শিরোনাম
◈ জাতীয় পতাকার নকশাকার শিব নারায়ণ দাস মারা গেছেন ◈ ইরানের ইস্পাহান ও তাব্রিজে ইসরায়েলের ড্রোন হামলা, ৩টি ভূপাতিত (ভিডিও) ◈ ভেটোর তীব্র নিন্দা,মার্কিন নীতি আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লংঘন : ফিলিস্তিন ◈ স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের গল্প-প্রবন্ধ নিয়ে সাময়িকী প্রকাশনা করবে বাংলা একাডেমি ◈ দক্ষিণ ভারতে ইন্ডিয়া জোটের কাছে গো-হারা হারবে বিজেপি: রেভান্ত রেড্ডি ◈ আবারও বাড়লো স্বর্ণের দাম  ◈ ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত ◈ চিকিৎসকদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সংসদে আইন পাশ করব: স্বাস্থ্যমন্ত্রী ◈ বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন না দেওয়াকে কর্মসূচিতে পরিণত করেছে সরকার: মির্জা ফখরুল ◈ ব্রিটিশ হাইকমিশনারের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের বৈঠক

প্রকাশিত : ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ০৭:৫০ সকাল
আপডেট : ১৪ অক্টোবর, ২০২০, ০৭:৫০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে ৫ গুণ বেশি দামে কেনা হাসপাতাল বেড

ডেস্ক রিপোর্ট : দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে জরুরিভিত্তিতে অনুমোদন দেওয়া হয় ‘ইমার্জেন্সি রেসপন্স অ্যান্ড প্যানডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস’ (ইআরপিপি) প্রকল্প। সারাদেশের চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সুরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহসহ করোনা মোকাবিলার সক্ষমতা বাড়াতে শুরু হয় প্রকল্পটির কার্যক্রম। কিন্তু শুরু থেকেই এই প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন কেনাকাটা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। প্রকল্পের আওতায় কোনো দরযাচাই করা ছাড়াই বাজার মূল্যের চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি দামে কেনা হয়েছে ২২০টি হাসপাতাল বেড। যদিও ইনশা ট্রেডিং করপোরেশন নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সরবরাহ করা এসব বেডের দাম বিষয়ে কিছু বলতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। আর কেনার পর এসব হাসপাতাল বেড পড়ে রয়েছে অবহেলা, অযত্নে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বিশ্বব্যাংক প্রকল্পের আওতায় ২৮ মে ইনশা ট্রেডিং করপোরেশনের সঙ্গে ২২০টি হাসপাতাল বেড সরবরাহের জন্য চুক্তি করা হয় ইআরপিপি প্রকল্পের আওতায়। এই চুক্তি অনুযায়ী ১৭০টি ‘থ্রি ফাংশনাল ইলেকট্রিক হাসপাতাল বেড’ ও ৫০টি ‘ফাইভ ফাংশনাল ইলেকট্রিক হাসপাতাল বেড’ সরবরাহ করার কথা প্রতিষ্ঠানটির। প্রতিষ্ঠানটি বাজার মূল্যের চাইতে প্রায় সাড়ে ৫ গুণ বেশি দামে ‘ফাইভ ফাংশনাল হাসপাতাল বেড’ ও চার গুণ বেশি দামে ‘থ্রি ফাংশনাল হাসপাতাল বেড’ সরবরাহ করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইনশা ট্রেডিং করপোরেশনের পক্ষ থেকে ‘ফাইভ ফাংশন হাসপাতাল বেডে’র প্রতিটির দাম ধরা হয় ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ৫০টি বেডের জন্য মোট দাম ধরা হয় এক কোটি ৭৫ লাখ টাকা। পরে প্রতিটি বেডের দাম ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা হিসেবে এক কোটি ৬৫ লাখ টাকায় বেডগুলো সরবরাহের কাজ পায় ইনশা ট্রেডিং।

একইসঙ্গে ইনশা ট্রেডিং ‘থ্রি ফাংশনাল হাসপাতাল বেডে’র প্রতিটির দাম ধরে ২ লাখ ৫ হাজার টাকা। এ ধরনের ১৭০টি বেডের দাম ধরা হয় ৩ কোটি ৪৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা। পরে প্রতিটি বেডের দাম ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা হিসাবে ১৭০টি বেডের দাম তিন কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরবরাহের জন্য ইনশা ট্রেডিং চুক্তিবদ্ধ হয়।

মহাখালীর ডিএনসিসি করোনা আইসোলেশন সেন্টারের ষষ্ঠ তলায় গিয়ে দেখা যায়, সেখানে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে এই ২২০টি হাসপাতাল বেড। হাসপাতাল বেডগুলোর গায়ে দেখা যায়, চীনের জিয়াংসু মেডিকেল ইক্যুইপমেন্টের তৈরি এসব বেড। প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে ইমেইলের মাধ্যমে যোগাযোগ করেন এই প্রতিবেদক। ইআরপিপি প্রকল্পে সরবরাহ করা দুই রকমের হাসপাতাল বেডের দাম মডেল নম্বরসহ উল্লেখ করে দিলে প্রতিষ্ঠানটি মেইলের উত্তর দেয়।

চীনের জিয়াংসু মেডিকেল ইক্যুইপমেন্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের তৈরি করা ‘ফাইভ ফাংশন ইলেকট্রিক হাসপাতাল বেডে’র দাম ৪৮৫ ডলার অর্থাৎ ৪১ হাজার ২২৫ টাকা (৮৫ টাকা ডলার মূল্য ধরে)। প্রতিষ্ঠানটি জানায় তাদের ‘থ্রি ফাংশনাল ইলেকট্রিক হাসপাতাল বেডে’র দাম ৩৭৯ ডলার অর্থাৎ ৩২ হাজার ২১৫ টাকা।

হাসপাতাল বেডের দামের বিষয়ে জানতে চাইলে রাজধানীর বিএমএ মার্কেটের কাশেম সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিক্যাল ওয়ার্কসের জেনারেল ম্যানেজার আবদুল কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশে করোনা পরিস্থিতিতে এপ্রিল-মে মাসের দিকে হাসপাতালের বেডের দাম বেশি ছিল— এটা সত্যি। কিন্তু ফাইভ ফাংশনাল বেড ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা কিংবা থ্রি ফাংশনাল বেড ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা— এত বেশি কখনোই ছিল না। এই দর বাজার মূল্যের চেয়ে অনেক অনেক বেশি।

চীনের জিয়াংসু মেডিকেল ইক্যুইপমেন্টের পক্ষ থেকে দেওয়া মেইলে দামের বিষয়ে আবদুল কাইয়ুম বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে ফ্রেইট কস্ট কিছুটা বেড়েছিল। সেটি বাড়িয়ে ধরলেও একটি হাসপাতাল বেডের দাম ৩ লাখ ৩০ হাজার টাকা কোনোভাবেই হবে না। এ ক্ষেত্রে জিয়াংসু যে দাম দিয়েছে, তাতে ভ্যাট, ট্যাক্স, সিঅ্যান্ডএফ ও ফ্রেইট খরচসহ সবকিছু মিলিয়ে ফাইভ ফাংশনাল বেডের দাম আসতে পারে ৫৯ হাজার ৮১৩ টাকা। থ্রি ফাংশনাল বেডের ক্ষেত্রে এই খরচ হবে ৪৭ হাজার ৯৬২ টাকা। এই অঙ্কের কিছু কমবেশি হতে পারে। কিন্তু সেটি কোনোভাবেই চুক্তিপত্রে উল্লেখ করা দামের সমান হবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইনশা ট্রেডিং করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী আব্দুর রশীদ বলেন, এই প্রকল্পে আমরা বিডিংয়ের মাধ্যমে কাজ করেছি। বিডিংয়ে আমরা প্রথম একটি দাম দিয়েছিলেন। পরে দাম কিছুটা কমিয়ে তারপর ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়।
সূত্র- সারাবাংলা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়