এ বি এম কামরুল হাসান: আশঙ্ক্ষা সত্যি হলো। গেলো বছরের মত ডাক্তাররা কর্মস্থলে যাতায়াতের সময় রাজপথে নিগৃহীত হয়েছে লকডাউনের প্রথমদিন। অথচ কোভিড এর সময় সারা দুনিয়ায় ডাক্তাররাই মহানায়ক। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের যথাযথভাবে ব্রিফ করা হয়নি। তার প্রমান পাওয়া গেলো লকডাউনের দ্বিতীয় দিন। আঠারো শ্রেণীর ব্যক্তি/প্রতিঠানকে বিধি নিষেধের আওতামুক্ত রেখে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। ডাক্তার শ্রেণী যারা এই লক ডাউনের প্রথম দিন মহাভিলেন ছিলেন, তারা এখন নিৰ্দেশিত আঠারো শ্রেণীর শিখরে আছে। এমনটাই হবার কথা, হচ্ছেও তাই সারা দুনিয়ায়। লকডাউনের দ্বিতীয় দিনেও রাজপথে ডাক্তার হয়রানির খবর সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরে বেড়াচ্ছে, বিশেষ করে ডাক্তারদের গ্রুপে।
লকডাউনের বাকি দিনগুলোতে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীদের হয়রানিবিহীন যাতায়াতের জন্য দুটি প্রস্তাব কর্তৃপক্ষ ভেবে দেখতে পারে। এক, সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রুটভিত্তিক শাটল বাস সার্ভিস চালু করতে পারে। মিটফোর্ড হাসপাতাল এ ধরণের একটি সার্ভিস চালু করেছে। তিনটি যানবাহন দিয়ে তারা তিন রুটে তিনবার করে সার্ভিস দিচ্ছে। হাসপাতালের নিজস্ব যানবাহন না থাকলে তারা ভাড়া নিতে পারে। জরুরি ভিত্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরকে বিষয়টি ভেবে দেখার অনুরোধ করছি। দুই, লকডাউনে কর্তব্যরত স্বাস্থ্যকর্মীদের নির্ভেজাল চলাচলের জন্য পুলিশ বিভাগ একটি ডেডিকেটেড ফোন নম্বর দিয়ে হেল্পলাইন চালু করতে পারে। কেউ কোন হয়রানির শিকার হলে ওই হেল্পডেস্ক তাৎক্ষণিক সমাধানে এগিয়ে আসতে পারে।
তেরো মাস ধরে স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিড রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। তারা ক্লান্ত। পরিশ্রান্ত। মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত। স্বীকৃতি নাই। প্রণোদনার হদিস নাই। তারপরও তারা হাসিমুখে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছে। মারাও যাচ্ছে। তারাই এ মহামারীতে মহানায়ক। অথচ তাদেরকে রাস্তা ঘাটে হয়রানি করা হচ্ছে। মহাভিলেন বানানো হচ্ছে। তাদের মনোবল ভেঙে দেয়া হচ্ছে | তাতে পরোক্ষভাবে ক্ষতি হচ্ছে আপনার, আমার, সবার। লেখকঃ প্রবাসী চিকিৎসক, কলামিস্ট
আপনার মতামত লিখুন :