রাজিক হাসান: হাজার বছর ধরে উপমহাদেশে বরাবর বস্তুবাদী চিন্তার বদলে ভাববাদ রাজত্ব করেছে। মানুষ তার সকল সমস্যার সমাধান খুঁজেছে বিশেষ কাল্পনিক শক্তির কাছে। তাই বলা যায়, বর্তমান সময়ে উপমহাদেশজুড়ে ধর্মচিন্তার যে প্রাদুর্ভাব দেখা যাচ্ছে তাতে সমাজবিজ্ঞানের ব্যাখ্যায় না গিয়েও বলা যায়, ‘রেনেসাঁ’ বা নবজাগরণ’ বলতে প্রকৃত অর্থে যা বুঝায় এ অঞ্চলে তা ঘটেনি আদৌ। আধুনিক প্রযুক্তি এসেছে, আংশিক শিল্পায়ন ঘটেছে অর্থাৎ পশ্চিমের হাওয়া লেগেছে গায় কিন্তু চিন্তা-ভাবনায় যে বৈপ্লবিক পরিবর্তন রেনেসাঁর হাত ধরে আসার কথা ছিল, আসেনি তা। কিন্তু চিন্তা তো প্রবহমান,স্থানুর মতো একটা জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেনা তা।
মানুষের মতো চিন্তারও সামনে এগোনো স্বভাব। অনগ্রসর চিন্তা একসময় অগ্রসর চিন্তা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়। এটাই নিয়ম। কিন্তু এখানে ,আমাদের এই সমাজে কেন তার ব্যতিক্রম দেখি? কেন মনে হয়, চিন্তা থমকে আছে, তাকে যেন এগোতে দেয়া হচ্ছেনা, পথে পথে তার বাধা, ব্যারিকেড। কোথা থেকে আসছে এই বাঁধা? এটা বের করা কিন্তু কঠিন নয়। কীভাবে? সবচে বেশি আলোচিত বিষয় যেমন নারী-স্বাধীনতা, জাতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা কিংবা উত্তরাধিকার সূত্র আইন ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ফেসবুকে লিখে যদি বন্ধুদের মতামত চেয়ে জরিপ চালানো যায় এবং তারপর প্রদত্ত ‘মতামতগুলোর বয়স’ বের করা হয়, এরপর দেখা যাবে অধিকাংশের দৃষ্টিভঙ্গিতে ব্যক্ত মতামত মোটামুটি মধ্যযুগের বা তার আরো আগের এবং মজার ব্যাপার এসব মতামত কোনো না কোনো ধর্মের ছদ্মবেশ ধারণ করে অধিকাংশ মাথার দখল নিয়ে বসে আছে। তখন এটা আরও স্পষ্ট হয়ে যাবে আধুনিক ও মানবিক চিন্তার আগমনে প্রকৃত বাঁধাটা কোথা থেকে আসছে। আধুনিক চিন্তার শত্রু-মিত্র চিনতে আর অসুবিধা হয় না তখন। ফেসবুক থেকে