ইমরুল শাহেদ : পরিবর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে বদলে গেছে নাট্য জগতের চিত্রও। আগে চ্যানেলের অনুমোদন না নিয়ে নাটক নির্মাণ করা হলে সেটা পড়ে থাকত। এখন পড়ে না থেকে ইউটিউবে প্রচার হয়ে যায়। এমন কি কোনো কোনো ইউটিউব চ্যানেল চলচ্চিত্র প্রযোজনায়ও আসছে। নাটকগুলো পড়ে থাকার নেপথ্যে আরো কিছু কারণ ছিল। চ্যানেলগুলো বলে দিত কোন কোন শিল্পীকে নিয়ে নাটক বানাতে হবে। সে নিয়ম এখনো প্রচলিত আছে। কিন্তু তাতে কোনো নির্মাতার কিছু এসে যায় না।
এখন কোনো নির্মাতা টিভি চ্যানেলের জন্য বসে থাকেন না কেউ। তাদের নির্মিত নাটকগুলো ইউটিউবে রিলিজ করার পর সেগুলো নিজ গুণেই ভিউয়ার্স টানছে। এভাবে ইউটিউব যদি সক্রিয় থাকে তাহলে সেটা হবে টিভি চ্যানেলগুলোর জন্য অশনি সংকেত। প্রশ্ন হচ্ছে, চ্যানেলগুলোর নিজস্ব পছন্দের শিল্পীর বিষয়টির নেপথ্যে কি রয়েছে। কেন এমনটা হয় এবং এই পরিস্থিতি বজায় থাকলে কিভাবে তারকা তৈরি হবে।
একজন নাটক নির্মাতা বলেছেন, নেপথ্যের রহস্য অনেক নিগূঢ়। সেটা সন্ধান করলেই জানা যাবে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে নাটক ব্যবসায়ী কিছু সংস্থাও। বেশ কিছু সংস্থা বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ঠিকা নিয়ে রেখেছে। তারা নিয়ন্ত্রণ করে বিজ্ঞাপন এবং স্পনসর। বিজ্ঞাপন নির্মাতা, বিজ্ঞাপন দাতা ও স্পনসরদের কিছু চাওয়া-পাওয়া থাকে। সেই চাওয়া পাওয়াকে পূরণ করেই সংস্থাগুলোকে ব্যবসা চালিয়ে নিতে হয়। এমনি নানা রহস্যে পরিপূর্ণ হয়ে আছে গ্ল্যামার জগতের প্রতিটি স্তর। এখান থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করে কোনো লাভও হবে না। কারণ গণমাধ্যমের প্রতিটি ক্ষেত্রই বিজ্ঞাপননির্ভর। স্পনসর ছাড়া বড় কোনো কাজও করা যায় না। আগে চলচ্চিত্র নির্মাণ ছিল একেবারেই দর্শক নির্ভর। প্রযোজকদের কখনো কোনো বিজ্ঞাপনী সংস্থা বা স্পনসরের কাছে যেতে হয়নি। কিন্তু অন্য মাধ্যমের লোকগুলো এসে এখানেও স্পনসরের প্রচলন করেছে। এখন চলচ্চিত্র এ্যাপস নির্ভর হয়ে স্পনসর বা বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলোর দিকে যাচ্ছে। একটা স্বতন্ত্র ও স্বনির্ভর বিনিয়োগের স্থান স্বাতন্ত্র্য হারিয়ে পরগাছার মতো পরনির্ভর হয়ে যাচ্ছে। অন্য মাধ্যমের লোকেরা দর্শককে পাশ কাটিয়ে অন্যের মুখাপেক্ষী করে তোলার পরই চলচ্চিত্রের মান তলানিতে যেতে শুরু করেছে। কারণ এখানে দর্শক নয়, মুখ্য হয়ে উঠছে স্পনসর।