শিমুল মাহমুদ: [২] নরওয়ের সরকারি তথ্যমতে, ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশটিতে ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে ফাইজার ও মডার্নার টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেছে মোট ২৯ জনের। তাদের মধ্যে মারা যাওয়া ২৩ জনের ১৩ জনই ছিলো নার্সিং হোমের রোগী, বয়স ছিলো ৮০’র বেশি। তবে এরকম কতজনকে এই টিকা দেওয়া হয়েছিলো তা নিশ্চিত করা যায়নি। নিউ ইয়র্ক পোস্টের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, এ নিয়ে দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি। বরং কাদের টিকা নেওয়া উচিৎ সে সম্পর্কে তারা পরামর্শ দিচ্ছেন।
[৩] বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিন প্রয়োগের ২১ থেকে ৩০ দিন পর প্রতিরোধক ক্ষমতা তৈরী হয়। এক মাসের পরেও কোনো ভাবেই মনে করা যাবে না যে, আমরা নিরাপদ। অর্থাৎ, আমাদেরকে আগের মতই সতর্ক থাকতে হবে, যতোদিন না ৭০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা হবে।
[৪] আইইডিসিআরের সাবেক প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুশতাক হোসেন বলেন, ভারতের আবহাওয়া, সংস্কৃতি এবং মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের মিল রয়েছে। এ কারণে সেখানে প্রয়োগের ভালো ফলাফল বাংলাদেশের জন্য আশা জাগানিয়া।
[৫] তিনি বলেন, টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা সে বিষয়ে সবসময় অন্য দেশের দিকেও নজর রাখা হচ্ছে। সাধারণ যে প্রতিক্রিয়াগুলো হয় সেই খবর পাওয়া যাচ্ছে। যেসব পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে সেগুলো মোকাবেলা আমাদের চিকিৎসকরা করতে পারেন। আমাদের সক্ষমতা আছে।
[৬] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরাও বলেন, এই টিকায় কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় সে বিষয়ে অধিদপ্তর সব ধরনের তথ্য নিয়েছে। টিকা দেওয়ার পর আরও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কিনা তা পর্যবেক্ষণ করবে একটি কমিটি।
[৭] স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমএনসি অ্যান্ড এএইচ অপারেশনাল প্ল্যানের লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হক বলেন, বাংলাদেশ ভারতে টিকার প্রয়োগের ওপর নজর রাখছে। সেখানে টিকা দেওয়ার পর যে ফলাফল আসবে তা আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধা দেবে। সেটা আমাদের জন্য একটা বড় ট্রায়াল হয়ে যাবে।
[৮] যাদের এলার্জির সমস্যা আছে, জ্বর হয়েছে, রক্তে কোনো সমস্যা আছে বা রক্ত পাতলা রাখতে ওষুধ নিচ্ছেন, যাদের রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা একেবারেই কম বা কোনো ওষুধ গ্রহণের কারণে রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থায় প্রভাব পড়েছে, যারা গর্ভবতী, সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াচ্ছেন এবং করোনাভাইরাসের অন্য কোনো টিকা নিয়েছেন- এমন ব্যক্তিদের টিকা নিতে নিরুৎসাহিত করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট।
[৯] সেরাম ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, মাথা ঘোরা, ক্ষুধামন্দা, পেট ব্যথা, অতিরিক্ত ঘাম, লসিকা গ্রন্থি ফুলে যাওয়া, ত্বকে ফুসকুড়ি ওঠার মতো কিছু অস্বাভাবিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রতি ১০০ জনে একজনের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব
আপনার মতামত লিখুন :