সুদীপ্ত সাইদ খান: বাংলাদেশি মেয়েরা সাধারণত পিরিয়ড নিয়ে একধরনের ট্যাবুতে ভোগেন। পিরিয়ড হয়েছে মানে নিষিদ্ধ কোনো ব্যাপার ঘটিয়ে ফেলেছেন। জনসম্মুখে বলা তো দূরের কথা, মেয়েরা তার মায়ের কাছে বলতেও লজ্জা পায়। অথচ মেয়েদের ক্ষেত্রে এটা একটা স্বাভাবিক দৈহিক বিষয়। পিরিয়ডের বিষয় গোপন করে হাইজিন মেইনটেইন না করায় পরবর্তী সময়ে অনেক মেয়েই নানা ধরনের জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। ফলে ট্যাবু ভেঙে বিষয়টা জনসম্মুখে বলা দরকার। বাংলাদেশি মেয়েদের সেই ট্যাবু ভেঙে চিত্রনায়িকা পরীমনি যখন প্রকাশ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বললেন, ‘আমার পিরিয়ড হয়েছে, সঙ্গে জ্বরও’। তখন পরীমনিকে সাধুবাদ দেওয়া দরকার, তার এই ট্যাবু ভেঙে কথা বলার জন্য। শুধু তাই নয়, এটা একটা নিউজ ভ্যালুও তৈরি করে। যাই হোক, পরীমনির বিষয়টা নিয়ে একটা সংবাদ পরিবেশন করা হয় যে সংবাদে দুটি বিষয় প্রাধান্য পায়। প্রথমত, পরীমনি কী অবস্থায় আছে, তার কী রোগ হয়েছে, তার সর্দি-জ্বরে আক্রান্তের খবর থেকে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার খবরও আসে গণমাধ্যমে-এসব নিউজ দেখে উত্তেজিত হয়েই পরীমনি বলেছিল, তার পিরিয়ড হয়েছে সঙ্গে জ্বরও। দ্বিতীয়ত, তার ট্যাবু ভেঙে কথা বলার বিষয়টা।
প্রকাশিত সংবাদটিতে উত্তেজিত হয়ে পরীমনির নিজের অবস্থান পরিষ্কার করার বিষয়টা যেমন ছিলো, তেমনি পরীমনি ট্যাবু ভেঙে পিরিয়ডের কথা জনসম্মুখে বলেছেন, সেটাও ছিলো। সেই সংবাদ প্রকাশের পর ইতিবাচক-নেতিবাচক সমালোচনা দুটোই চোখে পড়েছে। সাংবাদিক বন্ধুরাই বেশি সমালোচনা করেছেন। সমালোচনা বিষয়ক মন্তব্য না করে আমার সাংবাদিক বন্ধুদের উদ্দেশে বরং একটা প্রশ্নের অবতারণা করা যেতে পারে, ‘সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত অমুক’, এই টাইপের নিউজ আমরা সব ধরনের গণমাধ্যমে দেখি। ওকে ফাইন। এবার চলেন আরেকটু আগাই ‘সর্দি’র মতো গা ঘিনঘিনে একটা বিষয়কে সংবাদের শিরোনাম করতে আপনাদের সমস্যা হয় না, কেবল মাত্র ‘পিরিয়ড’ শব্দটা সংবাদের শিরোনামে এলে সমস্যা হয়, তাহলে এবার প্রশ্নটা করেই ফেলি, ‘মেয়েদের মাসিক হওয়া কী অপরাধ? নাকি পিরিয়ড নিয়ে কথা বলা সমস্যা? উত্তর দেবেন প্লিজ। ফেসবুক থেকে