সুজন কৈরী: সাভারের আশুলিয়ায় অটোরিকশা চালক শেখ মিন্টু (৩৫) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। অটোরিকশার ব্যাটারি ও চালকের কাছ থেকে টাকা-পয়সা ছিনতাইয়ে ব্যর্থ হয়ে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় মিন্টুকে। সম্পূর্ণ ক্লুলেস ঘটনার চার মাস পর অটেরিকশা চালক মিন্টু হত্যাকান্ডে ঘটনায় মূল আসামি আলী হায়দার ওরফে নাহিদ হাসান ওরফে নাহিদকে সাভার এলাকার একটি বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা জেলার একটি টিম। এ সময় হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত একটি সুইচ গিয়ার চাকু ও আসামি একজোড়া সেন্ডেল উদ্ধার করা হয়।
পিবিআই জানিয়েছে, ঢাকার আশুলিয়া এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন মিন্টু। চলতি বছরের ১৩ জুলাই রাতে অটোরিকশা নিয়ে ফিরছিলেন মিন্টু। ১৭০ টাকা ভাড়ায় উঠেন তিন যাত্রী। কিন্তু কিছুদূর যাওয়ার পর সন্দেহ হওয়ায় চালক মিন্টু ভাড়া চান। এরপর আশুলিয়ার রশিদ মেম্বারের বাড়ির মোড়ে যাত্রীবেশে উঠা ছিনতাইকারী চালক মিন্টুর গতিরোধ করে ও মারধর শুরু করেন। এক পর্যায় চক্রের একজন চাকু দিয়ে মিন্টুর গলায় ও পেটে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরদিন ঢাকার আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়। মামলাটির তদন্ত শুরু করে পিবিআই।
শুক্রবার রাজধানীর উত্তরায় পিবিআই’র ঢাকা জেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম আরও জানান, হত্যার ঘটনায় চক্রের মূল আসামিকে বৃহস্পতিবার রাতে আমরা গ্রেপ্তার করি। হত্যাকারীরা পেশাদার ছিনতাইকারী চক্রের সদস্য। তারা দীর্ঘ ৪/৫ বছর যাবৎ আশুলিয়া, সাভার এলাকায় ছিনতাই কার্যক্রম চালাচ্ছিলো। তাদের টার্গেটে ছিল অটোরিকশা চালকরা। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা অস্বাভাবিক ভাড়ায় নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে চালককে মারধর করে টাকা পয়সা ও রিকশার ব্যাটারি খুলে নিয়ে যায়।
এসপি খোরশেদ আলম বলেন, ছিনতাইকৃত এসব ব্যাটারির সেট বিভিন্ন জেলায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করতো চক্রটি। এছাড়াও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ভোরে ও রাতের সময় বাস থেকে নামা যাত্রীদের ধরে ছিনতাই করে সর্বস্ব লুটে নিতো।
পিবিআইআইর এই কর্মকর্তা বলেন, গ্রেপ্তার নাহিদ ছিনতাই চক্রের দলনেতা। তার এই চক্রে বেশ অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন সদস্য রয়েছে। এই হত্যাকান্ডে ঘটনায় নাহিদের সঙ্গে আরও ২ জন ছিলেন। তাদেরও গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এই হত্যাকান্ডে ঘটনায় আসামিরা মিন্টুকে হত্যা করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে ঝাউবনে ফেলে পালিয়ে যায়। তদন্তে আমরা সেখানকার একটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ উদ্ধার করেছি। তবে সেটি ছিলো অস্পষ্ট। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় আমরা হত্যাকান্ডের মূলহোতা নাহিদকে গ্রেপ্তার করি।