শিরোনাম
◈ তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে আপিল বিভাগের রায় আজ ◈ স্নাইপার সাফারি: অর্থের বিনিময় মানুষ গুলি করার ‘খেলা’ চালানোর অভিযোগ উঠেছে তিন দশক পর (ভিডিও) ◈ রামপুরায় টিভি ভবনের সামনে বাসে আগুন (ভিডিও) ◈ নিউইয়র্কে পা রাখলেই গ্রেপ্তার করা হবে নেতানিয়াহুকে: হুঁশিয়ারি জোহরান মামদানির ◈ পল্লবী থানার সামনে পরপর তিন ককটেল বিস্ফোরণ, মোটরসাইকেলে পালালো দুর্বৃত্তরা—আহত ৩ ◈ সাবেক আ.লীগ সরকারের ৩৩২ কোটি টাকায় রোজ গার্ডেন কেনা নিয়ে অনুসন্ধানে দুদক ◈ বাংলাদেশকে বিজনেস ভিসা দেওয়া শুরু করেছে ভারত: প্রণয় ভার্মা ◈ ভোটার কার্ড করেন ৩০ হাজার টাকায়, পাসপোর্ট করতে গিয়ে আটক ◈ গণভোট প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর জিজ্ঞাসায় সিইসির জবাব: ‘আইন ছাড়া সম্ভব নয়’ ◈ অজিত দোভালের সঙ্গে ড. খালিলের সৌজন্য সাক্ষাৎ, আঞ্চলিক নিরাপত্তা সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা

প্রকাশিত : ২০ নভেম্বর, ২০২৫, ১২:১৭ রাত
আপডেট : ২০ নভেম্বর, ২০২৫, ০১:২৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

স্নাইপার সাফারি: অর্থের বিনিময় মানুষ গুলি করার ‘খেলা’ চালানোর অভিযোগ উঠেছে তিন দশক পর (ভিডিও)

১৯৯০-এর দশকে বসনিয়া যুদ্ধ চলাকালে এক নৃশংস হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, সে সময় কিছু ইতালীয় নাগরিক ‘স্নাইপার সাফারি’ নামে এক নৃশংস অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। এ অভিযানে তারা অর্থের বিনময়ে বসনিয়ার সারায়েভো শহরের সাধারণ মানুষকে গুলি করার সুযোগ পেতেন। ঘটনার তিন দশক পর এ অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে ইতালির মিলান প্রসিকিউটর দপ্তর। খবর বিবিসি।

অভিযোগটি দায়ের করেছেন সাংবাদিক ও ঔপন্যাসিক এজিও গাভাজ্জেনি। অভিযোগ অনুযায়ী, অস্ত্রপ্রেমী ধনীরা বিপুল অর্থের বিনিময়ে সার্ব বাহিনী নিয়ন্ত্রিত সারায়েভো শহরের সাধারণ মানুষদের শিকার বা হত্যা করতেন। পুরুষ, নারী ও শিশুকে হত্যা করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন হারে অর্থ নেয়া হতো। বসনিয়া যুদ্ধের সময় সারায়েভো শহর চার বছর অবরোধের মুখে ছিল। সেসময় ১১ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হন।

১৯৯০-এর দশকে যুগোস্লাভিয়া ভেঙে পড়লে বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় ভয়াবহ যুদ্ধ শুরু হয়। সারায়েভোকে ঘিরে রাখে সার্ব বাহিনী, যারা শহরে লাগাতার গোলাবর্ষণ ও স্নাইপার হামলা চালাত।

সারায়েভো শহরের স্নাইপার পর্যটন বা মানব শিকারের অভিযোগ নতুন নয়। তবে এবার গাভাজ্জেনি যে তথ্য-প্রমাণ জমা দিয়েছেন, তাতে ইতালির গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাক্ষ্য রয়েছে। আর সেসব তথ্য ইতালির সন্ত্রাসবিরোধী প্রসিকিউটর আলেসান্দ্রো গোব্বিস এখন খতিয়ে দেখছেন।

বসনিয়ান সামরিক গোয়েন্দা কর্মকর্তার সাক্ষ্য অনুযায়ী, তার সহকর্মীরা ১৯৯৩ সালের শেষ দিকে তথাকথিত এ ‘সাফারি’-র বিষয়ে জানতে পারেন। ১৯৯৪ সালের শুরুতে বিষয়টি ইতালির সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা সিসমি-কে জানানো হয়। কিছু মাস পর তাদের পক্ষ থেকে উত্তর আসে যে, ওই সময় পর্যটকরা উত্তর ইতালির ত্রিয়েস্তে শহর থেকে উড়ে এসে সারায়েভোর আশপাশের পাহাড়ে পৌঁছাতেন। তবে সিসমি তাদের আশ্বস্ত করে বলে, ‘আমরা এর ইতি টেনেছি, আর কোনো সাফারি হবে না।’ এর কয়েক মাসের মধ্যেই এ ‘পর্যটন’ বন্ধ হয়ে যায় বলে দাবি করেন ওই কর্মকর্তা।

সন্ত্রাসবাদ ও মাফিয়া নিয়ে লেখালেখির জন্য পরিচিত ইতালীয় সাংবাদিক এজিও গাভাজ্জেনি প্রথম ‘সারায়েভো স্নাইপার ট্যুর’-এর খবর পড়েন আজ থেকে প্রায় ৩০ বছর আগে। তবে সেসময় এ বিষয়ে কোনো শক্ত তথ্য-প্রমাণ ছিল না। পরে ২০২২ সালে একটি ডকুমেন্টারি দেখে বিষয়টি নিয়ে তিনি আবারও আগ্রহী হয়ে ওঠেন। সেখানে অভিযোগ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া ও ইতালিসহ বিভিন্ন দেশের ধনী পর্যটকরা সারায়েভোতে এসে মানুষ-হত্যা অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন।

এরপর গাভাজ্জেনি নতুন করে অনুসন্ধান শুরু করেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইতালির প্রসিকিউটরদের কাছে ১৭ পৃষ্ঠার একটি রিপোর্ট জমা দেন, যেখানে প্রমাণ, সাক্ষ্য ও সাবেক সারায়েভো মেয়র বেনজামিনা কারিচের প্রতিবেদনও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

ইতালির দৈনিক লা রিপাবলিকা-কে দেয়া সাক্ষাৎকারে গাভাজ্জেনি দাবি করেন, অন্তত একশ জনের মতো বিদেশী এ ভয়াবহ খেলায় অংশ নিয়েছিলেন। এ হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে কিছু ইতালীয় নাগরিক জনপ্রতি প্রায় ১ লাখ ইউরো (প্রায় ৮৮ হাজার পাউন্ড) পর্যন্ত ব্যয় করেছেন।

১৯৯২ সালে রুশ লেখক ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক এদুয়ার্দ লিমোনভ-কেও সারায়েভোর দিকে ভারী মেশিনগান দিয়ে গুলি চালাতে দেখা যায়। তিনি ছিলেন সার্ব নেতা রাদোভান কারাদজিচ-এর অতিথি, যিনি পরে জাতিসংঘের ট্রাইব্যুনালে গণহত্যার দায়ে দণ্ডিত হন। লিমোনভ অবশ্য এর জন্য কোনো টাকা দেননি।

ইতালীয় তদন্তকারীরা এরই মধ্যেই কয়েকজন সম্ভাব্য সাক্ষীর তালিকা প্রস্তুত করেছেন। তবে এ অভিযোগ নিয়ে তীব্র সন্দেহও রয়েছে। ১৯৯০-এর দশকে সারায়েভোতে দায়িত্ব পালন করা ব্রিটিশ সেনারা বিবিসিকে জানিয়েছেন, তারা বসনিয়া যুদ্ধের সময় ‘স্নাইপার পর্যটন’ বিষয়ে কখনো কিছু শোনেননি। তাদের মতে, সারায়েভোর চারপাশে যে পরিমাণ চেকপয়েন্ট ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল, তাতে বাইরে থেকে অর্থ দিয়ে সাধারণ মানুষকে গুলি করতে আসা প্রায় অসম্ভব ছিল। একজন ব্রিটিশ সৈনিক এ অভিযোগকে ‘আরবান মিথ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়