স্বপন দেব, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: [২] বুধবার বিকেল ৩টা থেকে তিনি প্রেমিকের বাড়িতে টানা ১৯ ঘন্টা অনশন করেন। প্রেমিকের মা ও ভাই-বোনের হামলায় বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ন’টায় অজ্ঞান হয়ে পড়লে গ্রাম পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন। বিয়ের প্রলোভনে শারীরিক সম্পর্ক ও হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে আহত নাজমিন বেগম প্রেমিক কালন মিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ লিখিত দিয়েছেন। এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল নানামূখি তৎপরতা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
[৩] শুক্রবার(৩ জুলাই) খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের মুর্শিবাদকুরা গ্রামের আলা উদ্দিনের ছেলে কালন মিয়া পাশের খুটাউরা গ্রামের তাজ উদ্দিনের অষ্টাদশী মেয়ে নাজমিন বেগমের সঙ্গে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ৩১ মার্চ কালন মিয়া নাজমিনের বাড়িতে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর মেয়েটি বিয়ের জন্য কালনকে চাপ দিলে সে আশ্বাস দেয়। একপর্যায়ে সে বিয়েতে অসম্মতি জানালে নাজমিন বিষয়টি তার বাবা-মাকে জানায়। তারা বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার মুরব্বিদের জানালে তারা নি®পত্তির আশ্বাস দেন।
[৪] সন্ধ্যায় সরেজমিনে গেলে নাজমিন বেগম জানান, ‘কালনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে তার প্রেমের সর্ম্পক। সে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। বিয়ের চাপ দেয়ায় প্রথমে আশ্বাস দিলেও পরে টালবাহানা শুরু করে। গ্রাম পঞ্চায়েতের সিদ্ধান্ত মেনে নিলেও পরে বিয়েতে রাজি হয়নি। শারীরিক সম্পর্কের বিষয়টিও অস্বীকার করছে। তাই বাধ্য হয়ে বিয়ের দাবিতে তার (প্রেমিক) বাড়িতে অবস্থান করেছি। এসময় তার স্বজনরা আমাকে মারধর করেছে। বাড়ি থেকে বের করে দিতে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। কিন্ত আমি বের হইনি। সে (প্রেমিক) যদি আমাকে বিয়ে না করে তবে তার বাড়িতেই আমি আত্মহত্যা করবো।’
[৫] তালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস জানান, উভয় পক্ষের কথা শুনে বিষয়টি মীমাংসার উদ্যোগ নেন। আপোস মীমাংসায় উভয়পক্ষ রাজিও হয়। কালন মিয়া নাজমিনকে স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা দেবে স্বীকার করে তারা ৩ দিন সময় নেয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত না মানায় সমাধান হয়নি। বুধবার বিয়ের দাবীতে প্রেমিকের বাড়িতে নাজমিনের অবস্থানের ও আত্মহত্যার হুমকির খবর পেয়ে রাতে তিনি দুইজন গ্রাম পুলিশ পাঠিয়ে পাহারা দিয়েছেন, যাতে মেয়েটি কোন দুর্ঘটনা না ঘটায়। সকালে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুনেছি আহত নাজমিন বেগম এ ব্যাপারে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
[৬] বড়লেখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াছিনুল হক জানান, এব্যাপারে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। সম্পাদনা: জেরিন আহমেদ