শিরোনাম
◈ দুই দানব ব্ল্যাক হোলের খোঁজ পেল বিজ্ঞানীরা, কী ঘটছে মহাবিশ্বে? (ভিডিও) ◈ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২য় উচ্চতর গ্রেডে আইনি ছাড় ◈ বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসা সুবিধা চালু করেছে মালয়েশিয়া ◈ শান্তির হ্যাটট্রিক, ভুটানকে সহ‌জেই হারা‌লো বাংলাদেশের মে‌য়েরা ◈ মেট্রো স্টেশনে বসছে এটিএম ও সিআরএম বুথ ◈ ১৬ই জুলাই রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা ◈ রহস্যময় নাকামোতো এখন বিশ্বের ১২তম ধনী, বিটকয়েন সম্পদ ১২৮ বিলিয়ন ডলার ◈ শাহবাগ মোড় অবরোধ করলো স্বেচ্ছাসেবক দল ◈ বিএসবির খায়রুল বাশারকে আদালত প্রাঙ্গণে ডিম নিক্ষেপ, কিল-ঘুষি ◈ গণপ্রতিরোধের মুখে শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছিলেন: ভোলায় নাহিদ ইসলাম 

প্রকাশিত : ০৪ জুন, ২০২১, ০২:২৯ দুপুর
আপডেট : ০৪ জুন, ২০২১, ০২:২৯ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

দীপক চৌধুরী: দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার টার্গেট দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

দীপক চৌধুরী: বহুবার আমার বহু লেখায় উল্লেখ করেছি যে, ’৭১-এর একজন রাজাকার চিরকালই রাজাকার কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধা চিরকালই মুক্তিযোদ্ধা নন। অবশেষে জনগণের এই ‘চাওয়া-পাওয়া’ আলোর মুখ দেখেছে। বঙ্গবন্ধুর পলাতক চার খুনির মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে পাওয়া বীরত্বের খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে সরকার। শিগগিরই এ সিদ্ধান্ত গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। এরা হচ্ছেন-ক্যাপ্টেন নূর চৌধুরী (বীরবিক্রম), মেজর শরিফুল হক ডালিম (বীরউত্তম), রাশেদ চৌধুরী (বীরপ্রতীক) ও মোসলেহ উদ্দিন খান (বীরপ্রতীক)।

বুধবার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ৬ষ্ঠ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া হেফাজতে ইসলামের কোনো নেতা-কর্মীকে অযথা হয়রানি না করা, অনলাইন কেনাকাটায় অস্বাভাবিক অফারদাতাদের নজরে রাখা, সরকারের অনুমতি ছাড়া কারও ভাসানচরে না যাওয়া, মাদক নিরাময়কেন্দ্রে নজর দেওয়া এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালনা করাসহ আরও বেশকিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে বৈঠকে। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান, আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

মুক্তিযোদ্ধা হবেন বীর, এটাই তো স্বাভাবিক। আমরা তাঁদের নিয়ে গর্ব করবো। গর্বে ভরা ইতিহাস লিখবো। খুনিরা কীভাবে মুক্তিযোদ্ধার খেতাব বয়ে বেড়াবে! কিন্তু কী ভয়ংকর রকম বাধাপ্রাপ্ত হলাম। যাঁর নির্দেশে ও দেখানো পথে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন দেশ পেলাম সে-ই নেতাকে ১৯৭৫-এ আমরা হারালাম। মূলত আওয়ামী লীগকে নিবদ্ধকরণ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। যার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের দল আওয়ামী লীগ বিনাশকরণ।

সবারই মনে থাকার কথা যে, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দিয়ে ‘ফ্রিডম পার্টি’ গঠন করার দুঃসাহস দেখিয়েছিলেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। জিয়াউর রহমান যাদের পুরস্কৃত করেছিলেন, বিদেশ মিশনে চাকরি দিয়েছিলেন, খালেদা জিয়া যাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি দিয়েছিলেন তাদের আবার রাজনীতি করার অনুমতি দেন এরশাদ। এদেশে কী জঘন্য রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিরাজ করেছে দীর্ঘদিন তা ভাবলেও ভীষণ কষ্ট জাগে। আসলে রাজনীতিকে ধ্বংস করা, রাজনৈতিক নেতাকে কলুষিত করার জন্য যে পথে জিয়া গেছেন ঠিক একই পথে জেনারেল এরশাদ এবং পরবর্তীকালে খালেদা জিয়া হেঁটেছেন। অন্যদিকে খুনিরা ভেবেছিল এদেশে কোনোদিনই ‘কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন’ বাতিল হবে না আর খুনিদেরও বিচার হবে না। কিন্তু জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রাণান্তকর চেষ্টায় সবকিছুই হয়েছে। ইতিহাস প্রতিশোধ নিয়েছে। আর এখনো নিচ্ছে বলেই আমরা খালেদা জিয়ার পরিণতি দেখছি। বঙ্গবন্ধুর খুনি অনেকের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। জিয়া-এরশাদ ও খালেদার উপদেষ্টা-মন্ত্রী-এমপিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মাধ্যমে বাংলাদেশ পাপমুক্ত হয়েছে। ১৯৭১-এর ধর্ষক-খুনি-লুণ্ঠনকারীর বিরুদ্ধে সর্বজনস্বীকৃত অপরাধীদের বিচার হয়েছে। এটাও সত্যি, জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় ছিলেন বলেই তা সম্ভব হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির বাংলাদেশে আগমন ও অনুরোধ খুনিদের রক্ষা করতে পারেনি।

আর্থিক, নৈতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক দূরদর্শিতার যে নজির জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে দেখতে পাই তা ছিল বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার পরে ব্যাংক হিসাবও খোঁজা হয়েছিল। এরপরও ঘাতকরা জাতির পিতাকে অসম্মান করার জন্য নতুন করে ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত করেছিল। তাঁর চার সহযোগী জাতীয় চার নেতার মধ্যেও ছিল গভীর দেশপ্রেম ও মুজিবভক্তি। এ কারণেই যুদ্ধোত্তর এদেশ পুণঃনির্মাণে তাঁরা সফল হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে নৈতিক ভিত সুপ্রতিষ্ঠার লক্ষে খুনিদের খেতাব তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী।

জাতীয় প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৭.২ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি ৫.৩ শতাংশ নির্ধারণ করে আগামী অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের প্রতিশ্রুতিতে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটের আকার অবাস্তব নয়। তবে জরুরি কাজটি হলো, বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা। দেশের অর্থনীতির পরিকাঠামো বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজেটের আকারও প্রতিবছর বাড়ছে। তবে বাজেট বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ হলো- যথাযথ মনিটরিং, বিনিয়োগ ও উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যবান্ধব রাজস্ব ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কাক্সিক্ষত রাজস্ব আদায়। সুতরাং এই বাজেটকে জনগণ মনে করে, আমাদের সুদৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত্তিকে আরো শক্তিশালী করে এগিয়ে যাওয়ার টার্গেট দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

লেখক : উপসম্পাদক, আমাদের অর্থনীতি, সিনিয়র সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক

 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়