শিরোনাম
◈ পিআর পদ্ধতি কী, কেন প্রয়োজন ও কোন দেশে এই পদ্ধতি চালু আছে?" ◈ ইসরায়েলি হামলায় ৪৩৭ ফুটবলারসহ ৭৮৫ ফিলিস্তিনি ক্রীড়াবিদের মৃত্যু ◈ পশ্চিম তীরে দখলদার ইসরায়েলিদের সাথে তাদেরই সেনা জড়ালো সংঘর্ষে! (ভিডিও) ◈ আমদানি-রপ্তানিতে এনবিআরের নতুন নিয়ম: বাধ্যতামূলক অনলাইন সিএলপি দাখিল ◈ জুলাই স্মরণে শহীদ মিনারে ছাত্রদলের মোমবাতি প্রজ্বলন (ভিডিও) ◈ জুলাই বিদ্রোহ: কোটা সংস্কার থেকে গণঅভ্যুত্থান ◈ ভারতের বাংলাদেশ সফর নিয়ে যা বললেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল ◈ ৪৪তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ, ক্যাডার পদে মনোনয়ন পেলেন ১৬৯০ জন ◈ ১৮ জুলাই নতুন দিবস ঘোষণা ◈ ডিসি-এসপি কমিটি ও ইভিএম বাদ, ভোটকেন্দ্র স্থাপনে নতুন নীতিমালা জারি করলো ইসি

প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০২১, ১০:১৯ রাত
আপডেট : ১৮ এপ্রিল, ২০২১, ১০:১৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যার যায়, তার যায়

সেলিম জাহান:  রাজা হয়্ একজন পুরুষ সিংহাসনে অভিষিক্ত হলে তাঁর স্ত্রী রানী উপাধিতে ভূষিত হন। কিন্তু কোন নারী রানী হয়ে সিংহাসনে আরোহন করলে তাঁর স্বামীকে রাজা উপাধিতে ভূষিত করা হয় না। গতকাল ব্রিটেনের প্রিন্স ফিলিপসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কালে আমার এ কথাগুলোই মনে হচ্ছিল বারবার।
না, তিনি রাজা ছিলেন না। কিন্তু আমার মনে হয়, তিনি রাজার চেয়েও উচ্চতর মাত্রার একজন মানুষ ছিলেন। পরিবারের জন্যে তিনি সর্বদা তাঁদের পাশে ছিলেন। বিশ্ব ও ব্রিটেনের বহু মানবিক কর্মকান্ডের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন নিবিড়ভাবে। জীবন ও জগতের নানান বিষয়ে তাঁর আগ্রহ, অঙ্গীকার ও কর্মের ফলে পৃথিবীর বহু উপকার সাধিত হয়েছে।
কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা, প্রিন্স ফিলিপস ছিলেন রানী এলিজাবেথের সবচেয়ে শক্ত খুঁটি। রাজ্য শাসনের সব ব্যাপারেই রানী তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতেন, তাঁর কথাকে গুরুত্ব দিতেন, সর্ব অর্থেই তিনি ছিলেন রানীর শেষ পরামর্শদাতা - শেষ কথাটি রানী তাঁর কাছ থেকেই শুনতেন। সর্ব অর্থেই রানীর জন্যে প্রিন্স ছিলেন ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্তম্ভ।
সন্দেহ নেই, সব মানুষের মতো তাঁরও নানান সীমাবদ্ধতা ছিল। তার কিছু কিছু তাঁর শৈশব ও যৌবনের কঠিন সময়ের অভিজ্ঞতা-উদ্ভূত। কিছু কিছু রাজা নয়, একজন রানীর স্বামী হওয়ার কারনে, কিছু কিছু তাঁর ভাষায় ‘রাজপরিবারের সুনাম আর সম্মান রক্ষার জন্যে’। একজন মানুষ যিনি প্রায় শতবর্ষী হয়েছিলে, তাঁর জীবনে এমনটা হতেই পারে।
কিন্তু আমি এ সব ভাবি না। আমি রাজা রানীর কথাও ভাবি না। আমি শুধু এক যুগলের কথা ভাবি, যাঁরা প্রায় ৭৪ বছর যৌথজীবন কাটিয়েছেন। এ সময়কাল বহু মানুষের জীবনকালও হয় না। সবকিছুর শেষে তাঁদের মধ্যকার ভালোবাসা, পরস্পর নির্ভরতা, পারস্পরিক সম্মান, আস্হা, বিশ্বাস আর সম্মানটুকুই সবচেয়ে বড় হয়ে দেখা দেয়।
তাই প্রিন্স ফিলিপসের প্রয়াণের পরে এক ফোঁটা অশ্রুবিন্দু আমি যখন তাঁর গন্ডদেশে দেখি, তখন আমি একজন রানীকে দেখি না, আমি একযুগলের একজনকে দেখি, যিনি দীর্ঘ দিনের জীবন-সাথীকে হারিয়েছেন। আমি যখন তাঁকে দেখি তিনি শেষবারের মতো প্রিন্স ফিলিপসকে দেখছেন, তখন আমি বর্তমান বিশ্বের দীর্ঘতম রাজ্য শাসন করা একজন সম্রাজ্ঞীকে দেখি না, আমি একজন সাধারন নারীকে দেখি যিনি তাঁর জীবন সাথীকে বিদায় দিচ্ছেন। আসলে ‘অর্থ নয়, স্বচ্ছলতা নয়, কীর্তি নয়’, কিংবা রাজত্ব নয়, ক্ষমতা নয়, শক্তি নয়, চূড়ান্ত বিচারে শুধু ভালবাসাটুকুই রয়ে যায়।
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়