শিরোনাম
◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ইরানের ওপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের নতুন নিষেধাজ্ঞা ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান ◈ উপজেলা নির্বাচন: মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ আওয়ামী লীগের ◈ বোতলজাত সয়াবিনের দাম লিটারে ৪ টাকা বাড়লো

প্রকাশিত : ০৪ জুলাই, ২০২১, ০৭:১৪ বিকাল
আপডেট : ০৪ জুলাই, ২০২১, ০৭:১৪ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কামরুল হাসান মামুন: যেই বিভাগ তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের জন্য খ্যাত সেখানে আজ এটি সবচেয়ে বেশি অবহেলিত

কামরুল হাসান মামুন: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের জন্ম আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্ম একইসাথে একই দিনে। তাই পহেলা জুলাই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগেরও জন্মদিন। এই বিভাগের জন্ম থেকেই সত্যেন বোস থেকে শুরু করে তত্বীয় গ্ৰুপ সর্বদাই খুবই শক্তিশালী ছিল। এই বিভাগের সুনাম যারা সৃষ্টি করেছেন তাদের প্রায় সকলেই তত্বীয় গবেষক। এক সময় তত্বীয় গবেষক/শিক্ষক ছিলেন সত্যেন বোস, অধ্যাপক রফিকুল্লাহ, অধ্যাপক হারুন অর রশিদ, অধ্যাপক এল এম নাথ, অধ্যাপক শামসের আলী, অধ্যাপক আব্দুল মঈন খান, অধ্যাপক মেসবাহউদ্দিন, অধ্যাপক আহমেদ শফী, অধ্যাপক সুলতানা শফী, অধ্যাপক খোরশেদ কবির প্রমুখ।

প্রফেসর রফিকুল্লাহ সম্মন্ধে বিশেষভাবে একটু বলতে চাই। উনি গবেষকের চেয়েও বেশি বিখ্যাত ছিলেন। ৭০ এর দশকে বিভাগের কাররিকুলামকে যুগান্তকারী পরিবর্তনে নেতৃত্ব দেন। রফিকুল্লাহ স্যার অনেকটা কিংবদন্তির মত। উনার কথা শুনেছি আমার প্রিয় স্যার খোরশেদ আহমেদ কবির স্যারের কাছে, শফি চৌধুরী স্যারের কাছে। কবির স্যার বলতেন উনি উনার জীবনে (দেশে-বিদেশে) যত শিক্ষকের ক্লাস করেছেন তার মধ্যে রফিকুল্লাহ স্যারই সবার সেরা। এত সুন্দর ডেলিভারি, এত সুন্দর করে বোঝাতে পারার মত এবং এত স্টাইলিশ শিক্ষক তিনি জীবনে খুব কমই দেখেছেন। শফী চৌধুরী স্যারেরও মুখেও একই কথা অনেকবার শুনেছি। একবার আমাদের বিভাগের প্রাক্তন ছাত্র (আমাদের অনেক সিনিয়র) বামন দাস গুপ্তের সঙ্গে দেখা। উনি আমেরিকায় আছেন দীর্ঘ ৪০ বছরেরও বেশি যাবৎ। কথায় কথায় উনিও রফিকুল্লাহ স্যারের কথা বলছিলেন। আর যখন বলছিলেন তখন দেখেছি ইমোশনে উনার চোখ ভিজে আসছিল। উনি বলছিলেন স্যারের মত এত ভালো শিক্ষক ৩৫ বছরেরও বেশি আমেরিকার একাডেমিয়ায় থেকেও দেখেননি। উনি বলছিলেন রফিকুল্লাহ স্যারের কথা বলতে গেলে তিনি এমনই ইমোশনাল হয়ে যান। শিক্ষকতা পেশা এমনই। কেউ কেউ এমনভাবে পড়ান যে তারা কিংবদন্তি হয়ে উঠেন। তেমনি আমি আমাদের কবির স্যারের কথা বলি এবং বলতে থাকব।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সুনামের মূল আর্কিটেক্ট সব সময়ই তত্বীয় পদার্থবিদ ছিল। এর কারণও আছে আর্থিক সঙ্গতির অভাবে আমাদের দেশে এক্সপেরিমেন্টাল ফিজিক্সের কাজ সব সময়ই চ্যালেঞ্জিং ছিল ফলে বিদেশে ভালো পরিবেশে ভালো কাজ করলেও দেশে এসে সুযোগ সুবিধার অভাবে ভালো কাজ তেমন হয়নি বললেই চলে। যেই বিভাগে তত্বীয় পদার্থবিদরা সুনাম এত বেশি সেই বিভাগে তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক নেই বললেই চলে। পদাথবিজ্ঞানে যাদের আগ্রহ তাদের বরাবরই প্রিয় সাবজেক্ট কোয়ান্টাম ফিল্ড থিওরি, জেনারেল রিলেটিভিটি, পার্টিকেল ফিজিক্স, মেনি বডি থিওরি, গ্রুপ থিওরি ইত্যাদি। অথচ এইসব সাবজেক্ট পড়ানোর মত শিক্ষক নেই বললেই চলে। যেই বিভাগ তত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানের জন্য খ্যাত সেখানে আজ এটি সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। বিভাগে একটি ই-কনফারেন্স হচ্ছে অথচ সেখানে তত্বীয় বিষয়ে কোন বক্তা নাই। এইভাবেই বিভাগের ঐতিহ্য আজ ধুলায় বিলীন।

লেখক : শিক্ষক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়