সাইফুদ্দিন আহম্মেদ নান্নু: তারা মূর্খ, বিকারগ্রস্থ,সরকারি নির্দেশনা অমান্যকারী, পারলে তাদেরও ১০ দিনের জেল দিন। ‘ঢাকার মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ কেন্দ্রে বারকাউন্সিলের পরিক্ষা বর্জন, বিক্ষোভ, ভাঙচুর করেছে পরীক্ষার্থীরা’ (তথ্যসূত্র একাত্তর টিভি)। পরীক্ষা বর্জন, বিক্ষোভ, ভাঙচুরের কারণ হয়তো পরীক্ষার হলে ফ্রিস্টাইল লেখার সুযোগ মিলেনি, নয়তো অব্যবস্থাপনা, হয়তোবা ন্যায়সঙ্গত অন্যকিছু। তবে কারণটা যে করোনা না, এটি নিশ্চিত। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যে সময়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে, মৃত্যু বাড়ছে। স্কুল-কলেজের ছুটি বাড়ানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পর্যন্ত হচ্ছে না। ইন্টারে অটোপাশ দেওয়া হয়েছে, তখন কেন বারকাউন্সিলের এই পরীক্ষার আয়োজন করা। এই পরীক্ষা কী এই মুহূর্তে খুবই জরুরি?
অল্পকদিন আগে একটা নিউজ দেখেছি, কলেজটির নাম মনে নেই। কলেজে অভ্যন্তরীণ পরিক্ষা নেওয়ার অভিযোগে অধ্যক্ষকে মোবাইলকোর্টের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাঠিয়ে ১০ দিনের জেল দেওয়া হয়েছে। যদিও এক বেঞ্চে একজন করে বসে, মাস্ক পরেই তারা পরীক্ষা দিচ্ছিলো। তবুও বলবোÑ অধ্যক্ষ মহোদয় কাজটা অন্যায় করেছেন, সন্দেহ নেই। অন্য দিকে আমি যতোদূর জানি... বার কাউন্সিলের সদন প্রাপ্তির জন্য ১৩ হাজার পরিক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষা দেওয়ার কথা। সংখ্যাটা দেখুন, ১৩ হাজার। নিশ্চয়ই কেবল মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে না আরও দু’চারটি কেন্দ্রে পরিক্ষা হচ্ছে। নিশ্চয়ই ১৩ হাজার পরিক্ষার্থীকে একজনকে এক বেঞ্চে বসানো হয়নি। কারণ সেটা করা প্রায় অসম্ভব। তাতে কেন্দ্র লাগবে কয়েক ডজন।
যদি একশ, দুই’শ মাস্ক পরা ছাত্র-ছাত্রীকে এক বেঞ্চে একজন করে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার অপরাধে একজন অধ্যক্ষকে ১০ দিনের জেল দেওয়া হয় তবে আজ যারা ১৩ হাজার জনের পরীক্ষা নিলেন তাদের শাস্তি হবে না কেন? বার কাউন্সিলের শিক্ষিত, দায়িত্ববান কর্তারা করোনাকে ছেলে খেলা ভেবেই হয়তো এমন অসময়ে এই পরীক্ষার আয়োজন করে ১৩ হাজার শিক্ষার্থীকে কয়েকটি ভবনে একত্র করেছেন। পরিশেষে দুটি কথা বলি, [১] আইন সবার ক্ষেত্রে সমভাবে প্রয়োগ হওয়া উচিত। মাস্টারকুল নিরীহ প্রজাতির প্রাণী বলে তাদের জেল হবে, অন্যদের কিছু হবে না, তা অন্যায়। [২] এমন শিক্ষিত কর্তাব্যক্তিদের জন্যই করোনা মুক্তির দিক থেকে বাংলাদেশ হবে সর্বশেষ দেশ। ফেসবুক থেকে