শিরোনাম
◈ আরপিও ২০ ধারার সংশোধনী: রাজনৈতিক অধিকার বনাম আইনগত বাধ্যবাধকতা ◈ পাঁচ দুর্বল ইসলামী ব্যাংক একীভূত: নতুন ‘সম্মিলিত ব্যাংক’ গঠনের পথে সুযোগ ও ঝুঁকি ◈ নৌ, বস্ত্র ও পাট, পরিকল্পনা ও সমবায়ে নতুন সচিব ◈ যারা চাপে পড়বেন নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়ন হলে ◈ প্রার্থীদের ঋণতথ্য যাচাইয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক ◈ জাকির নায়েকের বাংলাদেশে আসা নিয়ে যা বললেন ধর্ম উপদেষ্টা (ভিডিও) ◈ সাংবাদিককে কনুই মারলেন বিএনপি নেতা সালাম, ভিডিও ভাইরাল ◈ বাংলাদেশিদের জন্য ভারতীয় ভিসা ইস্যুতে যে পদক্ষেপ নিল ভারতীয় দূতাবাস ◈ গণভোটের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানা যাবে সোমবার! ◈ দুর্দান্ত ব‌্যা‌টিং‌য়ে অঙ্কনের শতক, ঘুরে দাঁড়ালো ঢাকা বিভাগ 

প্রকাশিত : ০৮ অক্টোবর, ২০২০, ০৮:৩৪ সকাল
আপডেট : ০৮ অক্টোবর, ২০২০, ০৮:৩৪ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ইসরাত জাহান উর্মি , বিবস্ত্র নারী- রাস্তায় নেমে আমরা কী চাইবো, কীভাবে চাইবো?

ইসরাত জাহান উর্মি  কয়কেটা তথ্য ইনপুট দিই। হয়তো সংবাদ মাধ্যমেই এই তথ্যগুলা পেয়ে যাবেন। তবুও নিউজরুমে থাকার সুবাদে মাথার ভেতর তথ্যগুলা ঢুকে বসে আছে। রিলিজ করি। এই ছেলেগুলা এই নারীরে আগে থেকেই উত্যক্ত করতো এবং সাবেক স্বামীর সাথে তার যৌন সম্পর্ক এই ছেলেগুলো নিতে পারেনি। পারেনি যে, সেইটা তো ধরেন ওই ভিডিওত বলা ছেলেগুলার সংলাপে বোঝা যায়। ছেলেগুলা বলতেছিলো, ‘এখনো বিষ মরে নাই?’ বা এই জাতীয় কিছু। অর্থাৎ তারা সেক্সুয়াল আর্জ বুঝাচ্ছিল। ডিআইজি জানিয়েছেন, এসব নিপীড়নের কথা ছেলেগুলোর বাপ-মাকে জানানো হয়েছিলো, নারীটি জানিয়েছিলেন। পুলিশ কী করেছে ৩২ দিন ধরে?-এই প্রশ্ন উঠেছে।

পুলিশের আসলে এখানে কিছু করার নেই। নারীটি তো আইনের কাছে যায় নাই। পুলিশ তো আর কারুর ‘বেডরুমে’ গিয়া পাহারা দিতে পারে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সচিবালয়ে বলেছেন, ‘আইনের শাসনের অনুপস্থিতি নেই, পুলিশ তো বসে নেই, জানামাত্র ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’ কোনো সাংবাদিক এই প্রশ্ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে করেছেন কিনা জানি না যে, এই যে এতোদিন ধরে উত্যক্ত করার পরেও নারীটি আইনের কাছে গেলেন না, কেন গেলেন না? এই আস্থার অভাব তিনি স্বীকার করেন কিনা? (আমি উপস্থিত থাকলে অবশ্যই এই প্রশ্ন করতাম, যদিও উত্তর কী পেতাম তা জানি।) আর ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাস্তায় কর্মসূচি না দিয়ে ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করতে। তিনি তার যোগ্য কথাই বলেছেন। আজকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীরও একটা অনুষ্ঠান ছিল। তিনি সেখানে কী বলেছেন শুনি নাই। আগ্রহ হয় নাই। আমার আগ্রহহীনতা ক্ষমা করবেন।

এবার আসেন আন্দোলনের ফলাফল নিয়ে। চারজনকে অ্যারেস্ট করেছে। যদি ক্রসফায়ারে না দেয়, তবে কেইস চলবে। কতোদিন ধরে চলবে ডু ইউ হ্যাভ এনি আইডিয়া? ২০১৭ সালে ধর্ষণ মামলার দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে একটা স্টোরি করতে গিয়ে একটা কেইস পেয়েছিলাম, সাত বছরের একটা বাচ্চা মেয়ে রেপড হলে সেই মামলা চলেছে দীর্ঘ ১১ বছর। এগারো আর সাতে কতো হয় বন্ধুরা? ১৮ বছর। এই দীর্ঘ ১১ বছর কিন্তু আমরা রাস্তার আন্দোলনকারীরা অথবা ফেসবুকাররা অথবা অন্য কেউই বাচ্চাটার কেইসের ফলো আপ করিনি। মানে বাস্তব কারণেই করা সম্ভব না। এখন এই ১১ বছর ধরে কিন্তু ওই মেয়ের জীবন থেমে থাকে নাই। কেমন করে চলেছে এই সমাজে নিম্নবিত্ত একটা ধর্ষিতা মেয়ের পরিবারের জীবন, সেই গল্প কোনো মিডিয়ার নিউজ রানডাউনে জায়গা পায় না।

নিউজ কারেন্ট জিনিস। বর্তমানের। সবসময় তারে তাজা আর টানটান থাকতে হয়। পুরনো হয়ে যাওয়া গল্প মানুষ খায় না, আমাদের সংবাদ মাধ্যম নাথিং বাউট পণ্য। আমাদের আইনে আছে ধর্ষণের মামলা ৯০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। সেইটা কী হয়? আসেন দেখি কয়টা হইছে। নুসরাতের মামলা ৬২ দিনে নিস্পত্তি হয়েছে, রূপার মামলাটাও একই রকম সময়। আর কোনো উদাহরণ নাই। গণমাধ্যমে আলোচিত না হলে আদালতও অত পাত্তা দেয় না। বনানীর রেইনট্রি হোটেলের মামলার কী হলো? মাইক্রোবাসে গারো তরুণী? ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ছাত্রী ধর্ষণ? কতোগুলো নব্বই দিন পার হয়েছে? অর্থাৎ নব্বই দিনের কাজীর গরু কিতাবে আছে প্রকৃতপক্ষে নাই। এইবার আসেন গণমাধ্যম কী করে? মানে নারী বিষয়ে গণমাধ্যমের ভূমিকা কী। কয়টা চ্যানেল আর পত্রিকা নারীর খবর কতোটা গুরত্ব দেয় সেইসব প্যাঁচাল নাই পারি। আপনারা সবই জানেন। কিন্তু মনে পড়ে ক্রিকেটার রুবেল আর হ্যাপির ঘটনার পরপর রুবেলকে দিয়ে সম্ভবত গ্রামীণফোন একটা বিজ্ঞাপন বানিয়েছিল? যেখানে রুবেল বল করে উইকেট নেবার পর হিংস্রভাবে বলছেন, এক্কেরে ভাইঙা দিমু (সম্ভবত উহ্য ছিল হ্যাপির...!) এখানে কনডমের অ্যাডের ল্যাঙ্গুয়েজ হলো, ‘আসল পুরুষ’। ম্যাসকুলিনিটিকে ফ্লারিশ করা এরকম হাজারো বিজ্ঞাপন, নাটক, সিনেমা প্রডাকশন দিয়ে গণমাধ্যম তার ভূমিকা রেখেছে। এখন এসব বিষয় ও তথ্য বিশ্লেষণ করে সম্ভবত আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, রাস্তায় নেমে আমরা কী চাইবো, কীভাবে চাইবো। ফেসবুক থেকে

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়