সুজন কৈরী : পুরান ঢাকার আরমানিটোলার অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনাকে দুর্ঘটনা না বলে ব্যবসায়ী, বাড়ির মালিকসহ সংশ্লিষ্টদের অতি মুনাফা লাভের প্রবণতা এবং সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার সম্মিলিত দায়ের ফলাফল বলে মনে করে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)।
অগ্নিকাণ্ডের হতাহত ও ক্ষক্ষতির ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে রাসায়নিক গুদাম সরাতে ব্যর্থতার পেছনে দায়ীদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন।
বিআইপি’র সাধারণ সম্পাদক পরিকল্পনাবিদ ড. আদিল মুহাম্মদ খান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।
এতে বলা হয়, পুরান ঢাকা বোমার ওপর বসবাস করছে, এই চরম সত্যটি বিআইপিসহ দেশের দায়িত্বশীল মহল থেকে বলার পরও পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিক গুদাম নিমতলী ট্র্যাজেডির ১১ বছর পরেও সরেনি। মানুষের জীবন ও সম্পদকে সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেওয়া হলে বর্তমানে এই পরিস্থিতি হওয়ার কথা ছিল না।
রাসায়নিক গুদামের বিপদের মাত্রা বোঝাতে ২০২০ সালের লেবাননের বৈরুতের বিস্ফোরণের উদাহরণ দিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, পুরান ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় যেসব বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থের মজুদ আছে, তা যেকোনো ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটানোর শঙ্কা তৈরি করে রেখেছে। এই বাস্তবতায় নিমতলী, চুড়িহাট্টার অগ্নিকাণ্ডের পর সরকার ঘোষিত নির্দেশনা কেন বাস্তবায়িত হলো না এবং রাসায়নিক কারখানাগুলো সরানোর উদ্যোগ কেন বাস্তবায়ন করা যায়নি, সেটা অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন এবং এক্ষেত্রে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা প্রয়োজন।
পুরান ঢাকার রাসায়নিক গুদাম ও কারখানাগুলোর অধিকাংশই ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ও আদর্শগত মান অনুসরণ করে নির্মিত হয়নি বলেও অভিযোগ করে বিআইপি বলছে, মাস্টার প্ল্যানে নির্দেশিত ভূমি ব্যবহার পরিকল্পনার ব্যত্যয় করে এসব ভবনে অতি মুনাফার জন্য রাসায়নিক দ্রব্যের গুদাম তৈরি করা হয়েছে। দেশের রাজধানীর মূল কেন্দ্র থেকে এই ধরনের বিপজ্জনক ব্যবসা কিভাবে দিনের পর দিন চলতে দিচ্ছি, সেটা আমাদের আধুনিক ও বসবাসযোগ্য শহর গড়বার অঙ্গীকারকে মারাত্মক প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।
২২ এপ্রিল আরমানিয়ান স্ট্রিটের হাজী মুসা ম্যানশনে লাগা আগুনে চারজন মৃত্যুবরণ করেছেন। আরও ২০ জন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন। তাদের কেউই আশঙ্কামুক্ত নয়।