শিরোনাম
◈ ব্যাংককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ◈ অবশেষে মার্কিন সিনেটে সাড়ে ৯ হাজার কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজ পাস ◈ কক্সবাজারে ঈদ স্পেশাল ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল চলাচল বন্ধ ◈ ইউক্রেনকে এবার ব্রিটেননের ৬১৭ মিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তা ◈ থাইল্যান্ডের উদ্দেশ্য রওনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ◈ লোডশেডিং ১০০০ মেগাওয়াট ছাড়িয়েছে, চাপ পড়ছে গ্রামে ◈ এফডিসিতে মারামারির ঘটনায় ডিপজল-মিশার দুঃখ প্রকাশ ◈ প্রথম ৯ মাসে রাজস্ব আয়ে ১৫.২৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন ◈ প্রথম ধাপে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাত চেয়ারম্যানসহ ২৬ জন নির্বাচিত ◈ বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কাতারের বিনিয়োগ আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত : ২৭ আগস্ট, ২০২০, ১০:৫৫ দুপুর
আপডেট : ২৭ আগস্ট, ২০২০, ১০:৫৫ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পোশাক কর্মীদের এক-তৃতীয়াংশই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী

ডেস্ক রিপোর্ট : পোশাক কর্মীদের এক-তৃতীয়াংশই পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা মাইক্রোফিন্যান্স অপরচুনিটিজের (এমএফও) সাম্প্রতিক এক জরিপের তথ্য বলছে, শ্রমিকদের মধ্যে শতকরা ৩৪ শতাংশ তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সানেম।

এমএফও ও সানেমের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের ওপর চলমান এ জরিপের সর্বশেষ সংগৃহীত উপাত্তে দেখা গেছে, জরিপে অংশ নেয়া নারীদের মধ্যে ২৬ শতাংশ ও পুরুষের ৬০ শতাংশ জানিয়েছেন যে তারাই তাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। অন্যদিকে জরিপে অংশগ্রহণকারী শ্রমিকদের মধ্যে ৬৬ শতাংশ জানিয়েছেন যে তাদের পরিবারে তারা ছাড়াও আরো অন্তত একজন উপার্জনকারী রয়েছেন।

বাংলাদেশের গার্মেন্ট শ্রমিকদের জীবন ও জীবিকার ওপর কভিড-১৯ মহামারীর প্রভাব মূল্যায়ন করতে সানেম ও এমএফও ১৫ সপ্তাহ ধরে ১৩৬৭ জন শ্রমিকের ওপর ধারাবাহিকভাবে জরিপ চালিয়ে আসছে।

সানেম জানিয়েছে, এ সিরিজ জরিপে প্রতি সপ্তাহে নতুন প্রশ্ন যোগ করা হয়। প্রতি সপ্তাহে একই অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে এ জরিপ চালানো হয়, তবে অংশগ্রহণকারীদের সংখ্যা সামান্য পরিবর্তিত হয়। জরিপে অংশ নেয়া শ্রমিকরা চট্টগ্রাম, ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ ও সাভারের বিভিন্ন কারখানায় কর্মরত আছেন; অংশগ্রহণকারীদের তিন-চতুর্থাংশ নারী, যেটি পুরো গার্মেন্টস খাতের প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

অন্তত আরো একজন উপার্জনকারী আছেন বলে জানানো ৬৮ শতাংশ শ্রমিককে তাদের পরিবারের ওই উপার্জনকারীর আয়, চাকরি এবং মার্চ থেকে জুনের কর্মঘণ্টা সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়। তাদের মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশ এসব ব্যাপারে তথ্য দেয়ার জন্য তাদের পরিবারের অন্য উপার্জনকারীদের সম্মতি লাভ করেন। উপার্জনকারীদের উপাত্ত অনুযায়ী ৯১ শতাংশের পরিবারে আরো একজন উপার্জনকারী আছেন। প্রায় ৯ শতাংশের পরিবারে আরো দুজন উপার্জনকারী আছেন। ১ শতাংশের কম পরিবারে তিন বা তারও বেশি উপার্জনকারী আছেন। এসব তথ্য জুলাইয়ে সংগ্রহ করা হয়।

জরিপে অংশগ্রহণকারীদের তাদের পরিবারের অন্য উপার্জনকারীদের জুলাইয়ের মজুরি ও শ্রমঘণ্টা সম্পর্কে করা প্রশ্নের ফলাফলের ওপর একটি ব্লগ প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চ থেকে জুনের প্রবণতা জুলাইয়েও অব্যাহত ছিল। অর্থাৎ বেকারত্ব কমেছে, শ্রমঘণ্টা বেড়েছে এবং নারী-পুরুষের আয়ের মধ্যে ফারাক কমেছে।

জুলাইয়ে দেখা গেছে পরিবারের অন্য উপার্জনকারীদের ৯৬ শতাংশ কাজে গেছেন, জুনে যা ছিল ৯৪ শতাংশ। নারী-পুরুষের মধ্যে এক্ষেত্রে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। পরিবারের অন্য উপার্জনকারীদের এ সময়ে গড়ে ২৩৯ ঘণ্টা কাজ করতে হয়েছে (জুনে ছিল ২৩৪ ঘণ্টা)। এক্ষেত্রেও নারী-পুরুষের মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখা যায়নি। এ সময় পরিবারের অন্য উপার্জনকারীদের গড় আয় ১০ হাজার টাকা, যা জুনে ছিল ৯ হাজার টাকা। তাদের মধ্যে নারীদের গড় আয় ১০ হাজার আর পুরুষদের গড় আয় ৯ হাজার টাকা।

জুলাইয়ে পরিবারের অন্য উপার্জনকারীরা মূলত বলেছেন যে তারা ‘গার্মেন্টস শ্রমিক’; পরিবারে বাকি উপার্জনকারীদের মধ্যে ৫১ শতাংশ গার্মেন্টস খাতে কাজ করেন, যা জুনে ছিল ৪২ শতাংশ। পরিবারের বাড়তি উপার্জনকারী নারীদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ গার্মেন্টস খাতে কাজ করেন, যেটি পুরুষদের ক্ষেত্রে ৪২ শতাংশ।

অন্য আরো কোনো কাজ করা হয় কিনা, এমন প্রশ্নে উত্তরদাতা নারীরা শুধু অন্যান্য কাজ করেন বলেছেন। অন্যদিকে পুরুষরা অন্যান্য কাজের সঙ্গে ড্রাইভার, কাঠমিস্ত্রি, সেলসম্যান, দোকান কর্মচারী, রিকশাওয়ালা এবং নিরাপত্তা প্রহরীর চাকরির কথাও উল্লেখ করেছেন।

সানেম এবং এমএফওর যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত এ জরিপগুলো ‘গার্মেন্ট ওয়ার্কার ডায়েরিজ’ শীর্ষক প্রকল্পের অংশ। এ প্রকল্পের মাধ্যমে বৈশ্বিক পোশাক সরবরাহ ও উৎপাদক দেশগুলোতে নিয়োজিত শ্রমিকদের শ্রমঘণ্টা, আয়, ব্যয় এবং অন্যান্য আর্থিক ব্যবস্থাপনা নিয়ে নিয়মিত, নির্ভরযোগ্য তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। এ প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ওপর ভিত্তি করে সরকারি নীতি, শ্রমিকদের দাবি-দাওয়া আদায় এবং কারখানা ও ব্র্যান্ডের মাধ্যমে পোশাক শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত করা।

২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা মাইক্রোফিন্যান্স অপরচুনিটিজের উদ্যোগে শুরু হওয়া প্রকল্পটি বাংলাদেশ, ভারত ও কম্বোডিয়ার গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে পাঁচটি উৎপাদক দেশের শ্রমিকদের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা ও সেগুলো প্রকাশ করা। এ তথ্য-উপাত্ত বৈশ্বিক সরবরাহ ধারায় স্বচ্ছতা নিয়ে আসবে বলে আশা গবেষকদের।বণিক বার্তা

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়