রাশিদ রিয়াজ : গত বছর শেষ ত্রৈমাসিকে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেসফ্লাইট কোম্পানি ভার্জিন গ্যালাক্টিক লোকসান দিয়েছে ৯৩ শতাংশ যা অর্থে ২৩৮ মিলিয়ন ডলার। আগের বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে কোম্পানিটি লোকসন দেয় ২৭৩ মিলিয়ন ডলার। গত বছর শেষ ত্রৈমাসিকে কোম্পানিটি কোনো লাভের মুখ দেখেনি। মার্কিন এ কোম্পানিটি মহাকাশে ভ্রমণের আয়োজন করার পর এ খাতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ভ্যার্জিন গ্যালাক্টিকের প্রধান নির্বাহী মিখায়েল কোলগ্লাজিয়ার এক বিবৃতিতে বলেছেন কোভিড মহামারীতে আমরা চ্যালেঞ্জর মুখে পড়ি এবং সার্বিক পরিস্থিতি মোকাবেলা করেই ভবিষ্যতে মহাকাশে পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের জন্যে প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এদিকে ভার্জিন গ্যালাক্টিকের শেয়ার মূল্য ১৫ শতাংশ কমে গেছে। কারণ আগামী মে মাসে মহাকাশে ভার্জিনের যে স্পেসফ্লাইট পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের কথা ছিল তা বাতিলের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আগামী বছর নাগাদ ভার্জিন গ্যালাক্টিক যাত্রীদের নিয়ে মহাকাশে যে ফ্লাইট উড্ডয়নের পরিকল্পনা ছিল তাও বাতিল করা হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে লোকসান থেকে কোম্পানিটিকে বাঁচাতে ১ বিলিয়ন ডলারের পুনরুদ্ধার কর্মসূচি হাতে নেন এর মালিক রিচার্ড ব্রানসন। কিন্তু তাতে খুব একটা সুবিধা করা যায়নি। ফলে বাধ্য হয়ে ব্রানসন তার কোম্পানির ৫শ মিলিয়ন ডলারের শেয়ার বিক্রি করে আড়াইশ মিলিয়ন ডলার করোনাভাইরাস রিলিফ প্যাকেজ হিসেবে কোম্পানিকে দেন। কোম্পানির অনেক কর্মচারী ছাঁটাই করা হয় এবং বাকিদের বেতনও হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে ভার্জিন গ্যালাক্টিক এখনো তার তৃতীয় ফ্লাইটটি উড্ডয়নের জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাহী কোলগ্লাজিয়ার। তিনি বলেন নভোচারীদের নিয়ে ভিএসএস ইউনিটি ঠিকই উড়বে এবং স্পেসশিপ থার্ড পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের জন্যে তৈরির পর্যায়ে রয়েছে। আগামী বছরের শুরুতে এটি উড্ডয়ন করবে।
ভার্জিনের স্পেসশিপ টু সফল উড্ডয়নের পর ২০১৮ সালের ২৯ মে নিরাপদে ফিরে আসে। তবে পর্যটকদের নিয়ে ফ্লাইট উড্ডয়নের বিলম্ব হবে বলে জানানো হয়েছে। ফ্লাইট কম্পিউটারে ত্রুটির জন্যে এ বিলম্ব হচ্ছে। সে কারণে প্রযুক্তিগত পরিবর্তন আনা হচ্ছে ভার্জিনের মহাকাশযানে। তবে এধরনের ত্রুটির জন্যে ভার্জিনের দুই বৈমানিক আহত হননি এবং মহাকাশযানও নিরাপদে অবতরণ করেছে। তবে মধ্য ফেব্রুয়ারির আগেই যে পরীক্ষামূলক ফ্লাইট উড্ডয়নের কথা ছিল তা ভার্জিনের প্রকৌশলীদের পরামর্শে পিছিয়ে দেওয়া হয়। প্রকৌশলীরা বলছেন কারিগরী ত্রুটি মেরামতের পর তা ফের পরীক্ষার করার জন্যেই এধরনের উড্ডয়ন পিছিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভার্জিন ফ্লাইটের সেন্সর পরীক্ষায় চাপ ও তাপমাত্রায় বেশকিছু তারতম্য দেখা দেওয়ায় এসব ত্রুটি মেরামতের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানান ভার্জিন গ্যালাক্টিকের প্রেসিডেন্ট মাইক মোজেজ।