শিরোনাম
◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ জাতিসংঘে সদস্যপদ প্রস্তাবে মার্কিন ভেটোর নিন্দা ফিলিস্তিনের, লজ্জাজনক বলল তুরস্ক ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক ◈ মিয়ানমার সেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা থাকায় তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না: সেনা প্রধান

প্রকাশিত : ১৪ জুন, ২০২১, ০৫:৩৪ বিকাল
আপডেট : ১৪ জুন, ২০২১, ০৫:৩৪ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ফারুক হোসেন: শ্রম বাজেট ২০২১-২০২২ একটি পর্যালোচনা

ফারুক হোসেন: বাংলাদেশের শ্রমিকদের শিক্ষা, বিভিন্ন কল্যান সাধন এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্ব সরকারের শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়। দেশের প্রায় ৬ কোটি ৩৫ লক্ষ শ্রমিকের স্বার্থ ও অধিকার এর সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক এই মন্ত্রনালয়ের। তাই শ্রমিকের স্বার্থ ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় বাজেট এর বরাদ্দের ক্ষেত্রে এই মন্ত্রনালয় বিশেষ গুরুত্ব বহন করে।

এইবার জাতীয় বাজেটে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে মোট বরাদ্দ করা হয়েছে ৩৬৫ কোটি ২৮ লক্ষ টাকা যা বিগত ২০২০-২০২১ বাজেটে সংশোধিত আকারে ছিল ৩৪৮ কোটি ৬৫ লক্ষ ৪২ হাজার অর্থাৎ এই বাজেটে প্রায় ১৬ কোটি ২২ লক্ষ ৫৮ হাজার টাকা বেশি।

কিন্তু বাজেটে যে টাকাই বরাদ্দ থাকুক না কেন টাকা খরচ করার ক্ষেত্রে এই টাকা আসলে শ্রমিকের কর্মসংস্থান বা কর্মপরিবেশ উন্নত করতে কতটুকু ভূমিক রাখবে তা প্রশ্ন সাপেক্ষ। কারন শ্রম বাজেটের একটা বিরাট খরচ হবে পরিচলন খাতে যার পরিমান ১৭৯ কোটি ৫৫ লক্ষ টাকা। উন্নয়ন বাজেটে বরাদ্দ ১৮৫ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকা যা থেকে আবর্তক ব্যয়ের মাধ্যমে যা খরচ হবে তা বাদ দিলে সরাসরি উন্নয়নখাতে খরচ টা খুব বেশি না।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয় এর অধিনে যে বিভাগ গুলোর মাধ্যমে উন্নয়ন বাজেটের টাকা ব্যয় করা হবে তা হলো :

১.সচিবালয়
২. শ্রম অধিদপ্তর
৩.কল কারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর

- সচিবালয় ৩ টি প্রকল্পের মাধ্যমে তৈরি পোষাক শিল্পের শ্রমিকদের কর্মপরিবেশ উন্নয়ন, সামাজিক সংলাপের মাধ্যমে শ্রম বিরোধ নিরসন বিষয়ক দুইটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। এর বাইরে ঝুকিপূর্ণ শিশু শ্রম নিরসনে কাজ করবে। বরাদ্দ ৯২ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা ।

- শ্রম অধিদপ্তর দেশের পার্বত্য অঞ্চলের শ্রমিকদের কল্যাণ সুবিধাদি ও দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং জোরদার করনে রাঙামাটির ঘাঘড়ায় শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণ এবং নারায়নগঞ্জ বন্দর ও চট্টগ্রামের কালুরঘাটে মহিলা শ্রমজীবী হোস্টেল এবং ৫ শয্যার সুবিধাসহ শ্রম কল্যান কেন্দ্র তৈরি ২ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। বরাদ্দ ১৬ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা।

- কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর ৫ টি প্রকল্পের মাধ্যমে যা বাস্তবায়ন করবে কর্মক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়ন, জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা। কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের আধুনিকায়ন ও শক্তিশালীকরন এবং ১৩ টি জেলায় জেলা কার্যালয় স্থাপন। নির্বাচিত রেডি- মেইড গার্মেন্টস, প্লাস্টিক ও কেমিক্যাল কারখানার কাঠামো , অগ্নি ও বিদ্যুৎ ঝুঁকি নিরুপন। বরাদ্দ ৭৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। সরকারের এই প্রকল্পগুলো বেশির ভাগই ৩-৫ বছর মেয়াদি। পুরোনো প্রকল্পগুলোতেই এই বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কিন্তু এই প্রকল্পগুলোর কয়েকটি বাদে বেশির ভাগ কর্মকান্ড শ্রম অধিদপ্তর বা কলকারখানা অধিদপ্তরের নিয়মিত কর্মকাণ্ডের মধ্যেই পড়ে। সরকারি এই প্রকল্পগুলো কতটা শ্রমিকদের দক্ষতা বা কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করেছে তা ভেবে দেখা দরকার। কারন এই মন্ত্রনালয়ের প্রধান লক্ষ হচ্ছে প্রশিক্ষনের মাধ্যমে প্রশিক্ষিত জনশক্তি তৈরি ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। বাজেটে শুধু মাত্র রেডি মেইড গার্মেন্টস সহ অল্পকিছু প্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকের শ্রম মান উন্নয়ন নিয়ে বলা আছে।

কিন্তু বাংলাদেশে এখন প্রায় ৮৫ ভাগ মানুষ অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজের সাথে যুক্ত। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকের কর্মক্ষেত্র উন্নয়ন বা নিরাপত্তা সম্পর্কে কিছু বলা হয় নাই। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের নিবন্ধন করে তাদের দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষন দিয়ে এবং নিরাপদ কর্মক্ষেত্র নিশ্চিত করার কথা বাজেটে নাই। পেশাগত রোগে আক্রান্ত শ্রমিকের বিনামূল্যে পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য বাজেটে কোন বরাদ্দ নাই।

বাংলাদেশ একটি শ্রমিক অধ্যূষিত দেশ । এই দেশের শ্রমিকরা রাস্ট্রের অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত তদোপরি শুধুমাত্র নিজে বেঁচে থাকা নয় নিজের পরিবার ও সমাজ কে বাচিঁয়ে রাখতে শ্রম দিয়ে যাচ্ছে। তাদের একটি স্বপ্ন নিরাপদ কর্মপরিবেশ ও মর্যাদাপূর্ণ জীবন এবং কাজ করার ক্ষমতা হারিয়ে গেলে বা বৃদ্ধ বয়সে চলার মত একটি পেনশন ব্যবস্থা।

গতানুগতিক বাজেট কাঠামোর আমূল সংস্কার ও জবাবদিহীতা নিশ্চিত না করা পর্যন্ত এই বাজেট শ্রম বান্ধব বাজেট হওয়ার কোন সুযোগ নেই।
Assistant Legal Officer at Safety and Rights Society

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়