শিরোনাম
◈ ইরানে ইসরায়েলের হামলার খবরে বিশ্বজুড়ে উত্তেজনা, তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আতঙ্ক ◈ বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের বাউন্ডারি ভেঙে বাস ঢু‌কে প্রকৌশলী নিহত ◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০১:৩৯ রাত
আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১, ০১:৩৯ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রাইস নেগোসিয়েশনের সুযোগ সীমিত না হলে প্রকল্পে ব্যয় লাফিয়ে বৃদ্ধি বন্ধ হবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক: চীনারা প্রথমে কম দর দিয়ে কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে, এক বছর পর দর দ্বিগুণ, তিনগুণ করে নিচ্ছে। এভাবে স্মল টোপ দিয়ে খেলতে দেওয়া যাবে না, মেজর রিভিশনের সুযোগ কমাতে হবে। অন্যদের ক্ষেত্রে তেমন দেখা যাচ্ছে না, বেশি হচ্ছে চীনা প্রজেক্টে। এখানে সরকারকে সাবধান হতে হবে।

শনিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এনার্জি এন্ড পাওয়ার আয়োজিত “সরকারের ভ্রান্ত পলিসির কারণে পিছিয়ে দেশীয় নির্মাণ শিল্প” শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে এমন মতামত উঠে আসে। সেমিনার সঞ্চালনা করেন এনার্জি এন্ড পাওয়ারের এডিটর মোল্লাহ আমজাদ হোসেন।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান এমপি বলেন, যদি পলিসি ঘাটতি থাকে তাহলে এর দায় আমাদের ঘাড়েই আসে। আমি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, আমরা চাই না, পলিসির কারণে দেশীয় উদ্যোক্তারা ক্ষতির মুখে পড়ুক। শেষ পর্য,ন্ত টাকাটা জনগণের, আমরা ইমোশনের বশবতি হয়ে কিছু করতে চাই না।

তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে উচ্চমূলে কিছু খাতির পেতাম। সেগুলো থেকে এখন বঞ্চিত হবো। প্রকল্প কেনো বিলম্বিত হবে। সোকল দাতা সংস্থার কিছু বিধি নিষেধ থাকে, অন্যদের থেকে কম সুদে দেওয়া হচ্ছে বলে।শর্ত থাকে কনসালটেন্ট নিয়োগ করতে হয়, পাঠিয়ে দিয়ে বসে থাকতে হয়। অনেক সময় ডিলে হয় তাদের অভ্যন্তরীণ কারণে। আমরা যদি অর্থনৈতিক, টেকনিক্যাল ও মানসিকভাবে শক্তি অর্জণ করতে পারতাম তাহলে ভালো হতো।

মন্ত্রী বলেন, আমরা অক্সিলারি বডি আমরা সহায়তা করতে চাই। আপনাদের কাছ থেকে কাগজ পেলে, সরকারের সর্বোচ্চ অথরিটির কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আমার সেই সুযোগ রয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেশীয় উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে সব সময় উদার। নিয়ম নীতি ধারাবাহিক রিভিউ করা হচ্ছে, আপনাদের কাছ থেকে প্রস্তাবতা পেলে অবশ্যই দেখা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যাকলয়ের সাবেক মূখ্য সচিব, জাতিসংঘের ক্লাইমেট ভার্নারেবল ফোরামে বাংলাদেশের বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ বলেন, রুলস রেগুলেশনগুলোকে হালনাগাদ করা হয় নি সব সময়। স্থানীয়রা যেনো যথার্থ সুযোগ পায়। তাহলে তারা অন্য দেশের তুলনায় অনেক ভালো করতে পারবে। একটি টাস্কফোর্স গঠন করে ট্যাক্সের বিষয়ে মূল্যায়ন করতে পারলে ভালো হবে। কোথায় কোথায় পরিবর্তন দরকার। উন্নয়ন সহযোগিরা শক্তের ভক্ত নরমের যম, আমি নিজে দেখিছি।

তিনি বলেন, ধরে নিলাম বিদেশি কনসালটেন্টের বদ মতলব নেই। তবে তাদের অভিজ্ঞতা দিয়ে এমন কাজ করে। তাতে আর দেশীয় উদ্যোক্তাদের কাজের সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। যারা গাইড করেন তাদের সচেতন থাকতে হবে। মেজর রিভিশন অনেকে চায়। প্রকল্পের কাজ শুরু করতে করতে দুই-তিন বছর পার হয়ে যায়। রেট সিডিউল অটোমেটেড সিস্টেম করা যায় কি না। তাহলে বখরা খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। মেজর রিভিউ করার প্রয়োজন পড়বে না।

এনবিআর’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. এমএম মজিদ বলেন, দেশীয় ঠিকাদার কাজ করতে হলে, ট্যাক্স দিতে হচ্ছে। বিদেশি ঠিকাদার ট্যাক্স দিতে হচ্ছে না, সেভাবে হিসেব করছে। স্বচ্ছতার জন্য সরকার নিজের পকেটের টাকা নিজেই দেবে, তবুও স্বচ্ছতার জন্য এটি করা প্রয়োজন। মূললক্ষ্য স্বনির্ভর হওয়া। বুয়েট ও বিআরটিএ মাত্র ১৫ দিনে হাতিরঝিলের ডিজাইন করে দিয়েছে। আমি আমার স্বার্থ দেখবো কিনা সেটি ভাবার বিষয়। সময়টা উপযুক্ত হয়েছে, মে মাসে কেমন বাজেট চাই বলতে কোনো কাজে আসে না।
পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের পরিচালক আহসান মনসুর বলেন,

প্রত্যেকটি কাজেই অভ্যন্তরীণ পাটনার থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে। বড় আকারে করা না গেলেও যতটুকু পারা যায় নিশ্চিত করতে হবে। রাজস্ব ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে, অনুন্নয়ন ব্যয় কমিয়ে বড় প্রকল্প নিজস্ব অর্থায়নে করতে পারবে সেই আশা এখন ক্ষীণ। নিজস্ব অর্থায়ন করতে না পারলে শৃঙ্খল মুক্ত হতে পারবো না। চীনারা প্রথমে কম দর দিয়ে কাজ বাগিয়ে নিচ্ছে, এক বছর পরে দাম দ্বিগুণ, তিনগুণ করে নিচ্ছে। এই স্মল টোপ দিয়ে খেলতে দেওয়া যাবে না। মেজর রিভিশনের সুযোগ কমাতে হবে। অন্যদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে না বেশি হচ্ছে চীনা প্রজেক্টে। এখানে সাবধান হতে হবে।

এফবিসিআই’র সাবেক প্রেসিডেন্ট মীর আখতার গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর নাসির হোসেন বলেন, লোকাল প্রিফারেন্স উঠিয়ে দেওয়ায়… আমরা একটি অসম প্রতিযোগিতার মধ্যে পড়েছি। ২০১২ সালে ভ্যাট আইনে শিল্পের মর্যা দা না থাকায় কনস্ট্রাকশন কোম্পানির মেশিনারিজ আমদানিতে ২৬ শতাংশ ডিউটি দিতে হচ্ছে। প্যাকেজ সাইজ এতো বড় করা হচ্ছে। অনেকে অংশ নিতে পারছি না। আমরা ক্রমান্বরে মেইন ঠিকাদার থেকে সাব ঠিকাদার হচ্ছি। দেশীয় কোম্পানির বাড়তি সুবিধা দেওয়া উচিত। প্রকল্প রেডি করতে দুই-তিন বছর সময় চলে যায়। তিন বছর পরে দেখা যায় বাস্তবতা বদলে যায়, তখন আসে ডিজাইন চেঞ্জ, ভূমি অধিগ্রহন এতে প্রকল্প বিলম্ব হয়|

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী শিশির কান্তি রাউথ বলেন. সরকারি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানকে প্রমোট করা উচিত। দেশীয় সক্ষমতাতে কাজে লাগাতে হলে এটার জন্য বিশেষ কৌশল বিশেষ করে ক্রয় নীতি কৌশল প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই। মনে রাখতে হবে সকল জেভিতে প্রযক্তি হস্তান্তর করা সম্ভব হয়না। ফলে যে জয়েন ভেঞ্চারগুলো দেশীয় প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করে তা উৎসাহিত করা উচিত। এনার্জিপ্যাক ইনফ্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির এমডি প্রকৌশলী রেজওয়ানুল কবীর বলেন, লোকাল কোম্পানি ১০৭ টাকা, বিদেশি কোম্পানি ১০০ টাকা বিড করলে সমান হওয়া উচিত। কারণ অনেকে বেশি ভ্যালু অ্যাড করছি আমরা। তিনি বলেনম ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ খাতে আরইবি এবং পিজিসিবি টাকায় দরপত্র আহ্বান করছে। তাতে দেশীয় প্রতিষ্ঠান অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তিনি ৫০০ কোটা পর্যন্ত দেশীয় প্রকল্পে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের কাজের সুযোগ সংরক্ষিত করা উচিত।

এনার্জি এন্ড পাওয়ারের কন্ট্রিবিউটিং এডিটর প্রকৌশলী খন্দকার আব্দুস সালেক সুফী বলেন, প্রাক সমীক্ষা যথাযথ ভাবে হওয়া উচিত। নির্মাণ মহাযজ্ঞ হচ্ছে, কিন্তু এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ করবে কে। স্থায়ী উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে দেশীয় উদ্যোক্তাদের দক্ষ করে তুলতে হবে।

বিএএসআই’র প্রেসিডেন্ট ও ডিকন লিমিটেডের এমডি এসএম খুরশীদুল আলম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। বাংলাদেশী ঠিকাদার ও কনসালটানটেন্ট এবং লেবার সব ছিলো দেশী। ১৯৮৯ সালে খুবেই ক্রিটিক্যাল একটি কাজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। পুরোপুরি নিজেদের যোগ্যতায়। কিন্তু আমরা এখন নিচের দিকে যাচ্ছি। যে কারণে এতোদিন পরে এসেও পদ্মা ব্রীজের কাজ করার মতো সক্ষমতা অর্জণ করতে পারিনি।

তিনি দেশীয় নির্মাণ শিল্পকে পতনমুখ অবস্থা থেকে বাচাতে ১০ দফা সুপারিশ উপস্থাপন করেন। তারমধ্যে সিপিটিইউ এর তিনটি শর্ত বদলানো, দেশীয় প্রাইজ প্রেফারেন্স আবার চালু করা, যৌথ উদ্যোগে অবকাঠামো প্রকল্পে আসলে তাকে দেশীয় হিসাবে গ্রহন করা, অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য পর্যায়ক্রমে দেশীয় অংশীদার নেয়া বাধ্যতামূলক করা, নির্মান ও পরামর্শক কাজের জন্য পাবলিক সেক্টর কোম্পানি গঠন করা উল্লেখ্যযোগ্য।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়