শাহানুজ্জামান টিটু : [২] বিএনপি মহাসচিব বলেন, আগামী ৬ মাসের জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট করা। কারণ করোনার কারণে পূর্ণাঙ্গ বাজেটের কোনো লক্ষ্যই অর্জিত হবে না। আবার অনেকে মনে করেন, অর্থনীতির অস্বাভাবিক সংকোচনে প্রচলিত বাজেট ব্যবস্থা থেকে সরে এসে ৩ বছরের মধ্য-মেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার আলোকে বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।
[৩] মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শীর্ষ অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনাকালের বাজেট গতানুগতিক বাজেট হবে না। করতে হবে বিশেষ বাজেট। করোনার প্রভাব মোকাবিলার মাধ্যমে জনগণের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করা ও দুর্ভোগ উপশম, ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করে স্বাভাবিক গতি আনতে দরকার হবে সহায়ক নীতি সহায়তা।
[৪] বিএনপি মহাসচিব বলেন, পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে মধ্য মেয়াদি বাজেট কাঠামোয় মুদ্রা ও রাজস্ব নীতির সমন্বয়ে নতুন ব্যবস্থা প্রণয়ন করতে হবে। অর্থনীতির ক্রমহ্রাসমান সংকোচন রোধে কর্মসংস্থান ধরে রাখতে হবে, আয় সংকোচন রোধ করতে হবে, নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
[৫] তিনি বলেন, মানুষের সার্বজনীন মৌলিক প্রয়োজনীয়তা যেমন - খাদ্য, স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, শিক্ষা, বাসস্থান ইত্যাদি প্রদানে সরকারের ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়েছে। পুনরুদ্ধার প্যাকেজ ও মুদ্রানীতি সহজ করাসহ কিছু নীতি পদক্ষেপ নেওয়া হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। সামাজিক নিরাপত্তা জাল নামে কিছু কর্মসূচী থাকলেও তা নিতান্তই অপ্রতুল। উপরন্তু এই কর্মসূচীটি উলঙ্গভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত। জনসেবার খাতগুলোতে বরাদ্দ দিন দিন কমেছে। কৃষি, শিল্প ও সেবা খাতের দুর্বলতাও করোনাকালে উন্মোচিত হয়েছে।
[৬] মির্জা ফখরুল বলেন, করোনার প্রভাবে ভোগ, চাহিদা, সরকারি ব্যয়, আমদানি ও রপ্তানির সূচক দুর্বল থেকে দুর্বলতর হয়েছে। ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি কমে যেতে বাধ্য। কর্মহীন মানুষের আয় কমে যাওয়ায় কেনাকাটা কমে গেছে। সঞ্চয় হ্রাস পাচ্ছে, ফলে বিনিয়োগও কমে যাবে।
[৭] তিনি বলেন, করোনার কারণে মার্চ মাসে প্রবাসী আয় ১২ শতাংশ কমেছে। দেশের ভেতরে ও বাইরে এভাবে আয় কমে যাওয়ায় ভোগ-ব্যয়ও অনেক কমে যাবে। গ্রামীণ অর্থনীতিতে এর প্রভাব প্রকটভাবে দেখা দেবে। আমাদের দেশে ব্যক্তিখাতের ভোগ-ব্যয় জিডিপি’র ৭০ শতাংশ। এদিকে ৬ মাসে রপ্তানি আয় কমেছে প্রায় ৬%। গণপরিবহন সংকটে কৃষকও পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাচ্ছে না। ফলে পরবর্তী মৌসুমে এরা উৎপাদনে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। বিভিন্ন খুদে ব্যবসায়, ক্ষুদ্র, মাঝারি শিল্প, পর্যটন ও সেবা খাতসহ সকল প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের কার্যক্রম অচল হয়ে আছে।
[৮] তিনি প্রস্তাব করেন, সঞ্চয়হীন মানুষ ও মন্দাক্রান্ত সেক্টরকে সরকারকেই অর্থ প্রদান করতে হয়। যেহেতু মন্দাকালীন বিনিয়োগ, ভোগব্যয় ও রফতানি কমে যায়, সরকারকে সামষ্টিক চাহিদা বাড়াতে সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। সরকারি বিনিয়োগ বাড়ালে মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি বেড়ে যাবে।
[৯] মঙ্গলবার উত্তরার নিজ বাসভবন থেকে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে আগামী অর্থ বছরে জন্য বিএনপির বাজেট ভাবনা দেন মির্জা ফখরুল।