সুব্রত বিশ্বাস: ২১ তোপের স্যালুট। পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় চিরবিদায় ‘ভারতরত্ন’ প্রণব মুখার্জিকে। দিল্লির লোধি রোড শ্মশানে অগ্নিস্পর্শে নশ্বর দেহ বিলীন হয়ে গেলো পঞ্চভূতে। হলো কোভিড প্রোটোকল মেনেই। রাতেই অস্থিভস্ম বিসর্জন করা হল হরিদ্বারের গঙ্গায়। অবসান হলো একটি যুগের। প্রণব মুখার্জি-লিভিং কম্পিউটার। তীক্ষè স্মৃতিশক্তি, অসম্ভব বুদ্ধি। অর্থনীতি, বিদেশনীতিতে অগাধ পাণ্ডিত্য। প্রণব মুখার্জি গ্রেট টিচার। আর এই শিক্ষকের সংস্পর্শে আসা, তাঁর সহযোগিতা, পরামর্শ, বকুনির একগুচ্ছ স্মৃতি থেকে যাবে চিরকাল।
প্রণববাবু শুধু ভারতের নেতা নন, বাংলাদেশেরও একজন নেতা বলে আমরা মনে করি। এমন প্রাজ্ঞ বিদগ্ধ মানুষ সহজে আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। সেই ভয়ঙ্কর ১৯৭৫-এর অগস্টের কথা। অভ্যুত্থানে বাবা-মা, ভাই, স্বজনদের হারিয়ে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে দিল্লিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন হাসিনা। সেই সময়ে অভিভাবকের মতো তাঁদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন প্রণববাবু। ইতিহাসের নানা ওঠাপড়ায় প্রণব ছিলেন বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গী, বন্ধুও। তার মৃত্যুতে বুধবার এক দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ সরকার। ওই দিন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা থাকবে অর্ধনমিত।
প্রধান নেতার নেতৃত্ব মেনে অসাম্প্রদায়িক শক্তির সঙ্গী অভিভাবকের মতো দিগ্দর্শন দিয়েছেন। দলের নিকট, এবং সর্বোপরি, মানুষের নিকট সত্যিকারের দায়বদ্ধতা থাকলেই এই নিঃস্পৃহতা এবং কর্মনিমগ্নতা সম্ভব। ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ তাঁর মজ্জাগত উত্তরাধিকার। অসাম্প্রদায়িকতা, মানবতা ও ধর্মনিরপেক্ষতাই ভারত-বাংলাদেশে সম্পর্কের প্রকৃত মেলবন্ধন হওয়া উচিত-এমন মনে করতেন প্রণব মুখার্জি। ফেসবুক থেকে