কামরুল হাসান মামুন: পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিছু অতিস্বার্থপর শিক্ষকের কাছে জিম্মি
কামরুল হাসান মামুন: পদোন্নতির জন্য শিক্ষকরা গবেষণার চেয়ে রাজনীতির প্রতি বেশি মনোযোগী’ ডেইলি স্টারে প্রকাশিত একটি আর্টিকেলের শিরোনাম এটি। Couldn't agree more! বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এটিই সবচেয়ে বড় সমস্যা। Just because পাবলিকের ট্যাক্সের টাকায় চলে তাই এটি অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের মত যেমন রেল, বিমান, টেলিটক ইত্যাদির মতই দিন দিন মান কেবল নিম্নগামীই হচ্ছে।
গত ৩০ বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্ব কারা দিয়েছে এবং কি তাদের একাডেমিক ব্যাকগ্রাউন্ড একটু খোঁজ নিলেই সব বেড়িয়ে আসবে। কিন্তু এই সার্জারিটা কেউ করবে না। অথচ দেশের ভবিষ্যত নির্ভর করে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেখাপড়া ও গবেষণার মানের উপর। সেই ১৯২১ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান দিনদিন কন্সিস্টেন্টলি নিম্নগামী হয়েছে। কখনো এমন হয়নি যে আগের পাঁচ বছর খারাপ ছিল আর পরের পাঁচ বছর বেটার হয়েছে। এই নিম্নগামিতার সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বদানকারীদের নিম্নগামিতাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
ছাত্র শিক্ষক রাজনীতি আছে। তারা কি রাজনীতিটা করছে? ছাত্ররা কি ছাত্রদের জন্য রাজনীতি করছে? শিক্ষকরা কি শিক্ষক ও শিক্ষার উন্নতির জন্য রাজনীতি করছে? ছাত্র ও শিক্ষকরা কি কোন আদর্শের জন্য রাজনীতি করছে? বরং ছাত্র রাজনীতি ছাত্রদের ধ্বংসের জন্য চলছে। একই কথা খাটে শিক্ষকদের ক্ষেত্রেও। শিক্ষক নিয়োগ ও প্রমোশননীতিমালা দিন যত গিয়েছে ততই সহজতর করা হয়েছে অথচ উন্নতির দিকে যাত্রার জন্য প্রয়োজন ছিল নীতিমালা আরো কঠিন করা।
আমরা কি করেছি প্রত্যেকটা বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব জার্নাল খুলেছে। নিজেরাই এইগুলোর এডিটোরিয়াল বোর্ড মেম্বার হয়েছে। নিজেদের শিক্ষকদের আর্টিকেল ছাপিয়ে জার্নালগুলোকে প্রমোশন লাভের জন্য প্রয়োজনীয় আর্টিকেল প্রোডাকশন কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। এইসব জার্নাল পৃথিবীর এমনকি বাংলাদেশেরও কোন কাজে লাগে না। কেউ এইসব গার্বেজ পড়ে না। শুধু শুধু টাকা খরচ করে ছাপিয়ে অর্থের অপচয় ঘটাচ্ছি। এইসব জার্নাল বন্ধ করে যেই টাকা সাশ্রয় হয় সেটা গবেষণায় বরাদ্দ দিয়ে উন্নত জার্নালে প্রকাশের ব্যবস্থা করলে বরং দেশ ও বিশ্বের লাভ হবে।
আমাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কিছু অতিস্বার্থপর শিক্ষকের কাছে জিম্মি হয়ে পরেছে। আর আমাদের সরকার কি চায়? তারা কেমন শিক্ষকদের খুঁজে বের করে ভিসি বানায় সেইটা দেখলেই দেশের মানুষদের এরা কত ভালোবাসে বোঝা যায়। ফেসবুক থেকে