো কী লড়াই করতে পারে, কী পারে না। ডেল্টা ভাইরাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে হাসপাতালে ফের কোভিড রোগির ভর্তি সংখ্যা বাড়ছে। প্রতি দুই সপ্তাহে দ্বিগুণ হারে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে ডেল্টা ভাইরাস। কপাল ভালো ভ্যাকসিনগুলো ডেল্টার বিরুদ্ধে কিছুটা হলেও লড়াই করতে পারছে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে কোভিড অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে প্রতি বিশজন রোগীর মধ্যে উনিশজনেরও বেশি টিকা দেওয়া হয়নি।
ভ্যান্ডারবিল্ট ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টারের সংক্রামক রোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. উইলিয়াম শ্যাফনার বলেন, যে এলাকায় ভ্যাকসিন প্রাপ্ত লোকের সংখ্যা যতো কম সেই এলাকায় করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা ততো বেশি। জনস হপকিন্স ব্লুমবার্গ স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অণুজীব ও প্রতিরোধক বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু পেকোস বলেন, যেকোনো ভাইরাসে রূপান্তরিত হওয়ার সাথে সাথে মানুষের মাঝে বেশি ছড়িয়ে পড়ে। যারা কোভিড টিকা দিতে পারেননি তারা বেশি ঝুঁকিতে আছেন ও ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রেও ঝুঁকিপূর্ণ। কোভিড থেকে বাঁচতে হলে সবাইকেই টিকা নিতেই হবে। বিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হচ্ছে আমরা অতো টিকা কবে পাবো, কবে সব মানুষের টিকা দেওয়া শেষ হবে? এরপর টিকা পরবর্তী ট্রমার মোকাবেলা তো আছেই। কোভিড থেকে সেরে উঠলেও বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতার লক্ষণ, লাখ লাখ অটোপাস শিক্ষার্থী আগামী দিনের কর্মদক্ষতার চাহিদা কতোটা পূরণ করতে সক্ষম হবে সে প্রশ্ন তো আছেই। লেখক : সিনিয়র সাংবাদিক।