শারফিন শাহ্: গ্রিক পুরাণে প্রেম ও সৌন্দর্যের দেবী ভেনাস বা আফ্রোদিতি। স্বর্গের দেবতা থেকে মর্ত্যরে মানুষ সবাই তার রূপ ও সৌন্দর্যে বুঁদ। তার রূপে পণ্ডিত হয়ে যায় মূর্খ, বুদ্ধিমান হয় উন্মাদ আর চতুর হন হামবড়া! প্রেমিক-প্রেমিকারা তার উপাসনা করে, কবিরা তার স্বপ্নে বিভোর হয়ে কাব্যমালা গাঁথে, তার দেহবল্লরীর ব্যর্থ অনুকরণে গর্বিত হয় ভাস্কর।
এতো যার অগ্নিরূপ, এতো যার মোহনজাল তার বিয়ে হয়েছিলো দেবতাদের মধ্যে সবচেয়ে কুৎসিতদর্শন ভালকানের সাথে। সব দেবতাই সুন্দর কিন্তু ভালকান ছিলেন কদর্যের সার। এজন্যই স্বামীর প্রতি একনিষ্ঠ ছিলেন না ভেনাস। সুখী হতে তাকে একাধিক প্রেম করতে হয়েছে। ভালকানও জানতেন এমন দেবীকে তার সীমানায় আটকের চেষ্টা বৃথা, তাই সেও একাধিক প্রেমে মগ্ন ছিলো।
ভেনাস যেহেতু প্রেম আর রূপের দেবী তাই তার কাজই ছিলো পৃথিবীর সবাইকে প্রেমসিক্ত করা। সেইসূত্রে তার দিকে প্রলোভিত হন ট্রয় নগরীর রাজপুত্র প্যারিস। ফলাফল ধ্বংস হলো ট্রয় নগরী। কিন্তু ধ্বংস হয়নি ভেনাস। কারণ দেবীর ধ্বংস নেই। আজও পৃথিবীর নানাপ্রান্তে তার আরাধনা চলে। তার ভাস্কর্য প্রেম ও সৌন্দর্যের প্রতীক।
ময়মনসিংহের টিচার্স ট্রেনিং কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরও তার এই ভাস্কর্য আমাদের ঐতিহ্যের তথা বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এটা ভেঙে ফেলার জন্য কট্টরপন্থীরা মাঝেমধ্যে জোর আওয়াজ তুলেন। তারা মনে করেন এটা নগ্ন ভাস্কর্য ছেলেমেয়েদের উত্তেজিত করার অনুকূলে।
আমি তো এটা দেখেছি বেশ কবার। কই এমন চিন্তা তো মাথায়ই আসেনি। একটা সৌন্দর্য সাড়া দিয়ে গেছে মনের ঘরে। ভাস্কর্যকে যারা কামোত্তেজক মনে করে তারাই তো নারীদের মনে করে ‘তেঁতুল’। তারা আসলে চায় অনেককিছুই, তবে তা পায় না বলেই এই ভাস্কর্য-ঈর্ষা।
আপনার মতামত লিখুন :