লিহান লিমা: [২] দিনটা ২০১০ সালের ১৭ই ডিসেম্বর। পুলিশের দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদে তিউনিশিয়ার ফলবিক্রেতা মোহাম্মদ বোয়াজিজির আত্মাহুতি জন্ম দেয় গণবিক্ষোভের। এরপর তা বেকারত্ব, দুর্নীতি ও বৈষম্য বিলোপসহ স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অবসানের আন্দোলনে রুপ নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। গার্ডিয়ান/আল জাজিরা/মিডল ইস্ট আই
[৩] আরব বিশ্বের এই গণঅভ্যুত্থানের দশম বর্ষপূর্তিতে দ্য গার্ডিয়ান ও ইউগভ এর চালানো সমীক্ষায় উঠে আসে, তিউনেশিয়া, মিশর, সিরিয়া, লিবিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, সুদান, আলজেরিয়াসহ ৯টি আরব দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মনে করেন আরব বসন্তের পূর্বের চাইতে আরো বেশি বৈষম্য ও অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে বসবাস করছেন তারা। বর্তমানে শিশুদের ভবিষ্যতের সম্ভাবনা আরো খারাপ। গত এক দশকে ধনী ও গরিবের মধ্যে বৈষম্য দ্বিগুণ হয়েছে।
[৪] মোট ৫ হাজার ২৭৫জন বিভিন্ন বয়সীর মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়। এতে বিপ্লব নিয়ে তাদের হতাশা উঠে আসলেও দেখা গিয়েছে, কেউই আন্দোলন নিয়ে অনুশোচনা করেন না। বিশেষ করে আরব বসন্ত যে দেশগুলোতে গৃহযুদ্ধের জন্ম দিয়েছিলো তারাও মনে করেন বিপ্লবে তারা সঠিক ছিলেন। তবে আরব বসন্তের স্মৃতি তেমন মনে না থাকা তিউনেশিয়া, মিশর, ইরাক ও আলজেরিয়ার ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সীরা বলেছেন, গণবিক্ষোভ ও বিপ্লব ছিলো অনুশোচনীয়।
[৫] মিশরে খাদ্যদ্রব্যের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। অর্জিত হয় নি প্রত্যাশিত গণতন্ত্র। লিবিয়া, সিরিয়া ও ইয়ামেনে এখনো যুদ্ধ চলছে। আরব বসন্তের ফলে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার সাফল্য অর্জন করা তিউনেশিয়ায় বেকারত্ম ও অর্থনৈতিক টানাপোড়নের কারণে সরকারবিরোধী আন্দোলন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তিউনেশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া জাকারিয়া হামাদি বলেন, ‘আমার বয়সী ৯০ শতাংশ তরুণই বিশ্ববিদ্যালয়ে যায়। আমরা কফি বা একটি সিগারেটের দাম মেটাতে পারি না।’
[৬] জর্ডানের সাবেক কূটনৈতিক মারওয়ান মুয়াশের বলেন, ‘আরব বিশ্বের সরকার যদি জনসংযোগ, মুক্ত রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার বিষয়টি বুঝতে সক্ষম হতো তবে আরব বসন্ত অবশ্যই সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করতো।’