শিরোনাম
◈ ভারতে লোকসভা নির্বাচনের দ্বিতীয় দফায় ভোট পড়েছে ৬০.৭ শতাংশ ◈ তীব্র তাপদাহে স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত গণবিরোধী: বিএনপি ◈ রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় কাজ করবে বাংলাদেশ-থাইল্যান্ড: পররাষ্ট্রমন্ত্রী ◈ বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে: প্রধানমন্ত্রী ◈ বিএনপি দিনের আলোতে রাতের অন্ধকার দেখে: ওবায়দুল কাদের ◈ উপজেলা নির্বাচনে হার্ডলাইনে বিএনপি, ৭৩ নেতা বহিষ্কার ◈ যুদ্ধ বন্ধের শর্তেই ইসরায়েলি জিম্মিদের ছাড়বে হামাস ◈ হরলিক্স আর স্বাস্থ্যকর পানীয় নয়  ◈ বাংলাদেশে চিকিৎসা সুবিধায় থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চান প্রধানমন্ত্রী ◈ যে কোনো ভিসাধারী পবিত্র ওমরাহ পালন করতে পারবেন 

প্রকাশিত : ০৫ মে, ২০২১, ১২:৪৩ রাত
আপডেট : ০৫ মে, ২০২১, ০১:৩৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অবশেষে জামিনে মুক্তি পেল বিনা অপরাধে সাজা ভোগ করা টেকনাফের হাসিনা

রাজু চৌধুরী: শুধুমাত্র নামের মিল থাকায় দেড় বছর ধরে অন্যের অপরাধের সাজা ভোগ করা টেকনাফের সেই নারী অবশেষে মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।

মঙ্গলবার (৪ মে ) দুপুরে চট্টগ্রাম ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল আলম ভূঁইয়ার ভার্চুয়াল আদালত তাকে মুক্তির আদেশ দেয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ বলেন, 'দুপুরে আদালতের জামিন আদেশ হওয়ার পর বিকেলে সব প্রক্রিয়া শেষ করে হাসিনা বেগম কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।'কারাগার থেকে মুক্ত হওয়ার পর হাসিনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, টেকনাফ থানায় যখন আমাকে নিয়ে আসা হয় তখনই আমি বারবার করে বলেছি আমি অপরাধী নই। কিন্তু উনারা আমার কথা বিশ্বাস না করে আমাকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, বিনা অপরাধে ১৭ মাস জেল খেটেছি। আমার সংসার ধ্বংস। আমাকে জেল থেকে মুক্ত করতে আমার বাড়িটাও বিক্রি করে আমার ছোট ছোট বাচ্চারা পথের বসেছে।জানা গেছে, প্রায় ৬ বছর আগে চট্টগ্রামের আদালতে সাজার আদেশ হয়েছিল যে হাসিনা আক্তরের। তার বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার পৌরসভার চৌধুরী পাড়ায়। কিন্তু তার জায়গায় প্রায় দেড় বছর ধরে সাজা খাটছেন একই এলাকার হাসিনা বেগম। স্বামী, মা-বাবার নাম মিল ছিল না তবুও নামের আংশিক ও এলাকার মিলে সাজা খাটছেন হাসিনা বেগম।

এভাবে নামের অদল-বদলে সাজা খাটার বিষয়টি সম্প্রতি নজরে আনেন অ্যাডভোকেট গোলাম মাওলা মুরাদ। গত ২ মে এ বিষয়ে শুনানি হলে দেড় বছর ধরে সাজা খাটা হাসিনা বেগম প্রকৃত আসামি কি’না তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেয় ৪র্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালত।

মঙ্গলবার (৪ মে) সকালে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের ছবিযুক্ত বালামে প্রকৃত হাসিনা আক্তার ও হাছিনা বেগম একই আসামি নন বলে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।

আদলত সূত্র জানায়, এ মামলার প্রকৃত আসামি হাসিনা আক্তার। যার বিরুদ্ধে কর্ণফুলী থানায় ২ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধারের পর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা ২৮(২)১৭, জি.আর মামলা নম্বর ৫৭/১৭ ও দায়রা মামলা ৩৬৩৭/১২ হয়। পরে ২০১৭ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে কারাগারে যান।

হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে একই বছর ২৭ নভেম্বর জামিন নেন। ২০১৯ সালের ১ জুলাই চট্টগ্রাম অতিরিক্ত মহানগর ৫ম আদালতের বিচারক জান্নাতুল ফেরদাউস চৌধুরী রায়ে ৬ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
মূল আসামি হাসিনা আক্তারের বাড়ি কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার টেকনাফ পৌরসভার চৌধুরী পাড়ায়। ওই এলাকার ইসমাইল হাজি বাড়ির হামিদ হোসেনের স্ত্রী তিনি। অন্যদিকে নামের ‘আংশিক মিলে’ জেলে যাওয়া হাসিনা বেগমের বাড়িও একই এলাকায়। তিনি হামিদ হোসেনের স্ত্রী। তবে অপরাধীর নামের সঙ্গে মিল থাকলেও বাবা-মায়ের নামের সঙ্গে মিল নেই বলে জানা গেছে আদালত সূত্রে।

এদিকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা যায়, প্রকৃত আসামি হাসিনা আক্তার মামলার সাজা হওয়ার আগে ২০১৭ থেকে প্রায় ৯ মাস কারাগারে ছিলেন। সাজা হওয়ার পর ২০১৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর থেকে হাছিনা বেগম কারাগারে আসেন। কারা রেজিস্ট্রারে থাকা দুজনের ছবির মিল নেই। মূল আসামি হাসিনা আক্তারের ছোট একটা ছেলে ও একটা মেয়ে ছিল কারাগারে থাকার সময়।

আদালতে হাছিনা বেগমের প্রতিবেদন দেওয়া টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. খোরশেদ আলম জানান, বর্তমানে সাজা পরোয়ানা মূলে কারাগারে থাকা হাসিনা বেগম পূর্বে গ্রেপ্তার হওয়া হাসিনা আক্তার এক নয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়