ডেস্ক রিপোর্ট : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতর— স্বাস্থ্য খাতের দায়িত্বশীল এই দুইটি সংস্থার বিরুদ্ধেই ‘চুরি-চামারি’সহ সব ধরনের অভিযোগ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ। ফলে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন কিনতে হলে সেখানেও ‘চুরি-চামারি’ হতে পারে বলে আশঙ্কা তার। শনিবার (২৯ আগস্ট) রাতে ডা. আবদুল্লাহ একটি অনলাইন গণমাধ্যমকে এসব কথা বলেন।
ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ভ্যাকসিন আনলে যেন হ-য-ব-র-ল অবস্থা না হয়। কারণ অমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের অবস্থা লণ্ডভণ্ড। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। অযোগ্যতা, অদক্ষতা, সমন্বয়হীনতা, চুরি-চামারি— এমন কোনো অভিযোগ নেই, যা এদের বিরুদ্ধে নেই। দেখা যাবে, ভ্যাকসিন টাকা দিয়ে কিনতে হলে সেখানেও চুরি-চামারি হবে। তাই দেশে ভ্যাকসিন এলে তারা নিজেদের দক্ষতা প্রমাণ করতে পারে। এটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের জন্য নতুন একটা সুযোগ হবে।
ভার্চুয়াল আলোচনায় যোগ দিয়ে ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, ভ্যাকসিন আনতে টাকা-পয়সা না লাগলেই সবচেয়ে ভালো। টাকা-পয়সা লাগলে আবার চুরি-চামারি করবে। এক টাকা দিয়ে এক কোটি টাকা বিল করবে। এই কাজগুলোই করবে, আমাদের তো এই স্বভার রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেন আর স্বাস্থ্য অধিদফতর বলেন, কেউ ভালোভাবে কাজ করতে চায় না। তারা কেবল ঘরে বসে সুন্দর সুন্দর কথা বলে। রোগী দেখি আমরা (ডাক্তার), পরিস্থিতি মোকাবেলা করি আমরা। তারা ঘরে বসে সুন্দর সুন্দর কথা বলতেই পারেন। কিন্তু প্রাকটিক্যালি কেউ সুন্দর সুন্দর কাজ করেন না।
তিনি বলেন, ভ্যাকসিন এলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের জন্য একটি সুযোগ হতে পারে। তারা মানুষকে দেখিয়ে দিতে পারে যে তাদের দক্ষতা রয়েছে। সেজন্য তাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে, ভ্যাকসিন এলে তারা কী কী করবে। ভ্যাকসিন কিভাবে সংরক্ষণ করবে, কোথায় রাখবে, কাদের অগে দেওয়া হবে, কিভাবে দেওয়া হবে— এসব বিষয়ে এখনই কাজ করতে হবে। তা না হলে ভ্যাকসিন এনে কোথায় রাখবে, কিভাবে রাখবে— সেসব নিয়েই সমস্যা তৈরি করবে।
বর্ষীয়ান এই চিকিৎসক বলেন, চীনের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে বলে গেছে করোনা ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত ট্রায়াল তারা বাংলাদেশে দেবে। সরকারও তার অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদন দিতে কিছুটা দেরি হলেও আমি এটাকে স্বাগত জানাই। কারণ এটি ভালো উদ্যোগ। বাংলাদেশে ট্রায়াল হয়ে কয়েক হাজার লোক এতে যুক্ত হবে। আমরা জানতে পারব, ভ্যাকসিনে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কি না কিংবা এটি কতটা কার্যকর। আবার চীনের টিমের সঙ্গে আমাদের কিছু টেকশিয়ান ও সহযোগী থাকবে। এতে করে বাংলাদেশ অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে।
ডা. আব্দুল্লাহ আরও বলেন, অন্য যারা ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে, তারাও যদি চূড়ান্ত পর্যায়ে ট্রায়ালের সুযোগ চায়, সেই সুযোগ দেওয়া যেতে পারে। তাতে করে আমরাও যাচাই-বাছাই করে দেখার সুযোগ পাব। যে ভ্যাকসিনটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ও দামে কম হবে— আমরা সেটাই বেছে নেব। চীন দিলে তাদেরটাই নিতে হবে, এমন কোনো কথা না। জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় নিয়ে, জনগণের ক্রয়ক্ষমতার কথা বিবেচনায় নিয়ে সবচেয়ে ভালো ভ্যাকসিন যেটি হবে, সেটিই অমাদের গ্রহণ করতে হবে।
সূত্র- সারাবংলা
আপনার মতামত লিখুন :