ইসলামি ডেস্ক: জুমার দিনকে রাসুল (সা.) জুমার বিশেষ গুরুত্ব দিতেন। রাসুল (সা.) বলেন, দিনগুলোর মধ্যে জুমার দিনই সর্বোত্তম। এই দিনে আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে। এই দিনে তিনি ইন্তেকাল করেছেন। এই দিনে শিঙ্গায় ফুঁ দেয়া হবে। এই দিনে সব সৃষ্টিকে বেহুঁশ করা হবে। অতএব তোমরা এই দিনে আমার ওপর বেশি পরিমাণে দরুদ পাঠ করো। কেননা তোমাদের দরুদ আমার সম্মুখে পেশ করা হয়ে থাকে। (আবু দাউদ, হাদিস : ১০৪৭)
এমনকি তিনি তার উম্মতদের এই দিনের কিছু বিশেষ সুন্নতও শিক্ষা দিয়েছেন, যেগুলোর ওপর আমল করলে সপ্তাহব্যাপী হয়ে যাওয়া সগিরা গুনাহগুলো মাফ হয়ে যায়। এই দিনে বিশেষ আমলের মধ্যে পবিত্র কোরআনেরও কিছু সুরা আছে, যেগুলো তিলাওয়াত করলে অশেষ নেকি হাসিল হবে বলে রাসুল (সা.)-এর বিভিন্ন হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। নিম্নে সেই সুরাগুলো সম্পর্কে কিছুটা আলোকপাত করা হলো—
সুরা কাহফ : আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুরা কাহফ পাঠ করবে, তার ঈমানের নূর এক জুমা থেকে অন্য জুমা পর্যন্ত বিচ্ছুরিত হতে থাকবে।’ (বায়হাকি, সুনানে সুগরা, হাদিস : ৬৩৫; বায়হাকি, সুনানে কুবরা, হাদিস : ৫৭৯২)। সুরা কাহফের বিশেষ মর্যাদা সম্পর্কে বারাআ (রা.) বলেন, এক ব্যক্তি ‘সুরা কাহফ’ তিলাওয়াত করছিলেন। তাঁর ঘোড়াটি দুটি রশি দিয়ে তাঁর পাশে বাঁধা ছিল। তখন এক টুকরা মেঘ এসে তাঁর ওপর ছায়া দান করল। মেঘখণ্ড ক্রমেই নিচের দিকে নেমে আসতে লাগল। আর তাঁর ঘোড়াটি ভয়ে লাফালাফি শুরু করে দিল। সকাল বেলা যখন লোকটি নবী (সা.)-এর কাছে উক্ত ঘটনার কথা ব্যক্ত করেন, তখন তিনি বলেন, এটি ছিল সাকিনা (প্রশান্তি), যা কোরআন তিলাওয়াতের কারণে নাজিল হয়েছিল। (বুখারি, হাদিস : ৫০১১)
ফজর ও জুমার নামাজে বিশেষ সুরা : আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) জুমার দিন ফজরের নামাজে ‘আলিফ লাম মিম তানজিলুস সাজদাহ’ (সুরা আস সাজদাহ) ও ‘হাল আতা আলাল ইনসা-নি হিনুম মিনাদ দাহর’ (সুরা আদ দাহর) এবং জুমার নামাজে সুরা জুমা ও সুরা মুনাফিকুন পাঠ করতেন। (মুসলিম, হাদিস : ১৯১৬)
সুরা দুখান : আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার রাতে (বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে) সুরা হা-মীম আদ-দুখান পাঠ করবে তাকে ক্ষমা করা হবে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৮৮৯)
কোনো কোনো বর্ণনায় সুরা ইয়াসিনের কথাও উল্লেখ রয়েছে। শুধু সুরা ইয়াসিন নয়, পবিত্র কোরআনের সব সুরাই বরকতপূর্ণ, তাই জুমার দিন মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় আমরা যেকোনো সুরাই তিলাওয়াত করতে পারি। ডেইলি বাংলাদেশ