মাহবুবুর রহমান, ডেনমার্ক থেকে: ২০২১-২২ অর্থ বছরের বাজেটে আমদানীর উপর চাপ কমিয়ে দেশীয় শিল্পের বিকাশ ঘটাতে জোর দেওয়া হয়েছে,যা অত্যান্ত ভাল উদ্যোগ।
এছাড়াও বৈশ্বিক করোনা কালীন সময়ে মানুষের জীবন-জীবিকার কথা মাথায় রেখে ব্যবসাবান্ধব বাজেট হওয়ায় উৎপাদন ও কর্মসংস্হান বাড়াবে,যা বাজেটের ঘাটতি কমাতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস করি।
নারীর কর্মসংস্থান এমনকি তৃতীয় লিংগের জনগোষ্ঠির জন্য কর্মসংস্হান সৃষ্টিকারী প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে কর কমিয়ে আনা অত্যান্ত ভাল উদ্যোগ।
কিন্তু প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য ৭.২ শতাংশ পূরণে বৈদেশিক মুদ্রার রির্জাভের উর্ধ্বগতি বিশেষ ভূমিকা রাখবে বিবেচনায় রেখে ২০২০-২১ বাজেট প্রস্তবনা করলেও,এই বাজেটে প্রবাসীদের জন্য কোন প্রকার উন্নায়নমূলক প্রস্তাবনা নাই।
রেমিট্যান্স-যোদ্ধাদের দুর্দশা লাঘব ও স্বার্থ সংরক্ষণকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবারের বাজেট সাজানো হবে বলে,প্রবাসে থাকা এক কোটি ৪৬ লাখ প্রবাসীরা আশায় বুক বেঁধে ছিল।
দেশের উন্নতি ও অগ্রগতিতে প্রবাসীদের কষ্টার্জিত রেমিট্যান্স বিশেষ ভাবে ভূমিকা পালন করে গড়ে তুলেছে বাংলাদেশের অর্থনীতির মজবুত স্তম্ভ।দেশের জিডিপিতে প্রায় ১২ শতাংশ আবদান রেখে চলেছে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ।প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের এই ধারা আরও বেগবান ও প্রবাসীদের উৎসাহী করতে বৈধ উপায়ে পাঠানো বর্তমানের দুই শতাংশের প্রণোদনা বাড়িয়ে যদিও চার শতাংশ করার প্রস্তাব উঠেছিল।কিন্তু বাস্তবে কোন প্রতিফলন দেখা যায়নি এই বাজেটে ।বাজেট ঘোষণায় শুধুমাত্র প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের বিষয়ে প্রশংসা করা হয়েছে।প্রবাসীদের জন্য সুযোগ-সুবিধার বিষয়টা প্রবাসে থাকা প্রবাসীদের অধিকার এবং দীর্ঘদিনের দাবী।প্রবাসীদের মৌলিক দাবীগুলি সবসময় উপেক্ষিত।
দাবীগুলির মধ্যে প্রবাসীদের জন্য সরকারী ভাবে প্রভিডেন্ট ফান্ড বা পেনশন চালু করা, প্রবাসে থাকা কর্মীদের স্বাস্হ্য সুরক্ষার্থে স্বাস্হ্য বীমা প্রকল্প চালু করা,বাজেটে ৩লাখ টাকার আয়কর আইন সংশোধন করে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের উপর পরিবারের সদস্যদের আয়কর ও প্রবাসীদের অবসরকালীন সঞ্চয়ের উপর আয়কর মাফ করতে হবে।
প্রবাসীদের সস্মান বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া,যে সকল প্রবাসীরা মধ্যপ্রচ্যের বিভিন্ন দেশে কাজ করে তাদেরকে খুবই নিচু দৃষ্টিতে দেখা হয়।যা বিমানবন্দরে গিয়ে অনুধাবন করতে পেরেছি,আর যারা ইউরোপ আমেরিকার মতো উন্নত দেশে থাকে তাদের সম্পূর্ণ আলাদা দৃষ্টিতে দেখা হয়।এমনকি মধ্যপ্রচ্যে থেকে আসা প্রবাসী কর্মীদের হেনস্তা সহ উপর্যুপরি অপমান করা হয় বিমানবন্দরে।কেন এই বৈষম্য আমাদের প্রবাসীদের মাঝে?
বিভিন্ন দেশে অবস্হিত বাংলাদেশী দূতাবাস গুলির কর্মত্রুম বৃদ্ধি করে,দুতাবাসে কর্মরত কর্মচারীদের প্রবাসীদের জন্য সেবার মানুষিকতা থাকতে হবে।অন্যদিক দুতাবাস গুলির কূটনৈতিক সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হবে।
প্রবাসীদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবীগুলি যথাযথ যাচাই বাছাই করে বাস্তবিক সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য একজন প্রবাসী হিসাবে সরকারের কাছে সবিনয়ে আবেদন রাখছি।
জয় বাংলা।
লেখক: সাধারণ সম্পাদক, ডেনমার্ক আওয়ামী লীগ