শামিউল হক, তাড়াশ প্রতিনিধি : [২] সিরাজগঞ্জের তাড়াশে নেশার টাকার জন্য স্ত্রীর পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি স্বামীর নামে লিখে না দেয়ায় নাসিমা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধূকে নির্মমভাবে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে মাদকাসক্ত স্বামী বিরুদ্ধে। গৃহবধূর অভিযোগ, স্বামীর নির্যাতন করে তার দুটি দাঁত ভেঙ্গে দিয়েছে। এছাড়া সারা শরীর ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করার পাশাপাশি সিগারেটের আগুন দিয়ে ছ্যাকাও দেয়া হয়েছে শরীরের বিভিন্ন স্থানে।
[৩] এ ঘটনার পর নাসিমার প্রতিবেশীরা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে তাড়াশ উপজেলা ৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে সেখানে তার অবস্থার আরো অবনতি হলে সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই গৃহবধূ সেখানেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।
[৪] পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, তাড়াশ সদর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের মো. মজিবর হোসেনের মেয়ে নাসিমা খাতুনের ১৪ বছর আগে বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী দক্ষিণ মথুরাপুর গ্রামের জামাল মোল্লার ছেলে মমতাজ আলীর সাথে। তাদের সংসারে ১০ বছরের ছেলে ও ৭ বছর বয়সী মেয়ে রয়েছে।
[৫] বিয়ের পর নাসিমা খাতুনের বাবা-মা মারা যাওয়ার পর সে পৈত্রিক সূত্রে এক বিঘা জমির মালিক হন। তবে নাসিমার স্বামী মাদকাসক্ত হওয়ায় বিভিন্ন সময়ে স্ত্রীর ওই একবিঘা জমি তার স্বামীর নামে লিখে দেয়ার জন্য চাপ দেয় ও শারিরীকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। ফলে নিরুপায় হয়ে এক পর্যায়ে সে দুই সন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন।
[৬] প্রতিবেশীরা আরো জানান, গত শনিবার রাতে নাসিমার স্বামী বোয়ালিয়া গ্রামে নাসিমার বাবার বাড়িতে এসে জমি লিখে দেয়ার জন্য চাপ দিলে তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। এর এক পর্যায়ে মমতাজ উদ্দিন ঘুষি মেরে নাসিমার দুটি দাঁত ভেঙ্গে দেয়, চাকু দিয়ে আঘাত করে শরীর বিভিন্ন স্থানে। মুখে কাপড় গুজে দিয়ে সিগারেটের আগুনের ছ্যাকা দেয়। এ সময় বাচ্চাদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এলে মমতাজ উদ্দিন পালিয়ে যায়।
[৭] চিকিৎসাধীন নাসিমা খাতুন জানান, তার স্বামী একজন মাদকাসক্ত। নেশার টাকার জন্যই তার উপড় এ ধরনের নির্যাতন প্রায়ই চালিয়ে আসছেন। আর চিকিৎসা শেষে তার স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন। অপরদিকে, মমতাজ উদ্দিন পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
[৮] তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. জামাল মিয়া বলেন, নাসিমাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তার শরীরে যে ধরণের আঘাত রয়েছে তার জন্য উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
[৯] তাড়াশ থানার ওসি মো. মাহবুল আলম বলেন, ভিকটিমের আগে চিকিৎসা দরকার। বিধায় তাকে চিকিৎসা নিতে বলেছি। মামলা করলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। সম্পাদনা : হ্যাপি
আপনার মতামত লিখুন :