আফরোজা মামুদ: নারায়ণগঞ্জের তল্লা এলাকার একটি মসজিদে গ্যাস বা এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় আমার ছোটো চাচা মারা গেলেন। ৪ সেপ্টেম্বর রাত থেকে ৫০ শতাংশ পোড়া শরীরের অমানুষিক যন্ত্রণা সহ্য করে করে। কাকাকে দেখি না অনেক বছর। শেষ দেখাটাও হয়তো দেখতে যেতে পারবো না। কাকা ক্ষমা করুন আমাকে। যতোটুকু স্নেহ ভালোবাসা দিয়েছিলেন ফেরত দিতে পারলাম না। আল্লাহপাক আপনার সকল গুনাহ ক্ষমা করে আপনাকে বেহেশত নসীব করুন। ঘটনা যা জানলাম। মসজিদের ফ্লোরের নিচ দিয়ে গ্যাস লাইন গিয়েছে। এ লাইনগুলোর পাইপের লিকেজ দিয়ে সবসময়ই মসজিদের ভেতর গ্যাস বের হয়ে জমা হতে থাকে ।এলাকাবাসী বিষয়টা তিতাস গ্যাসের নজরে দিলেও তারা এ ব্যাপারে কোনো গ্রার্য করেনি। বরং লাইন সরানোর জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর কাছে ৫ লাখ টাকা দাবি করে। যার কারণে এলাকার লোকজন ও মসজিদ কমিটি রাগ ও হতাশা নিয়ে টাকা সংগ্রহ করার কাজে নামে।
যেহেতু মোটা অংক তাই জমা হতেও সময় লাগছিলো। কিন্তু যে বিপদের আশংকা এলাকাবাসী করছিলো তা ঘটেই গেলো। ঘটনার সময় এশার নামাযের শেষ ভাগ। বেতের নামায শেষে মোনাজাত চলছিলো। নামাযের সময় এসি চলার কারণে স্বাভাবিকভাবেই মসজিদের দরজা জানালা বন্ধ রাখা হয়। এ কারণে লিকেজ হওয়া গ্যাস মসজিদের বাইরে বের হয়ে যেতে পারেনি। ফলে বিদ্যুতের সুইচ অন করার সাথে সাথে বিস্ফোরণ ঘটে। যখন ভেতরে গ্যাসের বিস্ফোরণ হয় তখন এসিতে থাকা গ্যাসের কারণে এসিও বিস্ফোরিত হয় । মোট ৬ টি এসি বিস্ফোরিত হয়। এ ঘটনায় এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক শিশুসহ ২১ জনের। হাসপাতালে ভর্তি মুসল্লিদের শ্বাস নালীসহ পুড়ে গেছে শরীরের প্রায় ৩০-৫০ শতাংশ। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমার চাচাসহ যারা এ ঘটনায় মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের সকলের বেহেশত কবুল করুন। যারা অমানুষিক কষ্ট যন্ত্রণা ভোগ করছেন আল্লাহপাক তাদের সকলের কষ্ট লাঘব করে দিন। আমিন। হতাশা আর শুধু হতাশা।
সরকারকে সর্বোচ্চ ট্যাক্সদাতা দেশকয়েকের নাগরিকদের মধ্যে আমরাও এখন অবস্থান করছি। অথচ একটি পাবলিক প্লেস এবং ধর্মীয় স্থাপনার ত্রুটি সারাতেও ঘুষ দিতে হয় আমাদের। এরকম একটি দেশে না জন্মালেই হয়তো ভালো হতো। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :