সাইদ রিপন: [২] দেশজ প্রত্যেকটা উদ্ভিদ প্রাণীকে সংরক্ষণ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সভা শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। একনেক সভায় মোট ৪টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৪৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক ঋণ ৯৩ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হবে।
[৩] একনেক সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ শিরোনামে একটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ প্রকল্প অনুমোদনের সময় উদ্ভিদ প্রাণীকে সংরক্ষণের নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী।
[৪] প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, উনি বললেন, দেশজ যা কিছু আছে উদ্ভিদ প্রাণী প্রত্যেকটাকে আমরা সংরক্ষণ করবো। শামুক নিয়ে প্রকল্প আছে, ঝিনুককেও আনতে হবে। কাকড়াকেও আনতে হবে। বাংলাদেশের যা প্রাণিজ, জলজ, ভূমিজ সম্পদ আমাদের আছে, প্রত্যেকটা আইটেমকে কাজে আনতে হবে। শামুক আমাদের দেশের অনেক নাগরিকরা খায়, তারা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের। সুতরাং এটা দেশের ভালো কমার্শিয়াল আইটেম। মূল বার্তা হলো দেশী প্রজাতির মাছ। এগুলোকে বাঁচানো, সংরক্ষণ ও বৃদ্ধি করা। তার সঙ্গে সঙ্গে শামুক, যা একটি জলজ প্রাণী। শামুক নিয়ে অনেক কথাবার্তা হয়েছে। প্রাইম মিনিস্টার ওয়াজ হাইলি এক্সাইটেড যে, আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। কারণ উনার বাড়ি ওই অঞ্চলে। ছোটবেলায় শামুক দেখেছেন। ওই এলাকায় শামুক থেকে চুন তৈরি হয়। কোটালিপাড়ায় চুন হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন শামুক শুধু হাঁসের খাবার নয়, এটা থেকে চুনও হয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতা শুধু মানুষের স্বাধীনতা নয়, বাংলার প্রকৃতি পরিবেশ সংরক্ষণও আমাদের আরেকটা উদ্দেশ্য। আমরা নাগরিকরা যারা মানুষ, প্রকৃতির সামান্য অংশ। সুতরাং আমাদেরকে শামুক, টেংড়া-পুটি এদেরও সংরক্ষণ করা উচিত।
[৫] ‘দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পটি একনেক সভায় দেশীয় প্রজাতির মাছ এবং শামুক সংরক্ষণ উন্নয়নের লক্ষ্যে ৩৯২টি দেশীয় প্রজাতির মাছচাষ প্রদর্শনী করা হবে। ১১০টি ধানক্ষেতে মাছচাষ প্রদর্শনী ও ৩৯১টি পেনে মাছচাষ প্রদর্শনী স্থাপন করা হবে। মৎস্য সেক্টর সংশ্লিষ্ট প্রকল্প এলাকার ১ লাখ ৮ হাজার ৮৪৭ জন সুফলভোগীর দক্ষতা উন্নয়ন করা হবে। প্রকল্পটি চলতি সময় থেকে ২০২৪ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মৎস্য অধিদপ্তর।
[৬] এছাড়া আন্তর্জাতিক মানের সাফারী পার্কের আলোকে বঙ্গবন্ধু সাফারী পার্কের বিদ্যমান মাস্টার প্ল্যানের উন্নয়ন করা হবে। সাফারি পার্কের সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করা হবে। এই জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্ক, গাজীপুর এর এ্যাপ্রোচ সড়ক প্রশস্তকরণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত)প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় সাফারী পার্কের বহিস্থ ও অভ্যন্তরীণ রাস্তায় যানজট নিরসন ও যোগাযোগ সুবিধার উন্নয়ন, পার্কে বিদ্যমান বন্যপ্রাণী এবং দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা বিধান ও দর্শনার্থীদের বিনোদনের সুবিধাদি উন্নয়ন করা হবে। জানুয়ারি ২০১৭ থেকে চলমান প্রকল্পটি ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। চলমান এ প্রকল্পে এখন মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ২৩৯ কোটি টাকা।
[৭] এ প্রকল্পের আওতায় বাঘের বাজার-ইন্দ্রপুর বাজার পর্যন্ত ৩ দশমিক ২ কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ ও ৯ কিলোমিটার প্রশস্ত করা হবে। ভবানিপুর বাজার-ইন্দ্রপুর বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৪ কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক নির্মাণ, সাফারী পার্কের অভ্যন্তরীণ পাকা রাস্তা নির্মাণ ও সাফারী পার্কের বাহিরে চারিধারে নির্মাণ করা হবে। নিরাপত্তার জন্য পাকা রাস্তা নির্মাণ, সাফারী পার্কের এ্যাপ্রোচ রোডে ২টি সেতু নির্মাণ, এ্যাপ্রোচ সড়ক স¤প্রসারণের জন্য ৮ দশমিক ৫২৬ একর ভ‚মি অধিগ্রহণ ও ৭ কিলো, মিটার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও পুকুর ও জলাধার খনন, ৪টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ ও প্রকল্পের বিদ্যমান মাস্টার প্ল্যান হালনাগাদ করা হবে। আন্তর্জাতিক রুপ দিতে সকল কাজ বাস্তবায়ন করা হবে।
আপনার মতামত লিখুন :