ফজলুল বারী: ঢাকার আশেপাশের শ্রমিকদের দিয়ে গার্মেন্টস কারখানা চালু রাখা হবে! গার্মেন্টস মালিকদের বরাবরের মতো এ আরেকটা মিথ্যা বচন। কতোবার তারা বলেছেন, তাদের পরিবহনে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কারখানায় আনা-নেওয়া করা হবে। এসব তারা কখনো মানেননি। কারখানার ভেতরে শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করানো করা সম্ভব। বিপদ হলো তারা যে বস্তির ঘরে থাকে, কারখানায় তাদের আসা যাওয়ার ব্যবস্থা মোটেই নিরাপদ নয়। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির মতো গার্মেন্টস শ্রমিকদেরও বাড়ি দেওয়া যেতো। সরকার থেকে চেয়ে তারা কতোকিছু চায়। নিজেদের ভবনের জন্য জমি চায়। কথায় কথায় ঋণ চায় এবং পায়ও। কিন্তু শ্রমিকদের আবাসিক ব্যবস্থার জন্য কোনোদিন জমি চায়নি। ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় প্রধানমন্ত্রীর বাড়ি তৈরি হচ্ছে। এই টাকা গার্মেন্টস শ্রমিকরা কিস্তিতে দিতে পারতো। মালিকরা এটা কোনোদিন ভাবেনওনি। তারা মনে করেন, বছরে একবার শ্রমিকদের নিয়ে বনভোজন করাই হচ্ছে সবচেয়ে শ্রমিক বান্ধব কাজ!
দেশের সকল সেক্টর সরকারের কাছে তাদের লোকজনের জন্য ভ্যাকসিন চাইছে। কৃষিমন্ত্রী ভ্যাকসিন চাইছেন কৃষকদের জন্যে। কিন্তু গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদের জন্যে জোরগলায় ভ্যাকসিন চেয়েছেন এমন দৃষ্টান্ত নেই। ভ্যাকসিন মালিকরা চাইলে তাদের বিদেশি বায়ারদের সঙ্গে যোগযোগ-দেনদরবার করে নিজেরাই আনতে পারতেন। এমন কোনো উদ্যোগ-চেষ্টার কথাও কেউ শোনেনি। এতো বছরের গার্মেন্টস শিল্প আজ পর্যন্ত ষোলোআনা শ্রমিকবান্ধব হতে পারলো না। দিন শেষ শুধু জানা গেলো, গার্মেন্টস মালিকরা শ্রমিকদের চেয়ে গরিব। সরকার তাদের জন্য এতোকিছু করে-করলো, কিন্তু তাদের গরিবানা গেলো না। লেখক : অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে