আসিফুজ্জামান পৃথিল : একটা প্রশ্ন বারবার ঘুরেফিরে আসছে, লাদাখ সীমান্তে অস্ত্র ব্যবহার না করে চীন-ভারতের সেনারা হাতাহাতি করে কেনো। ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো প্রচার করে শান্তির জন্যই এমন উদ্যোগ। বিষয়টা আসলে যতটা না রাজনৈতিক, তার চেয়ে অনেক বেশি টেকনিক্যাল। ভারত আর চীন সীমােন্ত পৃথিবীর সবচেয়ে দূর্গম সীমান্ত সম্ভবত। যে সীমান্তে প্রাকৃতিক বাঁধা হেয়ে আছে সুউচ্চ সব পাগাড়, লেক, খরস্রোতা নদী। তবে প্রধান বিশয় হয়ে দাঁড়ায় উচ্চতা। যেই গালওয়ানে লড়াই হয়েছে দুই পক্ষের, তা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৪ হাজার ফিট উঁচুতে। দুই সীমান্তের অধিকাংশ পয়েন্টের উচ্চতা আরও বেশি।
*এই উচ্চতায় কখনই কৌশলগত অস্ত্র ব্যবহার সম্ভব না। অধিক উচ্চতা শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি তৈরি করে। মস্তিস্কে কম অক্সিজেন মানষিক স্থবিরতা তৈরি করে। যা কৌশলগত অস্ত্র ব্যবহারের উপযোগী নয়।
* এয়ার সুপিরিয়টি বজায় রাখতে যেই পরিমান এয়ার অ্যাসেট প্রয়োজন, তা লাদাখে মোতায়েনের সুযোগ নেই। যদি লাদাখে কোনও সমস্যা হয় ব্যবহার করতে হবে মূলত দিল্লি স্টেশন। উত্তরাখণ্ডের জলি গ্রান্ট বা লাদাখের লেহ বিমানবন্দরের সক্ষমতা খুবই কম। একসঙ্গে উড়তে পারবে না খুব বেশি এয়ার সুপিরিওটি জেট। সিকিমে সমস্যা আরও জটিল। সেখানে কোনও ঘাটি বা বিমানবন্দর নেই। ব্যবহার করতে হবে হাসিমারা। যা ছোট্ট একটি ঘাটি। অরুণাচলে ৮ হাজার ৭৮৬ ফিট উচ্চতায় রয়েছে তাওয়াং। এটির ক্যাপাসিটিও খুব কম। ইমফলের ঘাটিও বেশ ছোট। উপায়, সেই গুয়াহাটির ঘাটি ব্যবহার। ব্যাটেল জোনে যেতেই অর্ধেক ফুয়েল শেষ হয়ে যাবে।
* আর্টিলারি পিস ব্যবহার প্রায় অসম্ভব। বিশেষত ভারতের জন্য। ভারতের অংশে হিমালয় বেশ ঢালু। আর্টিলারির আওয়াজ এবং কম্পনে শুরু হবে অ্যাভালাঞ্জ। বারুদের গরমে বরফ গলবে। ফলে, বরফ ধসের সম্ভাবনা আরও বাড়বে।
* এই উচ্চতায় অস্ত্র জ্যাম হয়ে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা। আপনি অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করতে গিয়ে তা যদি বারবার জ্যাম হয়ে যায়, আপনাকে রক্ষার কেউ নেই।
* লাদাখে অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ হলে উত্তর ভারত ও পাকিস্তানে বন্যা হবার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। এই হঠাৎ বন্যা যুদ্ধে ক্ষতিকেও ছাপিয়ে যেতে পারে।
ফেসবুক থেকে