নিউজ ডেস্ক : এক বিরল মহাজাগতিক ঘটনার সাক্ষী হলো মহাকাশপ্রেমীরা। মেঘলা আকাশ ভেদ করে চন্দ্রগ্রহণের পর দেশের কোথাও কোথাও দেখা মিলেছে রক্তিম চাঁদের। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আকাশ মেঘলা থাকায় রাজধানীতে রক্তিম চাঁদের দেখা না পাওয়া গেলেও পূর্ণিমার চাঁদের দেখা মিলেছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৬ মে) সন্ধ্যায় সান্তিয়াগোর আকাশে অন্যান্য দিনের চেয়ে ৭ শতাংশ বড় ও ১৫ শতাংশ উজ্জল দেখা যায় চাঁদকে।
বুধবার বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয় ঢাকার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটে। শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টা ৫১ মিনিটে। এই পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ এবং সুপারমুন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও পূর্ব এশিয়া থেকে পরিষ্কার দেখা গেছে।
পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব কমে আসার কারণেই চাঁদকে বড় দেখা যায়। পরে, ধীরে ধীরে চাঁদকে গ্রাস করে অন্ধকার। দক্ষিণ আমেরিকার অনেক দেশ থেকেই এটা দেখা গেছে।
উত্তর আমেরিকা, এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকেও পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ দেখা গেছে। অস্ট্রেলিয়ায় স্থানীয় সময় রাত ৯ টা ১১ মিনিট থেকে ৯টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত প্রায় ১৫ মিনিট ধরে চন্দ্রগ্রহণ হয়।
বুধবার নিছকই সাদামাটা পূর্ণিমা ছিল না। এটি ব্যতিক্রমী ও বিরল মূলত তিনটি কারণে। প্রথমত, এদিন চাঁদ পৃথিবীর নিকটতম বিন্দুতে অবস্থান করেছে। যাকে জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায় ‘পেরিজি’ বলা হয়। এ সময় পৃথিবী থেকে চাঁদের দূরত্ব থাকার কথা ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৩০৯ কিলোমিটার। চাঁদ নিজের প্রকৃত অবস্থান থেকে প্রায় ২৭ হাজার কিলোমিটার এগিয়ে আসার ফলে তাকে স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বড় দেখায়। এমন চাঁদকেই সুপারমুন বলা হয়।
দ্বিতীয়ত, পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ। সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবী ঘুরতে ঘুরতে এমন অবস্থানে এসে উপস্থিত হয় যে, পৃথিবীর ছায়া চাঁদকে সম্পূর্ণভাবে ঢেকে দিয়েছিল।
আর তৃতীয়ত, ওই সময় চাঁদকে দেখলে মনে হয়েছে, একটা কালচে লাল রঙের আভা যেন তাকে ঘিরে আছে। এই রক্তিমতার কারণে তার নাম ব্লাড মুন।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বুধবার বিকেল ৫টার পর থেকে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হয় সন্ধ্যা ৭টার পরে। তবে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে সুপার মুন দেখতে পারে নি এই অঞ্চলের মানুষ। এর আগে ২০১৯ সালে পূর্ণ চন্দ্রগহণ দেখা যায়।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) বলছে, ২০২১ সালের অন্যান্য চন্দ্রগ্রহণের তুলনায় আজকের পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণটিতে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি অবস্থানে আসে চাঁদ। এটাকেই সাধারণত সুপারমুন বলা হয়ে থাকে। এ সময় চাঁদের উজ্জ্বলতা ও আকার কেবল বাড়েই না, পাশাপাশি এই সুপারমুন একটা ‘সুপারপাওয়ার’ নিয়ে আসবে যেখানে চাঁদের রং পরিবর্তন হয়ে লালচে দেখায়।