আমিনুল ইসলাম : দিনভর কাজ করেছি। আমাদের এখানে শুক্রবার দিন কাজ করতে হয়। শনি-রবিবার সপ্তাহিক ছুটির দিন। সন্ধ্যার ঠিক খানিক আগে বাসায় ফিরেছি। ফিরেই ভাবলাম, পত্রিকায় চোখ বুলিয়ে নেয়া যাক। পত্রিকা খুলে যা যা শিরোনাম পড়লাম। ঢাকার দক্ষিণখানে ২০ বছর বয়সী বাড়ির এক দারোয়ান, বাড়ির ছাদে ১৫ বছর বয়েসী এক কাজের মেয়েকে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে ৭ তলা থেকে ফেলে দিয়েছে।
এই খবর পড়া শেষে ভাবলাম নিশ্চয়ই ভালো কিছু পাবো পড়ার জন্য। পরের শিরোনাম হচ্ছে, ১১ থেকে ২০ বছরের কিশোরী মরদেহের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিলেন ২০ বছর বয়সী রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গের ডোম। মৃত ওই কিশোরীদের শরীরে একই পুরুষের শুক্রাণুর উপস্থিতি পেয়ে হাসপাতালের ডাক্তারদের টনক নড়ে। এই খবর পড়ে চোখ কপালে তোলে ভাবলাম এইবার অন্তত ভালো কিছু পড়ার সুযোগ হবে। পরের শিরোনাম হচ্ছে, তুর মেয়েকে পেট্রোল দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছি। এসে নিয়ে যা।
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় যৌতুক না দেওয়ায় এক স্বামী তার স্ত্রীর যৌনাঙ্গে পেট্রোল দিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার পর তার বাবাকে ফোন করে এই কথা বলেছে। মেয়েটি এখন হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করছে। এই তিন শিরোনাম একই পত্রিকায় একই সময়ে পড়ছিলাম আর ভাবছিলাম দুদিন আগেই না সবাই মিলে ‘পুরুষ দিবস’ পালন করছিলো। দেশে নাকি ৮০ ভাগ পুরুষ নির্যাতনের শিকার! তাহলে কোথাও এমন কোনো খবর পাই না কেন? কে করলো এই গবেষণা। নাকি দেশি পুরুষ সমাজ লোকলজ্জার ভয়ে কিছু বলছে না।
এই চিন্তা যখন মাথায় এসে ভর করেছে, ঠিক তখনই পত্রিকার আরেকটি শিরোনাম চোখের সামনে এসেছে। এবার ঘাস (চাষ) কাটা শেখার জন্য সরকারি কর্তা ব্যক্তিরা বিদেশ সফরে যাচ্ছেন। আমাকে আর কষ্ট করে বাড়তি কিছু চিন্তা করতে হলো না।