পুলক ঘটক: প্রথম রিপোর্টের প্রতিপাদ্য হলো মুনিয়া খারাপ, অতএব তাঁকে হত্যা করা ঠিক আছে। দ্বিতীয় রিপোর্টটির প্রতিপাদ্য হলো মুনিয়ার বোন যেহেতু মামলা করেছে, বিচার চেয়েছে সেও লোভী, খারাপ। তাঁর বিচার পাওয়ার অধিকার নেই। হত্যা না আত্মহত্যা- এ নিয়ে আমার সন্দেহ ছিল। এই রিপোর্টগুলো দেখে আমার প্রত্যয় জন্মেছে- এটি আসলে হত্যা। খারাপ মানুষ আত্মঅভিমানে নিজের প্রাণ নেয় না, আত্মহত্যা করে না। রাগ-জেদ তৈরি হলে বরং আরও বেশি অপরাধে লিপ্ত হয়। প্রতিকারহীন নিরাপরাধ মানুষ উপায় না দেখে আত্মহননের পথ বেঁছে নেয়। এসব মিডিয়াগ্রুপ যেহেতু প্রমাণ করতে চাচ্ছে, মুনিয়া খারাপ নারী ছিলেন তখন এটি প্রতীয়মান হয় যে, মেয়েটিকে হত্যাই করা হয়েছে।
এখন ভিকটিমকে খারাপ প্রমাণ করে সেই হত্যা জায়েজ করার চেষ্টা হচ্ছে। এরকম উদ্দেশ্যমূলক ভিক্টিম ব্লেমিং সাংবাদিকতা নয়, এগুলো ঘৃণ্য অপকর্ম। এই রিপোর্ট পড়া যায় না। এগুলো সমাজকে কলুষিত করছে। আপনার, আমার ঘরেও সন্তান আছে। এই পাপ কাউকে রেহাই দেবে না। এগুলো সাংবাদিকতার বিরুদ্ধেও অপরাধের সামিল। এই অপরাধের হাত থেকে সাংবাদিকতাকে রক্ষায় একাট্টা হও সাংবাদিক সমাজ। শতকোটি প্রলোভনেও আমরা কেউ যেন এরকম ঘৃণ্য অপকর্মে লিপ্ত না হই। কেউ আমরা চিরদিন বেঁচে থাকবো না, কিন্তু আমাদের কাজগুলো থেকে যায়। ক্ষণিকের প্রাপ্তিতে মানবিকতাকে যেন পরাভূত না করি। না খেয়ে মরবো, কিন্তু এসব জায়গায় আপোস করবো না। সাংবাদিকতায় মানুষের বিবেকের বাণী প্রকাশিত হোক। দুর্বৃত্ত পুঁজির কবল থেকে সাংবাদিকতা মুক্তি পাক। সাংবাদিকতার কলমকে মুক্তির হাতিয়ারে রূপান্তরিত করুক। ফেসবুক থেকে