বিশ্বজিৎ দত্ত: নীল শাড়িতে সাইকেল চালিয়ে আসতেন ব্র্যাকের সাইকেল আপা। এক চিমটে নুন আর এক মুঠো গুড়। কলেরায় উজার হয়ে যাওয়া মানুষকে বাঁচাতে এইতো ছিল দাওয়াই। সেদিন কি বিষ্ময়ে সাইকেল বালিকাদের দেখতো বাংলাদেশ। সেদিনও সমাজের দোহাই ছিল। বন্ধ করুন সাইকেল বাজি। তবু বালিকারা থেমে থাকেনি। এখন ডায়রিয়া মুক্ত বাংলাদেশ। কবি মুজিব মেহেদীর একটি কবিতা ছিল সাইকেল বালিকাদের নিয়ে। এখন মনে নেই। কবিকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিব।
শাহনাজ পুতুল ওবারের মোটর সাইকেল চালান।দুটি মেয়েকে পড়াশুনা করান নিজের স্কুটি চালিয়ে। ছিনতাই হয়ে যায় স্কুটিটি। পুলিশ উদ্ধার করে দিয়েছিল স্কুটিটিকে। পুতুলের মেয়েরা এখন খেতে পারে স্কুলে যায় নিয়মিত।
যশোহরের মেয়ে ফারহানা আফরোজ নিজের আনন্দে মোটর সাইকেল চালিয়েছে। বিয়ের আনন্দ। কি সুন্দর করে সেজেছে। একটি সুন্দর আনন্দকে কত সমালোচনা। মনটা বিষাদে ভরে গেছে মেয়েটির। মোবাইল বন্ধ করে রেখেছে। তাকে বলা হলো না, আমার মেয়েটি যখন বিয়ে করতে যাবে আমি তাকে মোটর সাইকেল দিব। গতিইতো আনন্দ। গতি মানেইতো প্রগতি।
তামাবিল সীমান্তে পরিচয় দুটি সাইকেল বালিকার সঙ্গে। দুজনে ঢাকা থেকে সাইকেল চালিয়ে এসেছে শীলং যাবে। দূরপাহাড়ের শিখরে সাইকেল চালাবে। ওরা বলছিল ওখানে বৃষ্টি নামে। সারা পাহাড় বৃষ্টিতে ভিজে ভিজে সাইকেল চালাবো। ফেরার পথে আবার দেখা হয়েছিল ডাউকিতে। বলল খুব মজা করে ঘুরেছে পাহাড়। অবাক হয়েছিলাম ওরকম খাড়া রাস্তায় কি করে সাইকেল চালায় ওরা। বললো কষ্টও কম নয়। পা দেখিয়ে বলেছিল, দেখ কত ফোসকা পড়েছে।
পুলিশ অফিসার বন্ধু রাগ করে আমার স্ত্রী কনিকাকে বলেছে, ফারহানা কেন আবহমান লাজুক নববধুর সংস্কৃতিকে ভাংলো বৌদি? কনিকা লিখেছে কোথায় ভেংগেছে। ওতো সংস্কৃতিকে গতীতে নিয়ে গেছে। ঠিক এক চিমটে লবণ আর একমুঠো গুড়ের মতো। জানি না কবে যে বাংলাদেশ জড়তা মুক্ত হবে। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :