শিরোনাম
◈ পারস্পরিক শুল্ক সংকট: চূড়ান্ত দর-কষাকষিতে বাংলাদেশ ◈ আরব আমিরাতের আবুধাবিতে প্রবাসী বাংলাদেশির ভাগ্যবদল: লটারিতে জিতলেন ৮০ কোটি টাকা ◈ ২৪ ঘণ্টায় গাজায় নিহত ১১৮, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পর্যালোচনায় হামাস ◈ ‘মব এবং জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হলে কঠোর পদক্ষেপ নেবে সেনাবাহিনী’ ◈ হোটেলে নারীকে মারধর করা বহিষ্কৃত যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তারের চেষ্টায় পুলিশ ◈ বনানীর জাকারিয়া হোটেলে ঢুকে নারীদের ওপর যুবদল নেতার হামলা, ভিডিও ◈ দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহালের গেজেট প্রকাশ ◈ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ ◈ তিন দিনের ছুটিতে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, পাবেন না যারা ◈ উচ্চ ও নিম্ন আদালতকে ফ্যাসিস্টমুক্ত করতে হবে: সালাহউদ্দিন

প্রকাশিত : ১০ এপ্রিল, ২০২১, ০৩:২৬ দুপুর
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০২১, ০৩:২৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

[১] পাহাড়ে আমের ভালো ফলনের সম্ভাবনা, করোনা সংকট হতপারে চাষীদের দুশ্চিন্তার কারণ

আবদুল আলী : [২] এক সময়ে বনজঙ্গলে পরিপূর্ণ অনাবাদি পাহাড়ি টিলায় এখন সারি সারি আম বাগান। আম্রপালি, রুপালি,মল্লিকা, লেংরা, গোপালভোগ, মোহনভোগ প্রভৃতি জাতের থোকায় থোকায় আম দোল খাচ্ছে গাছে গাছে। ফলের ভারে নুয়ে পড়েছে আম গাছের ডালপালা। চারিদিকে আমের মুহুর্মুহু সুগন্ধি

[৩] আবহাওয়া ভালো থাকায় পাহাড়ে এবার আমের ভালো ফলন হওয়ার সম্ভাবনা । তবে শেষ পর্যন্ত এই আম বাজারে পৌঁছানো যায় কিনা তা নিয়ে উদ্বেগ উৎকন্ঠিত পাহাড়ের আম চাষীরা। আমবাগানের মালিকদের পাশাপাশি ছোটখাটো বাগানের চাষিদের মাঝেও এখন অনিশ্চয়তা।

[৪] বাগান সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ১৫ জুনের মধ্যে আম পাকতে শুরু করবে। তবে করোনার অভিঘাতে বাজার ব্যবস্থাপনায় সংকট হলে চাষিদের কপালে দুঃখ আছে। কোটি কোটি টাকার ফলন নষ্ট হয়ে যাবে। তাই গাছের আম যথাযথভাবে বাজারে পৌঁছানোর উদ্যোগ নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

[৫] পার্বত্য চট্টগ্রামের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির পাহাড়ে আমের প্রচুর ফলন হয়। একসময় সনাতন পদ্ধতিতে আম চাষে ফলন বেশি পাওয়া যেত না। পরবর্তীতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে বৈজ্ঞানিক উপায়ে চাষাবাদ শুরু হয়। এতে ফলন বেড়ে যায়। কয়েক বছর ধরে পাহাড়ে বৈজ্ঞানিকভাবে আম চাষ হচ্ছে। হাজার হাজার হেক্টর পাহাড়ে চলছে আমের উৎপাদন। আমবাগানের পাশাপাশি আনারস, লেবু, লিচুসহ নানা ফলে মধুফলের ভান্ডার হয়ে উঠছে পাহাড়।

[৬] কিন্তু এসব ফল বাজারজাতে এবার সংকট তৈরি হতে পারে। করোনা পরিস্থিতিতে আম বিক্রির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা কতটুকু করা যাবে তা নিয়ে সংশয়ে সংশ্লিষ্টরা। বড় বড় বাগান কিংবা প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা আছে এমন বাগান মালিক নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিশেষ উদ্যোগ নিলেও ছোটখাটো মালিকরা আছেন শঙ্কায়। বর্তমানে তীব্র গরম পড়ছে। পাকার মৌসুম শুরু হলে এই ফল কী

[৭] কিভাবে বিক্রি করবেন, ন্যাষ্য দাম পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে উদ্বেগে তারা। পরিবেশ ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে পাহাড়ের নানা স্থানে আম্রপালি, রাংগোয়াই (মিয়ানমারের জাত), থাই এবং স্থানীয় জাতের আমের ভালো ফলন হয়েছে খাগড়াছড়িতেও প্রচুর আমবাগান রয়েছে।

[৮] খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মুঃ মুর্ত্তুজা আলী বলেন, খাগড়াছড়িতে এবার আমের ভালো ফলন হবে বলে আশা করছি ।

[৯] এলাকার ৩২৪৪ হেক্টর জমিতে আমবাগান রয়েছে। এসব বাগান থেকে এবার ২৯ হাজার ১৯৬ টন আম পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আবহাওয়া ঠিক থাকলে আমরা ৩০ হাজার টন আম পাব বলে আশা করছি।

[১০] সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, আমচাষে অল্প সময়ে ফলন পাওয়া যায়। ২/৩ বছর বয়স থেকে আমের ফলন শুরু হয়। দীর্ঘসময় পর্যন্ত টানা ফলন পাওয়া যায়।

[১১] এছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রামের মাটি আমচাষের জন্য উপযোগী। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে নানা জাতের আমের চাষ করায় প্রতিটি বাগান এখন অতীতের তুলনায় সমৃদ্ধ। বিষমুক্ত আমের চাষ হচ্ছে পাহাড়ে-পাহাড়ে। তারা বলেন, এখন প্রচুর কাঁচা আম বিক্রি হচ্ছে।

[১২] চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বেপারিরা কাঁচা আম কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। যেসব আম ঝড়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে সেসব আম কাঁচা বিক্রি করা হলেও গাছে গাছে থোকায় থোকায় আম ঝুলছে। যেগুলো পাকলে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দেশের নানা স্থানে বিক্রি করা হবে।

[১৩] দেশের আমের চাহিদার উল্লেখযোগ্য অংশ পার্বত্য চট্টগ্রাম যোগান দেয়।এদিকে কয়েকজন বাগান মালিক গতকাল আজাদীকে বলেন, গতবারের চেয়ে ফলন অনেক ভালো হয়েছে। আম ঠিকভাবে বাজারে পৌঁছানোর ওপর তাদের ভাগ্য নির্ভর করছে।

[১৪] তারা বলেন, চট্টগ্রাম থেকে বেপারিরা গিয়ে আম কিনে নেন। তবে এবার বেপারিরা ঠিকভাবে যেতে পারছেন কিনা বা পরিবহন কীভাবে করবেন, বাজারে ক্রেতা থাকবে কিনা, এসব বিষয়ের ওপর পাহাড়ের হাজার হাজার মানুষের ভাগ্য নির্ভর করছে।

[১৫] গুইমারা উপজেলার বড়পিলাক গ্রামের আমবাগান মালিক বাবুল গাজী, হাফছড়ি গ্রামের আতিউর রহমান, তৈকর্মা গ্রামের শফিক মেম্বার বলেছেন, পাহাড়জুড়ে আমসহ নানা ফলের ব্যাপক সমারোহ । অথচ বাজার ব্যবস্থাপনার কারণে চাষিরা প্রকৃত মূল্য থেকে বঞ্চিত হন। তারা পাহাড়ে হিমাঘার নির্মাণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

[১৬] আম পরিবহন এবং বাজারজাতকরণে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতাও কামনা করেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়