শাহ জালাল, সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) : [২] সোনারগাঁয়ে প্রসুতির ইচ্ছার বিরুদ্ধে সিজার, অতিরিক্ত ফি আদায় ও অপারেশনে ত্রুটি থাকায় পরবর্তীতে ইনফেকশন হলেও রোগী ও স্বজনদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগ উঠেছে সেন্ট্রাল সোনারগাঁ সেন্ট্রাল হাসপাতাল নামে এক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে।
[৩] মোগড়াপাড়া চৌড়াস্তার হাবিপুর এলাকায় ওই ক্লিনিকে গত এপ্রিল মাসের ৮ তারিখে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হন সোনারগাঁ সাদিপুর ইউনিয়নের মাদ্রাসা শিক্ষক আব্দুর রহিমের স্ত্রী লাকী আক্তার। লাকী ও তার পরিবার নরমাল ডেলিভারির জন্য আগ্রহী হলেও হাসপাতালের ডিউটিরত নার্স, রিসিপশনিষ্ট ও সংস্লিষ্ট কয়েকজন নানাভাবে তাদের ফুসলিয়ে সিজার করাতে বাধ্য করেন।
[৪] ভুক্তভোগী লাকী আক্তার বলেন, যেদিন ভর্তি হই, আমাদের ইচ্ছা ছিলো নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করবো কিন্তু হাসপাতালের লোকজন আমাদের এই বলে ভয় দেখানো শুরু করে যে, লক ডাউনের সময় যখন তখন ডাক্তার পাবেন না। এই ডাক্তার চলে গেলে বিপদে পড়বেন। রাতে যদি ব্যাথা উঠে তখন বিপদ হবে। তাদের কথায় ভীত হয়ে আমরা সিজারের জন্য রাজি হই। পরে ওই দিন রাতেই ৮টায় সিজার করা হয়। অথচ অন্য যে কোনো হাসপাতালে গেলে ২/১ দিন অবজারবেশনে রাখে কিন্তু তারা তাড়াহুড়া করে আমার সিজার করে।
[৫] লাকী আরো বলেন, আবার ২ দিনের মধ্যে ডিসচার্জও করে দেয়। এসময় হাসপাতাল থেকে সামান্য নাপা প্যারামল ছাড়া অন্য কোনো ঔষদ দেয় নাই। অথব প্রায় ২০ হাজার টাকার মতো বিল করে। বাসায় আসার দু’দিন পর থেকেই সেলাইয়ের জায়গায় আবার ব্যাথা হয় এবং জ্বর আসে। তখন থেকে অনবরত হাসপাতালের নাম্বারে ফোন দিয়ে যাই কেউ ফোন রিসিভ করে না। চার দিন পর ফোন রিসিভ করলে বলে হাসপাতাল বন্ধ ছিলো। তাই ফোন ধরেনি। জ্বর ব্যাথার জন্য নাপা খেতে বলে, এরপরেও না সারায় ১০ দিনের মাথায় ১৮ এপ্রিল হাসপাতালে যাই ড্রেসিং করি কিন্তু তখন দেখা গেলো যে সেলাই ছুটে গেছে এবং ভেতরে ইনফেকশন দেখা দিছে।
[৬] দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কোনো প্রসূতি বোন যেন আমার মতো কষ্ট না পায় ও আমরা গরিব অসহায় মানুষ আমার জীবনের যা ক্ষতি হওয়ার হইছে। আমি তাদের বিচার চাই না। আমার টাকা ফেরত দিলেই হবে। আমার স্বামী ৭ হাজার টাকা বেতনে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে। আমাদের অনেক কষ্টের টাকা।
[৭] লাকী আক্তারে মায়ের বক্তব্য, শুরু থেকেই হাসপাতালে লোকজন আমাদের সঙ্গে অনেক খারাপ ব্যবহার ও তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। এরপর মদনপুরে অন্য একটি হাসপাতালে গিয়ে পুনরায় মেয়ের সেলাই এবং নিয়মিত ড্রেসিং করি।
[৮] তিনি বলেন, দুই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়ে গেছে। পরে সেন্ট্রাল হাসপাতালের লোকদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তখনও তারা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। হাসপাতালের ভুলের কারণে মেয়েকে এতদিন কষ্ট করতে হলো।আমরা গরিব মানুষ আমাদের এতগুলা টাকা নষ্ট হয়ে গেলো, এর ক্ষতিপুরণ চাই।
[৯] এ ব্যাপারে সোনারগাঁ সেন্ট্রাল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক শিউলী আক্তারের সঙ্গে সরাসরি ও টেলিফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
[১০] তবে সোনারগাঁ সেন্ট্রাল হাসপাতালের এডমিন পরিচয় দানকারী ইব্রাহীম ভুক্তভোগী লাকী আক্তারের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, লাকি আক্তার নিয়মিত ঔষধ সেবন না করায় ও নিয়ম মেনে না চলায় তার শেলাইয়ের যায়গায় ইনফেকশন হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :