শিরোনাম
◈ ভুটানের রাজার সঙ্গে থিম্পু পৌঁছেছেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী ◈ চট্টগ্রামের জুতার কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে ◈ জিয়াও কখনো স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করেনি, বিএনপি নেতারা যেভাবে করছে: ড. হাছান মাহমুদ ◈ আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় ভারতীয় পণ্য: গয়েশ্বর ◈ সন্ত্রাসীদের ওপর ভর করে দেশ চালাচ্ছে সরকার: রিজভী ◈ ইফতার পার্টিতে আওয়ামী লীগের চরিত্রহনন করছে বিএনপি: কাদের ◈ বাংলাদেশে কারাবন্দী পোশাক শ্রমিকদের মুক্তির আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাশন লবি’র ◈ দক্ষিণ আফ্রিকায় সেতু থেকে তীর্থ যাত্রীবাহী বাস খাদে, নিহত ৪৫ ◈ ২২ এপ্রিল ঢাকায় আসছেন কাতারের আমির, ১০ চুক্তির সম্ভাবনা ◈ ইর্ন্টান চিকিৎসকদের দাবি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী’র সঙ্গে কথা বলেছি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত : ০৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৩১ দুপুর
আপডেট : ০৩ অক্টোবর, ২০২০, ১২:৩১ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাফুফের নির্বাচন কিছুক্ষণ পরেই শুরু : ফুটবলের নিয়তি নির্ধারণের ভোট

 

ডেস্ক রিপোর্ট : ফুটবল আবার পাঁচতারা হোটেলে। চার বছর পর পর তার এমন সমাদর পাওয়ার সুযোগ হয়। তার গ্লানিভরা অতীত নিয়ে সবাই মুখর হয়ে ওঠে। ফুটবলের প্রতি ভালোবাসায় কর্মকর্তারা এমন গদগদ হয়ে ওঠেন, সামনের চার বছর যেন তার ভাগ্যোন্নয়ন না হয়ে পারে না! এবারও যথারীতি সেই আবহে দেশের ফুটবলের ভাগ্যগণনায় বসছেন ১৩৯ জন ভোটার। তাঁদের ভোটেই আজ ফুটবলের নিয়তি নির্ধারণ হবে।

নির্বাচনে অংশ নেওয়া ৪৭ জন প্রার্থীর মধ্যে ২১ জনের কমিটির হাতে উঠবে ফুটবল। এক যুগ ধরে এই কমিটির সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন। সঙ্গী আরো ২০ জন থাকলেও ফুটবলের ভালো-মন্দের সব দায় চাপছে এই কিংবদন্তির ঘাড়ে। সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর কর্মকাণ্ডের ব্যবচ্ছেদ হচ্ছে। আসলে তাঁর কাছে মানুষের ছিল পাহাড়সম প্রত্যাশা, সেটা ছুঁতে পারেননি বলেই যত আক্ষেপ। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে ফুটবলের আনন্দভুবন তৈরি করাও কঠিন কাজ। এর পরও ‘কঠিনেরে ভালোবেসে’ তিনি আরো এক মেয়াদে থাকতে চান ফুটবলের শিরোমণি হয়ে। কিন্তু চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছেন তাঁর খেলোয়াড়ি জীবনের দুই সতীর্থ বাদল রায় ও শফিকুল ইসলাম মানিক। মানিক নিজেকে ‘আন্ডারডগ’ ভাবছেন আর শারীরিকভাবে অসুস্থ বাদল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নাটকে নিভৃতে সরে গিয়েও আছেন সভাপতি নির্বাচনে। গত দুই দিনে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নীরব ‘ভোট-বিপ্লবে’র প্রত্যাশায় আছেন এই তারকা, ‘ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। ফুটবল বাঁচানোর আকুতি জানিয়েছি তাঁদের।’ তবে তাঁর প্রত্যাশায় জল ঢেলে দিতে মানিকের উপস্থিতি। তা ছাড়া বাদলের অসুস্থতা ও ভোটের নানা সমীকরণে ফেভারিট কাজী সালাউদ্দিন। এর পরও ‘বিগ ম্যাচে’র চাপ অনুভব করে কিংবদন্তি বলছেন, ‘সব সময় নির্বাচন করেই জিতেছি, সুবাদে একরকম আত্মবিশ্বাস আছে। এর পরও বিগ ম্যাচের একটা মানসিক চাপ তো থাকেই। ফুটবলের একটা ভিত্তি তৈরি হয়েছে, এবার অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করার জন্যই নির্বাচন করছি।’

সভাপতির পদ বাদ দিলে বাকি ২০ পদেও হবে তুমুল লড়াই। সম্মিলিত পরিষদ আর সমন্বয় পরিষদ নামে দুটি প্যানেল মুখোমুখি হলেও লড়াইটা আসলে একদম ব্যক্তিগত। ব্যক্তির ভাবমূর্তি, কর্মকাণ্ড ও ভোটের বাজারে চিরন্তন ‘দেওয়া-নেওয়া’র সংস্কৃতির ওপর নির্ভর করছে জয়-পরাজয়। তাই সিনিয়র সহসভাপতি পদে সালাম মুর্শেদীই এগিয়ে থাকছেন শেখ মোহাম্মদ আসলামের বিপক্ষে। চার সহসভাপতি পদে তুমুল লড়াই হবে আট প্রার্থীর মধ্যে। এখানে ভোটাররা প্রথমেই স্বাগত জানাতে পারেন ফুটবলের দুই পরাশক্তি আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের দুই ‘ক্লিন ইমেজের’ সংগঠক কাজী নাবিল আহমেদ ও ইমরুল হাসানকে। এই দুজনও বাকি ছয়জনকে পেছনে ফেলে এগিয়ে। তাহলে বাকি দুই সহসভাপতি পদের জন্য লড়াই হবে মহিউদ্দিন মহি, তাবিথ আউয়াল, আতাউর রহমান মানিক, শেখ মোহাম্মদ মারুফ হাসান, রেদুয়ান ফুয়াদ ও আমিরুল ইসলাম বাবুর মধ্যে।

১৫টি সদস্য পদেও ৩৪ জন প্রার্থী। এখানে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। ছিটকে যেতে পারেন বর্তমান কমিটির অনেক নামিদামি সংগঠক। বিশেষ করে জেলা ও বিভাগের তরফ থেকে একাট্টা হাওয়ার হাওয়া উঠেছে। নানা গঞ্জনা-বঞ্চনার পর ফুটবল ফেডারেশনে নিজেদের অবস্থান পাকা করতে মরিয়া তাঁরা। ভোটে তাঁরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ, সুবাদে তাঁদের অবস্থানের ওপর নির্ভর করছে অনেক কিছু। সমন্বয় পরিষদকে বলা হচ্ছে তাদের প্যানেল, জেলা-বিভাগের সংগঠকদের পাশাপাশি ক্লাবের প্রার্থীদের নিয়ে এটা ভারসাম্যপূর্ণ প্যানেল। এই পক্ষের অলিখিত নেতা তরফদার মোহাম্মদ রুহুল আমিন নির্বাচনে না থাকলেও থেকে যাচ্ছে প্রভাব। তাই নানা হিসাব-নিকাশ ও মেরুকরণে ফুটবলের এই নির্বাচন মোটেও সহজ নয়।

নির্বাচনের আগ পর্যন্ত ইশতেহারে ভেসে গেছে ফুটবল। এক পক্ষের ২৪ দফা তো আরেক পক্ষের ৩৬ দফা উন্নয়ন কর্মসূচি। বিশ্বকাপের মোহ কেটে গেলেও এবার অলিম্পিকে যাওয়ার নতুন স্বপ্ন জায়গা পেয়েছে মানিকের ইশতেহারে। প্রার্থীদের মুখে উন্নয়নের খই ফুটছে। প্রতিশ্রুতির এমন বাঁধভাঙা জোয়ারের দেশ বিশ্ব ফুটবলে দ্বিতীয়টি আছে কি না, কে জানে। প্রাণ থাকলে ফুটবলও হয়তো বিস্ময়ে বলে উঠত, ‘এত ভালোবাসা তো কোথাও পাইনি!’ তার প্রাণ নেই, এটাই সুবিধা। তাকে সামনে রেখে অনেক হাওয়াই-মিঠাই গল্প দিয়ে নির্বাচনী বৈতরণি পার হওয়া যায়। এরপর গৌণ হয়ে যায় ফুটবলের ভালোবাসা। এটাই হয়েছে বারবার। কর্মকর্তারা জিতেছে, কিন্তু ফুটবল হেরেছে। তাই নির্বাচনকে ঘিরে পাঁচতারা হোটেলে ব্যানার-ফেস্টুনের অমন সাজসজ্জা দেখে খুব ভ্রম হয়। সংশয় জাগে ভোটারদের জামাই আদর দেখে। সব মোহ কাটিয়ে তাঁরা কি ফুটবলের পক্ষে থাকবেন! ফুটবল কি জিতবে!
সূত্র- কালেরকণ্ঠ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়