মো. আখতারুজ্জামান: [২] করোনার প্রভাবে দেশের প্রত্যেকটি শিল্পখাত ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ সময়ে আশার আলো জাগিয়েছে কাগজের তৈরি কাপ শিল্প। বর্তমানে করোনার সংক্রমণ রোধে দেশের সাধারণ মানুষের অভ্যাস পরিবর্তনের ফলে পেপার কাপের বাজার বড় হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। তবে হতাশার কথাও জানিয়েছেন তারা। কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, করোনাকালিন ৮-২২ জুলাই এই ১৪ দিনে ভারতে থেকে ৫ কোটি পেপার কাপ এসেছে। সেই হিসেবে প্রতি সপ্তাহে আড়াই কোটি কাপ এসেছে। করোনাকালে আমদানী করা প্লাস্টিকের কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ওয়ানটাইম কাপের দাম বেড়ে গেছে। আর এই জায়গাটা দখল করেছে কাগজের তৈরি কাপ। এটাকে কাজে লাগাচ্ছে প্রতিবেশি দেশ ভারতের কিছু ব্যবসায়ী। তাদের পেপার কাপ বাংলাদেশের কাপের তুলনায় দাম কম হওয়া তারা এই সুবিধাটা নিচ্ছে।
ভারতের তুলনায় আমাদের দেশের পেপার কাপের দাম বেশি কেন এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমাদের তৈরি পেপার কাপের দাম বাড়ার মূল কারণ কাঁচামালে অসামঞ্জস্যমূলক শুল্ক। আন্তর্জাতিক বাজারে পেপার কাপের কাঁচামালের মূল্য প্রতি কেজি ১.৫ মার্কিন ডলার। এর সঙ্গে যোগ হয় ২৫ শতাংশ শুল্ক ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট। ফলে দাম অন্য দেশের তুলনায় বেশি। প্রতিবেশি দেশের তৈরি কাপের দাম কম হওয়ার কারণ তাদের কাঁচামাল আমদানি শুল্ক মুক্ত। ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের তথ্য মতে দেশে বর্তমানে প্রতি মাসে ২০ কোটি পেপার কাপের চাহিদা রয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্লাস্টিকে তৈরি ওয়ানটাইম পণ্যে ব্যবহার বন্ধের বিষয়ে একটি বিধিনিষেধ রয়েছে। এটা কার্যকর হলে দেশে পেপার কাপের বাজার আরও বড় হবে বলেও তথ্য দিয়েছে সংগঠনটি। বর্তমানে দেশীয় ৩০টি কারখানা থেকে প্রতি মাসে ৫ কোটি কাপ তৈরি হয়ে থাকে।
[৩] ব্যবসায়ীরা জানান, এনবিআরের ধার্যকৃত কাপ প্লেট পণ্যের কাঁচামাল আমদানির শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ ও ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয় তাহলে সম্ভাবনাময় এই শিল্পকে স¤প্রসারণের মাধ্যমে একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা সম্ভব। বর্তমান বিশ্বে পেপার কাপ পণ্যের বাজার প্রায় ২৮০ বিলিয়ন ডলার। যা আমাদের দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে। কাগজের কাপের বিশ্বব্যাপী একটি বড় বাজার রয়েছে।
[৪] জানা যায়, গত ২১ জুলাই পেপার কাপ ম্যানুফ্যাকচারার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এনবিআরে কাগজের কাপ প্লেট আমদানীর ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন মূল্য কেজি প্রতি ৩.৫ ডলার করার অনুরোধ করেন। যা বর্তমানে দেড় ডলার নির্ধারিত রয়েছে। পেপার কাপ ম্যানুফেকচারার অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের সভাপতি কাজী সাজিদুর রহমান এই প্রতিবেদককে জানান, ভারত থেকে আমদানী করা নন ফুড গ্রেড পেপার কাপ প্রতি কেজি ১.৫ ডলারে আমদানি করা হচ্ছে। তারা এসব পেপার কাপ ব্যবহার করা কাগজ দিয়ে তৈরি করে থাকে। এসব পেপার কাপ কোনো ধরনের মান পরীক্ষা ছাড়াই বাংলাদেশে আসে। ফলে এটা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
আপনার মতামত লিখুন :