আশরাফ আহমেদ (হোসেনপুর প্রতিনিধি): [২] কুরবানী ঈদের আগে অনেকটা আকস্মিকভাবেই এক বিরল 'লাম্পি স্কিন ডিজিস' ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত হচ্ছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে বহু গবাদি পশু। এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোন ঔষধ না থাকায় হতাশ ও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন এলাকার কৃষকসহ বহু খামারিরা।
[৩] উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, এই ভাইরাসের সংক্রমণে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হচ্ছে তিন শতাধিকের উপর গবাদি পশু এবং কিছু গরু মৃত্যু ঘটেছে। আবার অনেকেই বাধ্য হয়ে কসাইয়ের কাছে এসব রোগাক্রান্ত গরু কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন। উপজেলায় ছোট-বড় ১১৬ টি পশু খামার রয়েছে। এ পর্যন্ত ৪৮০০ টিকা প্রতিষেধক হিসেবে দেওয়া হয়েছে। তবে উপজেলায় সিদলা ইউনিয়নে এ ভাইরাসের প্রকোপ বেশি।
[৪] প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে আরো জানা যায়, এ ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত গবাদি পশুর চামড়া ফুলে দেহে গোটা সৃষ্টি হয়। পরে এসব গোটা ফেটে গিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ঘায়ের মত হয়ে যায় এবং আক্রান্ত পশুর গায়ে প্রচন্ড জ্বর থাকে। এক পর্যায়ে গবাদিপশুটি দুর্বল হয়ে ওজন কমে গিয়ে পশুটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। তবে আক্রান্ত পশুর মধ্যে বাছুরের মৃত্যু ঝুঁকি বেশি। রোগ প্রতিরোধে গবাদিপশুকে মশা-মাছি থেকে দূরে রাখতে মশারির ব্যবস্থা সহ পশুর স্থান পরিষ্কার পরিচ্ছন্নরাখা এবং আক্রান্ত পশুকে অন্য পশুর থেকে আলাদা রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন উপজেলা ভেটেনারি সার্জন।
[৫] সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,উপজেলার বিভিন্ন গ্রামাঞ্চলে বহু গবাদি পশু লাম্বি স্কিন ডিজিজ এ আক্রান্ত হয়েছে। জিনারি ইউনিয়নের চরকাটি হারি গ্রামের সাইফুল ইসলাম, কাওনা গ্রামের আবু হেনা, বরুয়া গ্রামের লতিফসহ অনেকেই জানান, গবাদি পশুর গায়ে প্রথমে ছোট ছোট গোটা হয়ে তারপর ফুসকা ফেটে ঘায়ে পরিণত হয়। গবাদিপশুটির ওজন আস্তে আস্তে কমে দুর্বল হয়ে যায়। কোরবানি ঈদকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণ করতে গিয়ে এই রোগের কারণে লোকসানের সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানান তারা।
[৬] এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: আব্দুল মান্নান জানান, এ বিরল রোগে আক্রান্ত পশুর মৃত্যু কম হলেও এর সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই।তবে আক্রান্ত পশুকে পেনিসিলিন ,এন্টিহিস্টামিন প্রোটিন জাতীয় মেডিসিন প্রয়োগ করে সুফল পাওয়া যায়।তাই পশু রোগাক্রান্ত হলে দ্রুত প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যোগাযোগের পরামর্শ দেন এ কর্মকর্তা।