বগুড়া প্রতিনিধি: [২] বগুড়ার ধুনটে ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর জন্ম দেওয়া সন্তানের পিতৃপরিচয় তৃতীয় দফায় ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) পরীক্ষায় শনাক্ত করা হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী মোঃ রাকিব হোসেন (২৮) নামে এক পরিবহন শ্রমিক স্কুলছাত্রীর পুত্রসন্তানের পিতা। মোঃ রাকিব হোসেন উপজেলার ভান্ডারবাড়ি ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামের আবু তালেবের ছেলে।
[৩] মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ছোট চিকাশি-মোহনপুর গ্রামের স্কুলছাত্রী ও ধর্ষণে জন্ম দেওয়া সন্তানের মা। সে কৈয়াগাড়ি গ্রামে নানা আব্দুর রশিদ মন্ডলের বাড়ি থেকে স্থানীয় বালিকা বিদ্যালয়ে ৭ম শ্রেণিতে লেখাপড়া করতো। পার্শ্ববর্তী রঘুনাথপুর গ্রামের অফফের আলীর ছেলে বকুল হোসেনের (২৩) সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালের ১৫এপ্রিল বিকেলে বকুল মেয়েটির ঘরে ঢুকে ধর্ষণের সময় হাতেনাতে ধরে ফেলে আপন নানা আব্দুর রশিদ।
[৪] ধর্ষণের ঘটনাটি সমাজে প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে নানা আব্দুর রশিদ মন্ডলও নাতনিকে ধর্ষণ করেন। ধর্ষণে মেয়েটি গর্ভবর্তী হলে তার পিতা বাদী হয়ে ২০১৮ সালে ৩ অক্টোবর বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। উক্ত মামলায় মেয়েটির আব্দুর নানা রশিদ মন্ডল ও তার নাতি বকুল হোসেনকে আসামি করা হয়। এ অবস্থায় ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রী ২০১৯ সালের ১জানুয়ারি পুত্রসন্তানের জন্ম দেয়।
[৫] সন্তান জন্ম দেওয়ায় আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশ সন্তানসহ স্কুলছাত্রীকে রাজশাহী শিশু ও কিশোরী হেফাজতিদের নিরাপদ আবাসন কেন্দ্রে (সেফহোম) রাখেন। এ অবস্থায় ২০১৯ সালের ২৪ জানুয়ারি আব্দুর রশিদ মন্ডল ও বকুল হোসেনকে গ্রেফতার করে বগুড়া কারাগারে প্রেরণ করে পুলিশ। এছাড়াও জন্ম নেওয়া সন্তানের পিতৃপরিচয় শনাক্ত করতে আব্দুর রশিদ ও বকুলের ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (ডিএনএ) পরীক্ষা করানো হয়। কিন্ত তাদের ডিএনএ প্রতিবেদনে সন্তানের পিতৃপরিচয় মেলেনি।
[৬] ডিএনএ প্রতিবেদনে সন্তানের পিতৃপরিচয় না মিলায় পুলিশ পুনরায় স্কুলছাত্রী আদালতে হাজির করলে স্কুলছাত্রী মোঃ রাকিব হোসেনের নাম প্রকাশ করেন। গত ৭আগস্ট নওগাঁ শহরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে মোঃ রাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতের আদেশে ৩ সেপ্টেম্বর স্কুলছাত্রী ও তার পুত্রসন্তান এবং মোঃ রাকিব কে ঢাকা সিআইডির সদর দপ্তরে ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়। তৃত্বীয় দফায় ডিএনএ পরীক্ষায় ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর জন্ম দেওয়া সন্তানের পিতৃপরিচয় মিলেছে। মোঃ রাকিব প্রেমের ফাঁদে ফেলে স্কুলছাত্রীর সাথে একাধিক বার শারীরিক সম্পর্ক করে। মামলায় অভিযুক্ত আসামী মোঃ রাকিব ও মোঃ বকুল হোসেন কারাগারে রয়েছে।
[৭] ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা শনিবার এ প্রতিবেদক-কে বলেন, ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর পিতার দায়ের করা মামলাটি প্রায় দুই বছর ধরে তদন্ত শেষে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে। মামলায় মোঃ রাকিব হোসেন ও বকুল হোসেনেকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ডিএনএন পরীক্ষায় ও তদন্তে দোষী প্রমানিত না হওয়ায় এ মামলা থেকে নানা আব্দুর রশিদ মন্ডলকে অব্যাহিত দেওয়া হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :