মঈন উদ্দীন: [২] পেটে গুরুতর জখম নিয়ে পঞ্চগড়ে পাওয়া দেশের একমাত্র রেড কোরাল কুকরি (কমলাবতী) সাপটি এখন পুরোপুরি সুস্থ। গত ফেব্রুয়ারিতে মাটি কাটার সময় খনন যন্ত্রে গুরুতর আহত হয়েছিল সাপটি। রাজশাহীর সাপ গবেষক বোরহান বিশ্বাস রোমন তাঁর স্থানীয় এক সহকারীর মাধ্যমে সাপটি উদ্ধার করেন। এই প্রজাতির সাপ এটিই দেশে প্রথম দেখতে পাওয়া গেছে। সাপটির সারাশরীর কমলা রঙের। এর বাংলা কোনো নাম ছিল না। বোরহান বিশ্বাস নাম দিয়েছেন ‘কমলাবতী’।
[৩] টানা তিনমাসের চিকিৎসায় তিনি সাপটি সুস্থ করে তুলেছেন। উদ্ধারের সময় সাপটির নাড়িভুড়ি বের হয়ে ছিল। কয়েকবার খোলস বদলানোর ফলে ক্ষতস্থানের দাগ মুছে গেছে কমলাবতীর।
[৪] রোববার আন্তর্জাতিক জার্নাল- এশিয়া প্যাসিফিকে এই সাপটিকে নিয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। এতে ভীষণ খুশি বোরহান বিশ্বাস রোমন। এ ব্যাপারে বোরহান বিশ্বাস বলেন, ‘এটা আসলে আমাদের জন্য একটা বড় পাওয়া। আর সবচেয়ে সুখের বিষয় এই যে, সাপটাকে আমরা বাঁচিয়ে তুলতে পেরেছি। ওর বাঁচার সম্ভাবনা খুব কম ছিল।’
[৫] উচ্চশিক্ষিত যুবক বোরহান বিশ্বাস সাপ নিয়েই গবেষণা করেন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টারের সাথেও কাজ করছেন। কোথাও সাপ উদ্ধারের জন্য ডাক পড়লে ছুটে যান। সাপ উদ্ধার করেন। রাজশাহীর পবা উপজেলায় নিজের সাপ উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেন। চিকিৎসায় আহত সাপ সুস্থ হয়ে ওঠে। তাঁর চিকিৎসার মাধ্যমে আহত সাপ সুস্থ হয়ে ওঠে। বোরহান বিশ্বাস সেই সাপ আবার প্রকৃতিতে ছেড়ে দেন। বোরহান বলেন, আর কয়েকদিন গবেষণার পর কমলাবতীকেও ছেড়ে দেয়া হবে।
[৬] পঞ্চগড়ে যে এলাকা থেকে সাপটিকে উদ্ধার করা হয়েছিল, সেখানেই ছাড়া হবে। কারণ, পঞ্চগড়ের ওই পরিবেশেই কমলাবতী ছিল। এলাকাটি তার চেনা। সেখানে অন্য সাপও থাকতে পারে। এসব বিবেচনায় নিয়ে তাকে পঞ্চগড়েই রেখে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ঈদের পরই দিনক্ষণ ঠিক হবে।
[৭] রেড কোরাল কুকরি অলিগোডন গণভুক্ত সাপ। উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৩৬ সালে ভারতের উত্তর প্রদেশের খেরি বিভাগের উত্তরাঞ্চল থেকে এটি আবিষ্কৃত হয়। ২০১৪ ও ২০১৫ সালে উত্তরাখণ্ডের নৈনিতাল জেলা থেকে মৃত অবস্থায় এই সাপ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ২০১২ সালে উত্তর প্রদেশের বাহরাইচ জেলার কতরনিয়াঘাট বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যে এই ধরনের সাপ পাওয়া যায়। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :