মো. আখতারুজ্জামান: [২] বেসরকারী বিনিয়োগ ও শিল্প বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, হ্রাসকৃত করের হার বিনিয়োগকারীদের নতুন বিনিয়োগে উদ্ভুদ্ধ করে। তবে আমাদের দেশে কর-জিডিপি’র আনুপাতিক হার এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সর্বনি¤œ। করদাতাদের উপর করের বোঝা না বাড়িয়ে নতুন করদাতা খুঁজতে হবে।
[৩] তিনি বলেন, সরকার নীতি সংষ্কারের উপর নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে নীতি সংষ্কারের এ উদ্যোগ দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে ইতোমধ্যেই, বিনিয়োগ আকর্ষণে সংষ্কারের মানসিকতা সকলের মাঝে চলে এসেছে। তবে এ বোধদয় মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
[৪] উপদেষ্টা বলেন, আগামী বছরের মধ্যে বৈশি^ক ব্যবসা পরিচালনার সূচকে বাংলাদেশ ডাবল ডিজিট উন্নীত হবে। খুব শীঘ্রই খেলাপী আইন ও কোম্পানী আইনে প্রয়োজনীয় সংষ্কার আনা হবে। অন্যান্য দেশের সাথে সামঞ্জস্য রেখে কর কাঠামাকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ খাত বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশের অন্যতম সম্ভাবনাময়। শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
[৫] ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, গ্যাস ও পেট্রোলিয়াম খাতে বাংলাদেশে সর্বচ্চো ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ আকর্ষণ করেছে। যেখানে মার্কিন বিনিয়োগের পরিমাণ ৩.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। কোভিড-১৯ এর কারণে ২০২০ সালে বৈশি^ক বিনিয়োগ ৪০% কমে, ১.৫৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার হতে ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের এসে দাঁড়াতে পারে।
[৬] ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, স্থানীয় উদ্যোক্তাদের আরো শক্তিশালী কার উপর গুরুত্ব দিতে হবে। বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম দ্রুততম সময়ে বাস্তবায়ন, সরকারি বেসরকারি যোগাযোগ বাড়ানো, স্থানান্তরিত বিনিয়োগ আকর্ষণে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, রপ্তানির পণ্যের বহুমুখীকরণ এবং বাজার সম্প্রসারণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
[৭] বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, এসইজেড অঞ্চলেখাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত খাতে বিনিয়োগ করলে উদ্যোক্তারা ২০% ক্যাশ ইনশিয়েটিভ পাবে। তিনি বলেন, মোটরসাইকেল নিবন্ধন ফি কমে ১০%-এর নীচে আানা হবে। তিনি বেজা, বিডা এবং হাইটেক পার্ক প্রভৃতি কর্তৃপক্ষের আরো ক্ষমতায়নের আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি নীতিমালার সংষ্কার এবং বন্দরের সক্ষমতা বাড়ানো একান্ত প্রয়োজন।
[৮] নতুন নতুন বন্দর স্থাপনএবং বন্দরগুলোর সক্ষমতা বাড়ান প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সকলের মানসিকতা পরিবর্তনের আহŸান জানান তিনি।
[৯] বাংলাদেশস্থ জাপান দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ইতো নায়োকি বলেন, জাপানী বিনিয়োগকারীর বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী এবং ২০১৯ সালে এশিয়াতে জাপানী বিনিয়োগ ছিল ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যেখানে বাংলাদেশে ০.০৯% জাপানীজ বিনিয়োগ এসেছে। তিনি বলেন, বঙ্গোপসাগর ভিত্তিক অর্থনীতি এবং এশিায় অঞ্চলে আঞ্চলিক যোগাযোগ স্থাপনে জাপানের পক্ষ হতে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
[১০] বাংলাদেশস্থ মার্কিন দূতাবাসের ডেপুটি চীফ অফ মিশন জোঅ্যান ওয়াগনার বলেন, বাংলাদেশের গ্যাস, বিদ্যুৎ ও জ¦ালানী খাতে আমেরিকান কোম্পানীগুলোর বিনিয়োগ রয়েছে। কোভিড-১৯ এর কারণে ডিজিটাল অর্থনীতি নতুন সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
[১১] তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ, বায়ো টেকনোলোজি প্রভৃতি খাতে বিনিয়োগে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে, যেখানে বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে কাজ করতে পারে।
[১২] বিল্ড-এর চেয়ারম্যান আবুল কাসেম খান বলেন, সম্প্রতি চীনের বাজারে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্ক ও কোটা মুক্ত সুবিধা প্রবেশাধিকারের বিষয়টি আমাদের জন্য একটি বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। এ সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমেবৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষনে দ্রæততম সময়ে কার্যকর নীতিমালা প্রণয়ন ও তার বাস্তাবয়ন খুবই জরুরী।
আপনার মতামত লিখুন :