শিরোনাম
◈ রিটার্ন না দেওয়া টিআইএনধারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের নির্দেশ ◈ সকালে উঠেই এক লিটার পানি পান: কতটা উপকারী? বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন? ◈ তারেক-জুবাইদার দুর্নীতির মামলায় ‘ত্রুটিপূর্ণ বিচার’, পূর্ণাঙ্গ রায়ে খালাস হাইকোর্টে ◈ বাবা-মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করা সেই তরুণীকে নিয়ে যা বললেন আহমাদুল্লাহ (ভিডিও) ◈ জুলাই স্মরণে ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে ফের প্রকম্পিত ঢাবি (ভিডিও) ◈ পর্যাপ্ত অর্থ ও হোটেল বুকিং না থাকায় কুয়ালালামপুর বিমানবন্দরে ৯৬ বাংলাদেশি আটক ◈ বাড়ির নিচতলায় গ্যারেজে বসে চোখের পানি ফেলছেন, ছেলের বিরুদ্ধে মাকে বাড়িতে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগ ◈ ইংল‌্যা‌ন্ডের লর্ডসে ডুবলো ভার‌তের রণতরী, সিরিজে এ‌গি‌য়ে গে‌লো ইং‌রেজরা ◈ কানাডার টরন্টো শহরে ইসকনের রথযাত্রায় ডিম নিক্ষেপ, ঘটনায় ভারতের গভীর উদ্বেগ (ভিডিও) ◈ একটি দল লম্বা লম্বা কথা বলা ছাড়া সুকৌশলে চাঁদা ও হাদিয়া নেওয়া ছাড়া কোনো কাজ করে না: মির্জা আব্বাস

প্রকাশিত : ১৬ আগস্ট, ২০২০, ০৮:০২ সকাল
আপডেট : ১৬ আগস্ট, ২০২০, ০৮:০২ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

মোহাম্মদ এ আরাফাত: বঙ্গবন্ধু, ‘জয় বাংলা’ ও ‘বাংলাদেশ’ সমার্থক

মোহাম্মদ এ আরাফাত: আমি আসলে লেখক নই। কিন্তু আমি লিখি। দেশ, সমাজ ও রাজনীতির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমার বক্তব্য আছে। আমি সে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলতে চাই। কথা বলতে বলতে কখনো কখনো লিখেও ফেলি। রাজনীতি নিয়ে আমার সুস্পষ্ট অবস্থান আছে। রাজনীতির প্রশ্নে আমি নিরপেক্ষ নই। তবে আমি বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাস করি। জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে যখন দেখি অসত্য বা অর্ধ-সত্য প্রচারণা হয়, অপপ্রচার হয়, সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়, তখন আমি অসত্যের বিপক্ষে সত্যটা বলার জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠি। তখন আমি লিখেও ফেলি।

আমার লেখা অনেকের কাছে একপেশে মনে হতে পারে। তবে সত্য তো একপেশেই হয়। সত্য তো, তথাকথিত ‘নিরপেক্ষ’ হয় না। আমি সত্য আর মিথ্যার মধ্যে মাঝখান দিয়ে হাঁটার মানুষ নই। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পক্ষের লোক। স্বাধীন বাংলাদেশের বুকে ‘বঙ্গবন্ধু’র থেকে আর বড় কী ‘সত্য’ আছে? আমি ‘জয় বাংলা’র পক্ষের লোক। আমি ‘জয় বাংলা’ এবং ‘জিন্দাবাদ’-এর মাঝখানে নিরপেক্ষ নই। আমার সুস্পষ্ট একটা পক্ষ আছে। আমার কাছে ‘জয় বাংলা’ শুধু একটি স্লোগান নয়, ‘জয় বাংলা’ মানে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ। ‘জয় বাংলা’ মানে মুক্তির লড়াই, ‘জয় বাংলা’ মানে স্বাধীনতা। ‘জয় বাংলা’ মানে গণতন্ত্র। ‘জয় বাংলা’ মানে অসাম্প্রদায়িকতা। ‘জয় বাংলা’ মানে আইনের শাসন। ‘জয় বাংলা’ মানে ‘সুশাসন’। ‘জয় বাংলা’ মানে ভাত ও ভোটের অধিকার। ‘জয় বাংলা’ মানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। ‘জয় বাংলা’ মানে কুসংস্কারমুক্ত বিজ্ঞানভিত্তিক সমাজ। ‘জয় বাংলা’ মানে আধুনিকতা, সংস্কারকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাওয়া। ‘জয় বাংলা’ মানে প্রগতিশীলতা, ‘জয় বাংলা’ মানে উদারনৈতিকতা। ‘জয় বাংলা’ মানে দারিদ্র্য বিমোচন, ‘জয় বাংলা’ মানে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। ‘জয় বাংলা’ মানে অসত্য ও মিথ্যা অপপ্রচারের বিপক্ষে সত্যের লড়াই।
এই ‘জয় বাংলা’র প্রবক্তা এবং সবচেয়ে বড় ধারক-বাহক ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ‘জয় বাংলা’ এবং ‘বঙ্গবন্ধু’ হয়ে উঠেছিলেন সমার্থক। ‘জয় বাংলা’কে তথা বঙ্গবন্ধুকে খণ্ডিতভাবে ধারণ করার কোনো সুযোগ নেই। এই ‘জয় বাংলা’কেই যখন হত্যা করা হলো বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করার মধ্য দিয়ে, তখনই বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়লো। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড কোনো ব্যক্তিবিশেষের হত্যাকাণ্ড ছিল না, এটি ছিল ‘জয় বাংলা’কে সমূলে উৎপাটন করার ষড়যন্ত্র।

একটি অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, দারিদ্রমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, আইনের শাসন এবং সুশাসনের দ্বারা পরিচালিত, বিজ্ঞানভিত্তিক আধুনিক বাংলাদেশ গড়াই ছিল বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও লক্ষ্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে মুক্তিযুদ্ধের সেই আদর্শ-লক্ষ্য থেকেই বাংলাদেশকে বিচ্যুত করা হয়েছিল। ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে দীর্ঘ ২১ বছর বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে উল্টোপথে চালিত করা হয়েছিল। ইতিহাস বিকৃত করে রাষ্ট্রীয় অর্থ পুঁজি হিসেবে বিনিয়োগ করে প্রজন্মের পর প্রজন্মের মনন ধ্বংস করা হয়েছিল। পাকপন্থী গোষ্ঠী এবং সাম্রাজ্যবাদী অপশক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অপব্যবহার করে এবং বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করে বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে। তাদের একটাই উদ্দেশ্য ছিল, আর তা হলো বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা এবং বাংলাদেশকে মিনি পাকিস্তান বানানো।

দীর্ঘ ২১ বছর এবং পরবর্তী সময়ে ২০০১-০৬ এ ৫ বছর, মোট ২৬ বছর ধরে বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বিপরীতে চলিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বিপরীতে এবং ‘জয় বাংলা’র উল্টো দিকে চালিত করা হয়েছে।

এই ‘জয় বাংলা’কে পুনঃপ্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে আমি, আমার অবস্থান সুনির্দিষ্ট করে নিয়েছি। আমি এও বুঝেছি যে স্বল্পমেয়াদে ‘জয় বাংলা’কে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো সম্ভব নয়। কারণ ‘জয় বাংলা’ বিরোধী রাজনৈতিক অপশক্তি ৭৫ পরবর্তী সময়ে তাদের শিকড় আমাদের সমাজে অনেক গভীরে প্রোথিত করেছে এবং এখনো তারা বিভিন্ন পর্যায়ে শক্তভাবে ক্রিয়াশীল আছে। দীর্ঘমেয়াদে যথেষ্ট ধৈর্য ধারণের মধ্য দিয়ে সুকৌশলে ‘জয় বাংলা’র শত্রুদের মোকাবেলা করে ধীরে ধীরে ‘জয় বাংলা’কে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আবার ‘জয় বাংলা’ বলতে আমরা যা যা বুঝি তার সবকিছুই এক ধাক্কায়ই প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব নয়। ধাপে ধাপে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা ‘জয় বাংলা’কে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। গত ১১ বছর ধরে বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে সেই প্রচেষ্টাই চলছে। আমার সকল প্রচেষ্টাই ছিল ‘জয় বাংলা’কে পুনঃপ্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বকে সমর্থন জুগিয়ে যাওয়া। যে কারণে আমি স্বল্পমেয়াদের কোনো অসঙ্গতি, বিচ্যুতি সেগুলো নিয়ে সময় ব্যয় করিনি। আমার লক্ষ্যই ছিল দীর্ঘমেয়াদে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা ‘জয় বাংলা’ প্রতিষ্ঠায় মনোনিবেশ করা। সামগ্রিক অর্থে ‘জয় বাংলা’র অর্থ যদি আপনি বুঝে থাকেন, তাহলে আপনি বুঝবেন দীর্ঘমেয়াদে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়ন তথা ‘জয় বাংলা’কে প্রতিষ্ঠা করতে পারলে আমাদের সব সমস্যার সমাধানই হয়ে যাবে।
লেখক : চেয়ারম্যান, সুচিন্তা ফাউন্ডেশন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়