আসিফুজ্জামান পৃথিল: [২] বিশ্বকে চমকে দিয়ে অনুসরণীয় অবস্থানে দক্ষিণ এশিয়ার সবশেষ স্বাধীন দেশ।
[৩] ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের ২০ তারিখে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন কনসাল জেনারেল আর্চার কে. ব্লাড মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরে একটি বার্তায় লিখেছিলেন, ‘আমরা ভারতীয় উপমহাদেশে আরও একটি দেশের জন্ম প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছি।’ ব্লাড সত্য বলেছিলেন। ২৬ মার্চ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা ইথারে ছড়িয়ে পড়লো। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়ে গেলো। বিদেশি সাংবাদিকদের মধ্যে তা প্রথম শুনলেন ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের দক্ষিণ এশিয়া করসপন্ডেন্ট ডেভিড লোশাক। শুনলেন, পাকিস্তান সেনাবাহনীর পিআরও মেজর সিদ্দিক সালেক। শুনলো, বাংলাদেশ নামে সদ্যই জন্ম নেওয়া রক্তস্নাত দেশটির প্রতিটি ধুলিকণা। আজ ২৬ মার্চ ২০২১। বাংলাদেশের বয়স এখন ৫০।
[৪] দেশটি শত্রুমুক্ত হতে সময় লেগেছিলো ৯ মাস। যোগাযোগব্যবস্থা পুরোপুরি বিধ্বস্ত, ব্যাংকে থাকা সব টাকা জ্বালিয়ে দিয়ে গেছে হানাদার বাহিনী, স্বাস্থ্যখাত বলতে কিছুই নেই। ওষুধের মূল সরবরাহকারী পশ্চিম পাকিস্তানি কোম্পানিগুলো জানিয়ে দিলো, তারা আর ওষুধ দেবে না, খাদ্যের অভাবে মানুষ মরছে। পাপ্য স্বর্ণ থেকে ১ গ্রামও দেয়নি ইসলামাবাদ। জনসংখ্যার ভারে ন্যুজ একটি দেশ। [৫] সেই পাকিস্তানের সঙ্গে আজ বাংলাদেশের তুলনা হয় না। কারণ ইসলামাবাদ থেকে অনতিক্রম্য এক দূরত্বে অবস্থান ঢাকার, যাবতীয় সব সূচকেই। পাকিস্তান যেখানে টিকে থাকার লড়াইয়ে ব্যস্ত, সেখানে বঙ্গীয় চোখে স্বপ্ন উন্নত দেশ হওয়ার। এই ভূখণ্ডের মানুষ নিজেদের ৫০ বছরের ত্যাগ আর পরিশ্রমের ফল পেতে শুরু করেছে আজ।
[৬] মানব উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের উপরে শ্রীলঙ্কা ছাড়া আর কেউ নেই। প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগেও একই। গত ৫০ বছরে পাকা সড়কের পরিমাণ বেড়েছে প্রায় শতগুণ। রেলপথের দৈর্ঘ্য খুব বেশি না বাড়লেও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সেতু তৈরি হয়েছে।
[৭] ৩০ লাখ মানুষের সরাসরি আত্মবলিদান আর সাড়ে ৭ কোটি মানুষের ত্যাগে এসেছিলো স্বাধীনতা। বাংলাদেশ ৫০ বছরে সেই স্বাধীনতাকে শুধুই ধরে রাখেনি, করেছে মহিমান্বিত। এগিয়ে গেছে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে। সম্পাদনা : মোহাম্মদ রকিব
আপনার মতামত লিখুন :