নিজস্ব প্রতিবেদক: ৩৮তম বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েও যারা ক্যাডার পাননি তাদের মধ্যে থেকে মেধা-যোগ্যতার ভিত্তিতে চতুর্থ দফায় ১ হাজার ১৩৯ জনকে দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছে সরকারি কর্মকমিশন (পিএসসি)। গতকাল বুধবার পিএসসির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ফল থেকে এ তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) নূর আহমদ বলেন, ‘৩৮তম বিসিএস থেকে চতুর্থ দফায় দ্বিতীয় শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে মোট ১১৩৯ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, এর আগে ৩৮তম বিসিএস থেকে ১ হাজার ৭৬৪ জনকে প্রথম শ্রেণির নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করেছিল পিএসসি। উল্লেখ, ৩৮তম বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও পদ স্বল্পতায় ৬ হাজার ১৭৩ জন ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ পাননি। তাদের মধ্য থেকে ধাপে
ধাপে নন-ক্যাডার পদে নিয়োগের সুপারিশ করা হচ্ছে।
২০২০ সালের ৩০ জুন ৩৮তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়। এতে ২ হাজার ২০৪ জনকে বিভিন্ন পদে ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এর মধ্যে সাধারণ ক্যাডারে ৬১৩ জন, সহকারী সার্জন ২২০, ডেন্টাল সার্জন ৭১, বিভিন্ন টেকনিক্যাল ক্যাডারে ৫৩২ এবং শিক্ষায় ৭৬৮ জন ছিলেন।
দুই দফায় ৪৩তম বিসিএসে আবেদন ৪ লাখ ২৪ হাজার
৪৩তম বিসিএসের আবেদনের সময়সীমা শেষ হচ্ছে, নতুন করে আর আবেদনের সময় বাড়ছে না। দুই দফায় সময় বৃদ্ধি করে এ পর্যন্ত ৪ লাখ ২৪ হাজার আবেদন জমা হয়েছে। গতকাল সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) নূর আহমদ বলেন, করোনার কারণে বেশ কয়েক দফা আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। সেই হিসাবে বুধবার শেষ হচ্ছে ৪৩তম আবেদনের সময়। এ বিসিএসে এখন নতুন করে আবেদনের সময় বাড়ানোর চিন্তা পিএসসির নেই বলে তিনি জানান।
পিএসসি সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর পর্যন্ত এ বিসিএসে ৪ লাখ ২৪ হাজার ১৮৩ জন প্রার্থী টাকা জমা দিয়ে আবেদন নিশ্চিত করেছেন। আরও অপেক্ষায় আছেন প্রায় ৩০০ জন। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা জমা দিয়ে তারা তাদের প্রার্থিতা নিশ্চিত করতে পারবেন।
এর আগে পিএসসি করোনার কারণে দুই দফা সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে। অনলাইনের ৪৩তম বিসিএসের আবেদন গত বছরের ৩০ ডিসেম্বরে শুরু হয়। এর পর প্রথম দফায় ২৭ জানুয়ারি পরিবর্তে ৩১ মার্চ করা হয়েছিল ফরম জমার শেষ দিন। এ বিসিএস পরীক্ষার আবেদনের সময়সীমা পরে আরেক দফায় ৩১ মার্চ থেকে বাড়িয়ে ৩০ জুন করা হয়েছিল।
এদিকে করোনা পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় যথাসময়ে ৪৩তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি নেওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে পিএসসি। করোনার টিকা আরও বেশি দেওয়ার পর অবস্থার উন্নতি হলেই এ পরীক্ষা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পিএসসি।
সময় বেড়েছে দফায় দফায় : করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের চূড়ান্ত (সেমিস্টার) পরীক্ষা নির্ধারিত সময়ে নেওয়া সম্ভব হয়নি। পরীক্ষা সময়মতো না হওয়ায় অনেক শিক্ষার্থী ৪৩তম বিসিএসে আবেদন করতে পারছেন না। এমন প্রেক্ষাপটে বিসিএস পরীক্ষার আবেদনের সময়সীমা বাড়াতে পিএসসিকে অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর ইউজিসি চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সঙ্গে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রহণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ওই সভাতেই বিসিএস পরীক্ষার আবেদনের সময় বৃদ্ধির ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ইউজিসিকে অনুরোধ জানানো হয় উপাচার্যদের পক্ষ থেকে। ইউজিসিও তাতে একমত পোষণ করেছিল। এর পরই ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার আবেদনের সময়সীমা দুই মাস বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়ে পিএসসিকে চিঠি দিয়েছিল ইউজিসি। আবেদনের সময় ৩১ জানুয়ারির পরিবর্তে ৩১ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। পরে আরও বাড়ানো হয় এ আবেদনের সময়সীমা।
৪৩তম বিসিএসে কত পদ : ৪৩তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বিসিএসে বিভিন্ন ক্যাডারে ১ হাজার ৮১৪ জন কর্মকর্তা নেওয়া হবে। এর মধ্যে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০০, পুলিশ ক্যাডারে ১০০, পররাষ্ট্র ক্যাডারে ২৫, শিক্ষা ক্যাডারের জন্য ৮৪৩, অডিটে ৩৫, তথ্যে ২২, ট্যাক্সে ১৯, কাস্টমসে ১৪ ও সমবায়ে ১৯ জন নিয়োগ দেওয়া হবে।